নদিয়া: সমবায় সমিতির নির্বাচন। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সেখানে সবক’টি আসনে জয়ী হলেন সিপিএম সমর্থিত প্রার্থীরা। তেহট্টের (Tehatta) চাঁদেরঘাট সমবায় সমিতির ৪৯টি আসনের সবক’টিতে জয়ী হয়েছে সিপিআইএম। তেহট্ট-১ ব্লকের চাঁদেরঘাট সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি লিমিটেড। ১৯৭৭ সালের পর থেকে এই সমবায় সমিতির নির্বাচনে জয়লাভ করছে সিপিএম। লাল আবির মেখে এদিন জয় উদযাপন করেন দলের কর্মী সমর্থকরা। এই জয়ের পর দলীয় ঝান্ডা হাতে নিয়ে মিছিল করেন প্রার্থীরা। সিপিএমের বক্তব্য, বিভিন্ন ক্ষেত্রে শাসকদল দুর্নীতিতে ডুবে গিয়েছে। এই অবস্থায় কোনও ভোটেই আর মানুষ ওদের উপর ভরসা রাখবে না। ওরা প্রার্থীই খুঁজে পাচ্ছে না। গত ১০ই ডিসেম্বর এই সমবায় সমিতির নির্বাচন ঘোষণা করা হয়। মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ২৫ ডিসেম্বর।
রবিবার ভোটের দিন নির্ধারিত হলেও তৃণমূল বা বিজেপি কেউই কোনও প্রার্থী না দেওয়ায় ৪৯টি আসনেই জিতেছে সিপিএম সমর্থিত প্রার্থীরা। এদিন সমস্ত প্রার্থীদের জয়ী ঘোষণা করে শংসাপত্র প্রদান করা হয়। পাশাপাশি বিজয় উৎসব পালন করেন বিজয়ীরা। সমবায়ের ৪৯টা আসনের একটাতেও কেন তৃণমূল প্রার্থী দিল না বা দিতে পারল না, তা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তৃণমূলের তেহট্ট- ১ ব্লক সভাপতি বিশ্বরূপ রায় বলেন, “এ নিয়ে আমার কোনও বক্তব্য নেই। তৃণমূল যেমন প্রার্থী দেয়নি, আরেকটা পক্ষও তো প্রার্থী দেয়নি। তাহলে কি রাম-বাম এক হয়ে গেল? অথচ এখানে তো গ্রামপঞ্চায়েতে তাদের আসন আছে। তাও প্রার্থী দিল না ব্যাপারটা কী?” তবে বিজেপির প্রার্থী না দেওয়া নিয়ে তৃণমূল নেতা প্রশ্ন তুললেও, তাঁর দল কেন প্রার্থী দিতে পারল না, তার জবাব দিতে পারেননি।
সমবায় সমিতির সদস্য শান্তনু মণ্ডল “তৃণমূল অনেক রকমভাবেই এই ভোটটা না করতে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। ভোটের জায়গা যখন ঘোষণা হয়, তারপরও তারা কিছু লোককে টাকা পয়সা, ভয় দেখিয়ে প্রার্থী করার চেষ্টা করেছিল। কেউ রাজি হয়নি। তাই প্রার্থী দিতে পারেনি। আর এখানে তৃণমূলের অত্যাচার, পঞ্চায়েতে অনুন্নয়ন, মানুষ দেখছে।”
অন্যদিকে তৃণমূলের মুখপাত্র দেবাশিস রায় বলেন, “পঞ্চায়েত ভোট শিয়রে। তার প্রস্তুতি চলছে। সামান্য সমবায় নির্বাচনে কে প্রার্থী হলেন, কারা দিলেন না বিবেচ্য নয়। আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে ঠিক হয়ে যাবে মানুষ কোন দিকে আছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের ভিত্তিতে মানুষ ভোট দেবেন, আমরা মনে করি। সারা বাংলায় সিপিএমের একটা আসনও বিধানসভায় নেই। ওরা যদি মনে করে এটাতেই আনন্দ, সেভাবেই থাকুক। পঞ্চায়েত ভোটে দেখা যাবে ওদের অস্তিত্ব।”