বিষের দামই ১৩ কোটি! বাংলা থেকে গন্তব্য চিন… তদন্তে চোখ ছানাবড়া বনকর্মীদের
Cobra Venom: ভারত থেকে নেপাল, বাংলাদেশ ঘুরে এই বিষ চিনে পাচারের পরিকল্পনা ছিল।
জলপাইগুড়ি: জলপাইগুড়ি থেকে সোজা চিনে পাচার করা হচ্ছিল কোবরার বিষ (Cobra Venom)। যার বাজার মূল্য কয়েক কোটি টাকা। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে হাতেনাতে অভিযুক্ত পাচারকারীকে ধরল পুলিশ। পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে বড়সড় সাফল্য পেল গরুমারা বন্যপ্রাণ বিভাগের কর্মীরা। পাচারের আগে উদ্ধার হয় প্রায় ১৩ কোটি টাকার কোবরা ভেনাম। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জলপাইগুড়িতে।
সূত্রের খবর, বনাধিকারিকদের কাছে খবর ছিল জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) শহর সংলগ্ন ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে সাপের বিষ পাচার করার পরিকল্পনা রয়েছে। তাঁরা গোপন সূত্রে জানতে পারেন, হাত বদলের জন্য ‘মহার্ঘ’ এই বিষ উত্তর দিনাজপুর জেলা থেকে জলপাইগুড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। শুক্রবারই তা জাতীয় সড়ক ধরে রওনা দেবে গন্তব্য চিনের পথে। এখানেই হবে হাত বদল। এরপরই একটি বড় টিম তৈরি করে গোপনে অভিযান চালিয়ে কোবরার বিষ বোঝাই জার উদ্ধার করেন বন্যপ্রাণ বিভাগের আধিকারিকরা।
গরুমারা বন্যপ্রাণ শাখার ডিএফও অংশু যাদবের নির্দেশে এডিএফও জন্মেজয় পাল, গরুমারা সাউথ রেঞ্জের রেঞ্জ অফিসার অয়ন চক্রবর্তী, সুদীপ দে, জীবন বিশ্বকর্মা, তন্ময় চক্রবর্তী, অতনু সরকার, গৌতম রায়-সহ একটি বিশাল দল জাতীয় সড়কে রাতভর টহল দেওয়া শুরু করে। শুক্রবার আচমকাই একটি সন্দেহভাজন বিএমডব্লু গাড়ি থেকে কয়েকজনকে নামতে দেখা যায়। উল্টো দিকে এক ব্যক্তিকে দেখা যায় হাতে একটি ব্যাগ নিয়ে এগিয়ে আসতে।
এরপরই ওই গাড়িটির দিকে ধেয়ে যান বনাধিকারিকরা। যদিও আগাম বিপদ বুঝে গাড়িতে চেপে চম্পট দেন বাকিরা। গাড়িটি শিলিগুড়ির দিকে রওনা দেয়। কিন্তু ব্যাগ হাতে এগিয়ে আসা ওই ব্যক্তি ধরা পড়ে যান। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কোবরার বিষ পাচারে অভিযুক্ত ওই ব্যক্তির নাম সেলিম আখতার মণ্ডল। তিনি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বাসিন্দা। এই বিষ চিনে পাচার করার ছক কষেছিলেন পাচারকারীরা। ভারত থেকে নেপাল, বাংলাদেশ ঘুরে এই বিষ চিনে পাচারের পরিকল্পনা ছিল।
ঘটনায় জলপাইগুড়ি জেলা আদালতের সহকারী সরকারি আইনজীবী সিন্ধু কুমার রায় বলেন, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বাসিন্দা সেলিম আখতার মণ্ডল নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় ১৩ কোটি টাকা মূল্যের কোবরা ভেনাম উদ্ধার হয়েছে। তিনটি জারে করে এই বিষ পাচার করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ। ওয়াইল্ড লাইফ প্রোটেকশন আইনে এই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে বন দফতর।
শুক্রবারই ধৃতকে জলপাইগুড়ি মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে তোলা হয়। বন দফতর ১৪ দিনের হেফাজতের আবেদন করলে ম্যাজিস্ট্রেট ৬ দিনের হেফাজত মঞ্জুর করেন। এই পাচারচক্রে এ জেলার আর কোনও মাথা যুক্ত কি না তা তদন্ত করে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: গোপনাঙ্গে রড রড ঢুকিয়ে ধর্ষণ, পুলিশ গিয়ে দেখে টেম্পো ভেসে যাচ্ছে রক্তে