মালদা: কখনও সাপ, কখনও পোকা, আর এবার টিকটিকি। শিশুদের মিড-ডে মিলের চালের ড্রাম থেকে উদ্ধার মরা টিকটিকি, ইঁদুর। চালের ড্রামে বন্দি রয়েছে মরা ইঁদুর ও টিকটিকি। ড্রাম খুলতেই চক্ষুচড়ক গাছ শিক্ষক -শিক্ষিকা ও অভিভাবকদের। ঘটনা সামনে আসতেই তীব্র উত্তেজনা ছড়ায় স্কুলে। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের চাঁচল থানার সাহুর গাছি-বিদ্যানন্দপুর প্রাইমারf স্কুলে। এ দিন বাসিন্দা ও পড়ুয়াদের অভিভাবকেরা মিড-ডে মিলে নিম্নমানের খাবার দেওয়ার প্রতিবাদ জানাতে যায় স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে। তারপরেই রান্নাঘর খতিয়ে দেখতে যাওয়া হয়। তখনই চালের ড্রাম থেকে মরা টিকিটিকি ও ইঁদুর দেখেন। এই দৃশ্য দেখে থেমে থাকেননি বাসিন্দারা। তাঁরা স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায়।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, রুটিন অনুযায়ী পড়ুয়াদের খাবার দেওয়া হয় না। ডিম, মাছ ও মাংস দীর্ঘদিন ধরে দেওয়া হয় না। তাছাড়া ভাতও সঠিক পরিমাণে পান না। পাশাপাশি সবজিরও একই দশা। স্কুলের খাবার নিম্নমান থাকায় অনেকদিন ধরেই ক্ষোভে ফুঁসছিলেন বাসিন্দারা। ভারপ্রাপ্ত প্রধাপশিক্ষককে একাধিকবার জানিয়ে কোনও সুরাহা হয়নি বলে দাবি বাসিন্দাদের। এ দিন স্কুলে চালের ড্রামে মরা টিকটিকি ও ইদুর দেখে রীতিমত তেঁতে ওঠেন অভিভাবকেরা। পরে চাঁচল থানার পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
স্থানীয় বাসিন্দা রাজিকুল ইসলামের অভিযোগ, “ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককের জন্য স্কুলে পরিকাঠামো ভেঙে পড়েছে। মিড-ডে মিলে অনেকদিন ধরেই গরমিল চলছে। আজ তা হাতেনাতে স্পষ্ট হল।”
তবে এখানেই শেষ নয়, পাশাপাশি স্কুলে পানীয় জলের কোনও ব্যবস্থা নেই বলেও অভিযোগ করেন তাঁরা। এমনকী পড়ুয়াদের আনা জল শিক্ষক শিক্ষিকারাও ব্যবহার করে বলে জানা গিয়েছে। একটি চাপাকল থাকলেও এক বছর ধরে বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। মেরামতে উদ্যোগী হয়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ বলে অভিযোগ। এ দিকে, জলের অভাবে স্কুলের শৌচালয়টিও পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে রয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুলের পেছনে খোলা জায়গাতেই শৌচকর্ম সারে।
প্রাইমারী স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক উজ্জল সাহা সমস্ত ঘটনা অস্বীকার করেছেন। তবে মিড-ডে মিলে নিম্নমানের খাবার দেওয়া হয় বলে তিনি দাবি করেন। চাঁচলের মহকুমা শাসক কল্লোল রায় বলেন, “বিডিওকে তদন্ত করতে বলা হচ্ছে। এমন কোনও ঘটনা ঘটসে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।” অপরদিকে, চাঁচল-২ ব্লকের বিডিও দিব্যজ্যোতি দাস জানিয়েছেন, জলের জন্য শীঘ্রই ব্যবস্থা করা হবে।