Migrant Labours: মঙ্গলে বাড়ি ফেরার কথা ছিল, রবিতেই ৩ পরিযায়ী শ্রমিকের কফিনবন্দি দেহ ঢুকল গ্রামে

নির্ধারিত সময়ের দু-দিন আগেই বাড়ি ফিরেছেন। কিন্তু, হেঁটে ফেরা হল না, মালদহের তিন পরিযায়ী শ্রমিকের কফিনবন্দি দেহ ঢুকল গ্রামে।

Migrant Labours: মঙ্গলে বাড়ি ফেরার কথা ছিল, রবিতেই ৩ পরিযায়ী শ্রমিকের কফিনবন্দি দেহ ঢুকল গ্রামে
নিহত পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়িতে রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 29, 2023 | 11:32 PM

মালদা: বাড়ি ফেরার কথা ছিল আগামী মঙ্গলবার। পরিবারের লোকেদের সঙ্গে শেষবার যখন ফোনে কথা হয় তখনও জানিয়েছিলেন, শীঘ্রই তাঁরা বাড়িতে ফিরছেন। সেই কথা রেখেছেন। নির্ধারিত সময়ের দু-দিন আগেই বাড়ি ফিরেছেন। কিন্তু, হেঁটে ফেরা হল না, মালদহের তিন পরিযায়ী শ্রমিকের কফিনবন্দি দেহ ঢুকল গ্রামে। উত্তর-পূর্বের রাজ্য মিজোরামে কাজ করতে গিয়েই এই মর্মান্তিক পরিণতি হয়েছে তাঁদের। রবিবার হবিবপুর থানার শ্রীরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তালুকদার পাড়ায় তিন পরিযায়ী শ্রমিকের কফিনবন্দি দেহ গ্রামে ঢুকতেই কান্নায় ভেঙে পড়ে তাঁদের পরিবার। শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা গ্রামে।

পুলিশ জানায়, মৃতদের মধ্যে রয়েছেন প্রেম কুমার মণ্ডল (২৮), রতন মণ্ডল (২৬) এবং অলক মণ্ডল (৩১) তিনজনেরই বাড়ি মালদহের হবিবপুর থানার শ্রীরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তালুকদার পাড়া এলাকায়। মিজোরামের আইজোলে গার্ডওয়েলের কাজ করতেন তাঁরা। আগামী ৩১ তারিখ বাড়ি ফেরার কথা ছিল। তার আগেই এদিন তাঁদের কফিনবন্দি দেহ ঢুকল গ্রামে।

তিন পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যুর খবর পেয়েই এদিন শ্রীরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তালুকদার পাড়ায় তাঁদের বাড়িতে যান রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং স্থানীয় বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু। তাঁরা মৃত তিন শ্রমিকের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। পাশাপাশি যুবদের এই পরিণতির জন্য রাজ্য সরকারের দিকেই অভিযোগের আঙুল তোলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি।

যদিও বিজেপি নেতৃত্বের আশ্বাস, সমালোচনার ঊর্ধ্বে উঠে তরতাজা ছেলেদের হারিয়ে তাঁরা একেবারে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন প্রেমকুমার, রতন এবং অলকের পরিবারের সদস্যরা। কেউ-কেউ আবার শোকে কার্যত পাথর হয়ে গিয়েছেন। শোকাহত হয়ে পড়েছেন গ্রামবাসীও। সকলের মুখে একটাই কথা, “সংসারের হাল ধরতে ভিন রাজ্যে কাজে গিয়েছিল ওরা। কী পরিণতি হল!” প্রেমকুমার, রতন, অলকদের পরিবার তো ভুলতে পারছে না দিন তিনেক আগে ছেলেদের সঙ্গে শেষবার কথা বলার মুহূর্ত। তাঁরা কেবলই বলে চলেছেন, “ওরা ৩১ তারিখ বাড়ি ফিরবে বলেছিল। আমাদের আর কয়েকটা অপেক্ষা করতে বলেছিল। কিন্তু, এভাবে ফিরে এল কেন?”

ঠিক কী ঘটেছিল মিজোরামে? জানা গিয়েছে, মিজোরামের আইজোল জেলায় গার্ডওয়েলের কাজ করতেন প্রেম কুমার মণ্ডল, রতন মণ্ডল এবং অলক মণ্ডল। গত ২৬ জানুয়ারি গার্ডওয়েলে কাজ করার সময় হঠাৎ করেই ধস নামে। সেই ধসে চাপা পড়েই মৃত্যু হয়েছে তাঁদের।

গত নভেম্বরেই মিজোরামে কাজ করতে গিয়েছিলেন প্রেমকুমার, রতন, অলক। দু-মাসের মাথায় এদিন তাঁদের কফিনবন্দি দেহ ঢুকল গ্রামে। এই ঘটনারল জন্য রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেই তোপ দেগেছেন বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, “উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিকে আমরা সাধারণত পিছিয়ে পড়া রাজ্য হিসাবে দেখি। সেই পিছিয়ে পড়া মিজোরামে এখান থেকে ছেলেরা কাজ করতে যাচ্ছেন। এটা অত্যন্ত লজ্জার। এখানকার লোকেদের চাকরি দিতে পারছে না সরকার। ফলে এখানকার ছেলে-যুবরা ভিন রাজ্যে কাজ করতে যাচ্ছে আর এই পরিণতি ঘটছে। শিক্ষিত ছেলেরাও অন্যত্র কাজ করতে যাচ্ছেন।” আর এখানে চাকরিতে দুর্নীতি হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন সুকান্ত মজুমদার। এপ্রসঙ্গে গুজরাটের উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, “গুজরাটে শ্রমিকদের দিনে ১০০০ টাকা মজুরি দেওয়া হয়। অথচ এখানে চাকরি নেই।” নিহত শ্রমিকদের পরিবারের পাশে থাকারও আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব।