Katwa News: কান পরিষ্কার করতে গিয়ে রক্তক্ষরণ, M-Seal গুঁজে দিয়ে পগারপার সুরমাওয়ালা
কানে M-Seal ঢুকিয়ে দেওয়ার ফলে যুবকের কানের পর্দা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিন মাস পর আবার তাঁর কানের পর্দার অস্ত্রোপচার করা হবে।
কাটোয়া: কানে রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে M-Seal। শুনতে অবিশ্বাস্য লাগলেও এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের (East Brdwan) কাটোয়ার যুবকের সঙ্গে। তবে কোনও চিকিৎসক নন, কান পরিষ্কার করতে গিয়ে সুরমাওয়ালা ওই যুবকের কানে কলে লাগানোর আঠা, M-Seal ঢুকিয়ে দেন বলে অভিযোগ। M-Seal দিয়ে কানের ভিতরে রক্তক্ষরণ বন্ধ হলেও শুরু হয় প্রচণ্ড যন্ত্রণা। অবশেষে যন্ত্রণা থেকে রেহাই পেতে এবং M-Seal বের করতে কানে বৃহস্পতিবার অস্ত্রোপচার করতে হল যুবককে। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে কাটোয়ায়।
জানা গিয়েছে, কাটোয়ার ওই যুবকের নাম তমাল প্রামাণিক(৩০)। কাটোয়ার কুয়ারা গ্রামের বাসিন্দা তমাল পেশায় গাড়িচালক। ২০ টাকার বিনিময়ে কান পরিষ্কার করতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হল কানের পর্দা। অবশেষে কাটোয়া হাসপাতালের ইএনটি বিভাগের চিকিৎসক ভাস্করজ্যোতি বর্মন অস্ত্রোপচার করে তমালের কানের ভিতর থেকে M-Seal বের করেন। এই ঘটনায় হতবাক চিকিৎসকও। এরকম ঘটনা আগে কখনও দেখেননি বা শোনেননি বলে জানিয়েছেন। M-Seal কানে ঢুকিয়ে দেওয়ার ফলে তমাল পরামাণিকের কানের পর্দা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানান তিনি।
কানে অস্ত্রোপচারের পর হাসপাতালের বেডে বসে তমাল প্রামাণিক জানান, বুধবার তিনি কাটোয়ার সিঙ্গির মোড় এলাকায় যাত্রীর জন্য গাড়ি নিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন। সেখানে এক সুরমাওয়ালা সুরমা পরা ও কান পরিষ্কার করার জন্য হাঁকছিলেন। তমাল পরামাণিক তাঁকে ডেকে ২০ টাকার বিনিময়ে কান পরিষ্কার করাতে যান। সুরমাওয়ালা একটি পিতলের তার দিয়ে তমালের কানের ভিতরে বেশ কিছুক্ষণ খোঁচাখুঁচি করেন। তারপরই তাঁর কান দিয়ে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। বেগতিক বুঝে ওই সুরমাওয়ালা নিজের কাছে থাকা এমসিল আঠা তমালের কানে গুঁজে দেন বলে অভিযোগ। ১৫ মিনিট পরে রক্তপাত বন্ধ হয়ে যাবে এবং তখন আঠা খুলে দেওয়ার পরামর্শ দেন সুরমাওয়ালা। এরপর তিনি তমালের থেকে ২০ টাকা নিয়ে বাস ধরে চম্পট দেন।
এদিকে, ১৫ মিনিট পরেও তমাল কানে লাগানো এমসিল আঠা খুলতে পারেননি। উল্টে তাঁর কানের যন্ত্রণা ক্রমাগত বাড়তে থাকে। অবশেষে এদিন কাটোয় হাসপাতালে কানের চিকিৎসকের কাছে ছুটে আসে। ইএনটি বিভাগের চিকিৎসক ভাস্করজ্যোতি বর্মন চেষ্টা করেও তমালের কানের ভিতর থেকে M-Seal বের করতে পারেননি। তখন তিনি দ্রুত তমালকে কানে অস্ত্রোপচার করার পরামর্শ দেন। তারপর তাঁর তত্ত্বাবধানেই অস্ত্রোপচার করে তমালের কানের ভিতর থেকে M-Seal বের করা হয়। গোটা ঘটনায় হতবাক চিকিৎসক ভাস্করজ্যোতি বর্মন বলেন, “কানে M-Seal ঢুকিয়ে দেওয়ার ফলে যুবকের কানের পর্দা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিন মাস পর আবার তাঁর কানের পর্দার অস্ত্রোপচার করা হবে।”
গোটা ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তমাল প্রামাণিকের স্ত্রী সঞ্চিতা প্রামাণিক বলেন, “আমরা গরীব মানুষ। আমার স্বামী সামান্য গাড়ি চালিয়ে দু’পয়সা আয় করেন। আমার স্বামীর এত বড় ক্ষতি করে দেবে ভাবতে পারিনি।” সুরমাওয়ালার কাছে কান পরিষ্কার করতে যাওয়ার আগে সকলের সতর্ক হওয়া উচিত বলেও জানান তিনি।