জলপাইগুড়ি: সরকারি জায়গা দখল করে তৃণমূল দলীয় কার্যালয় তৈরি। পুলিশ সুপারের কাছে সেই অভিযোগ জানাতেই ব্যবসায়ীর দোকান ভস্মীভূত। আক্রোশেই দোকানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জলপাইগুড়ির ধূপগুড়িতে। জানা গিয়েছে, ব্যবসায়ীর নাম তপন দাস। জানা গিয়েছে, সপ্তাহখানেক আগে ধূপগুড়ি বারঘরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বিদ্যাশ্রম দিব্যজ্যোতি বিদ্যানিকেতন হাইস্কুলের পাশে জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সরকারি জায়গায় একটি তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় তৈরি হয়। অভিযোগ, এলাকা দখল করে রাতারাতি তৃণমূল পার্টি কার্যালয় তৈরি করে। যেখানে নাম জড়িয়ে পড়ে ধূপগুড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দীনেশ মজুমদার এবং তৃণমূলের গ্রামীণ ব্লক সভাপতি দীপু রায়ের। যদিও সাংবাদিক সম্মেলন করে দীপু রায় পরিষ্কার জানিয়ে দেয়, এই ঘটনা সম্পর্কে তাঁর কিছু জানা নেই এবং দল এই ধরনের ঘটনাকে প্রশ্রয় দেয় না। যাঁরা করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে দলের জেলা সভাপতিকে তিনি লিখিত আকারে অভিযোগ জানাবেন।
অভিযোগ, শুধু সরকারি জমিই নয়, তপনের একটি জায়গাও দখল করে নেওয়ার চেষ্টা চলেছে। যার বাজারমূল্য আনুমানিক কোটি টাকা। তপন ধূপগুড়ি থানায় অভিযোগ জানাতে যান। কিন্তু সেখানেও পুলিশ তাঁর অভিযোগ নেয়নি। এরপরই জলপাইগুড়ি পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ মাহাতোর কাছে লিখিত আকারে অভিযোগ জানান সেই ব্যবসায়ী।
পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ জানানোর কথা প্রকাশ্যে আসতেই কাকতালীয়ভাবে ব্যবসায়ীর দোকানে মধ্যরাতে আগুন লেগে যায়। ব্যবসায়ীর অভিযোগ, তৃণমূল কর্মীরাই রাগের বশে তাঁর দোকানে আগুন ধরিয়েছেন। এমনকি তাঁর বাড়ির দরজাতেও লাথি মারা হয়। দরজা ভাঙার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। ব্যবসায়ী তপন দাসের বক্তব্য, “পুলিশকে অভিযোগ জানিয়েছিলাম।পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেই নি। তাই পুলিশ সুপারকে জানিয়েছিলাম। সংবাদমাধ্যমে বিষয়টা প্রকাশিত হয়। তারপরই তো দেখি দোকানে আগুন লাগাল।”
রাতেই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় ধূপগুড়ি থানার পুলিশ এবং দমকলের একটি ইঞ্জিন। এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন দমকল কর্মীরা। এই ঘটনার পরে আতঙ্কে রয়েছে গোটা পরিবার। প্রশ্ন উঠছে যেখানে মুখ্যমন্ত্রী বারবার সরকারি জায়গা দখলমুক্ত করার বিষয়ে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন, সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে কীভাবে তৃণমূল নেতারা এই অভিযোগে দুষ্ট হলেন? ধূপগুড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দীনেশচন্দ্র মজুমদার বলেন, “যে জমিটা নিয়ে অভিযোগ করা হয়েছে, ওটা নিয়ে মামলা চলছে। ওখানে কেউ দলীয় কার্যালয় তৈরি করেনি। ওখানে ১৪৪ জারি রয়েছে। আমি দলীয় কার্যালয়ের ব্যাপার জড়িত নই। তপন দাস আমার কাছে এসেছিল, ওকে আমি বলে দিয়েছিলাম, যার জমি সেই পাবে। আদালত বলে দেবে। ওই জমি নিয়ে বিকাশ সরকারের সঙ্গে ওর ঝামেলা। দুই পরিবারের ঝামেলা। এখানে পার্টি অফিস জড়িত নয়।”
বিজেপি নেতা নরেশ রায় বলেন, “এলাকায় অশান্তি তৈরি করছে তৃণমূল। তপন দাস নিজেই বলছে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। পুলিশ একেবারেই নিষ্ক্রিয়।”