মালদা: সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের অভিযোগ সামনে আসছে। এবার নিজের দলের অফিসেই ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল। দলবল নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালান বলে অভিযোগ। ভাঙচুর করা হয় দলীয় কার্যালয়ের চেয়ার টেবিল। ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে মালদার ইংরেজবাজারের লক্ষ্মীপুরে। এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। আটক করা হয়েছে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা মইনুল শেখকে। আটক হয়েছেন আরও ছয় তৃণমূল কর্মী। সকলকেই জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে পুলিশ। এই ঘটনায় তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে। ঘটনায় গুলি চালানোরও অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে।
জেলা জুড়ে এই ঘটনায় শোরগোল। এখনও উত্তেজনা রয়েছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
ইংরেজবাজার পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য হলেন মইনুল শেখ। স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে ২ বছর আগেও এলাকায় ভ্যানে করে সবজি বিলি করতেন তিনি। কিন্তু গত ২ বছরে তাঁর জীবনযাপনে এসেছে বিশাল পরিবর্তন। তাঁর এখনও প্রাসাদপম বাড়ি। তাঁর জীবনযাপনেও এসেছে পরিবর্তন। এলাকার অত্য়ন্ত বিত্তশালী বলে তিনি এখন পরিচিত। কিন্তু সবজি বিক্রি করে কীভাবে গত ২ বছরে তিনি এতটা বিত্তশালী হলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দাদেরই একাংশ।
মইনুল শেখের বাড়ি যেখানে, ঠিক তার পাশেই গত কয়েকমাসে নতুন একটি দলীয় কার্যালয় হয়েছে। সেই কার্যালয়েই মঙ্গলবার রাতে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে মইনুলের বিরুদ্ধে। মইনুল তাঁর দলবল নিয়ে এসে কার্যালয়ের জানালা দরজার কাচ, চেয়ার টেবিল থেকে শুরু করে মোটরবাইকেও ব্যাপক ভাঙচুর চালান বলে অভিযোগ।
দলের কর্মীদের ওপরে হামলার পর শূন্যে তিন রাউন্ড গুলি চালানোরও অভিযোগ ওঠে।
ওই দলীয় কার্যালয়ে এলাকার কয়েকজন তৃণমূল নেতা কর্মী এসে বসছেন। সেখানে তৃণমূলেরই একাংশের বক্তব্য, মইনুল শেখ পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে টিকিট পাওয়া নিয়ে দোলাচলে আছেন। সেই অস্থিরতা থেকেই এলাকায় আতঙ্ক তৈরি করতে এই হামলা। ঘটনায় ঘিরে উত্তেজনা রয়েছে এলাকায়। ইংরেজবাজার থানার বিশাল বাহিনী রয়েছে।
তৃণমূলের এক কর্মী বলেন, “দলীয় কার্যালয়ে আমরা ক্যারাম খেলছিলাম। দুদিক থেকে ১০০-১৫০ লোক বাইক নিয়ে পার্টি অফিস ঘিরে ফেলে। প্রথমে আমাদের গালি দেয়। তারপর মারধর করতে থাকে। দলীয় কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে। আমি নিজের চোখে দেখেছি গুলি চালিয়েছে।”
তৃণমূল নেতা কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী বলেন, “দুপক্ষের ঝামেলা হয়েছে। এক পক্ষ হাসপাতালে ভর্তি, যাঁরা ভর্তি তাঁরা তৃণমূল কর্মী। যাঁরা দলকে নষ্ট করবে, তাঁদের বিরুদ্ধে দল কড়া ব্যবস্থা নেবে।” যদিও ঘটনার পর থেকে মইনুল শেখের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ঘটনাকে স্বাভাবিকভাবেই ইস্যু করেছে বিজেপি। বিজেপি নেতা বলেন, “পঞ্চায়েত সদস্যরা এখন নিজেদের মধ্যে ঝামেলা করছে। পার্টি অফিসে বোমা-গুলি মারছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে টিকিট নিয়ে ঝামেলা করছে।”