AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Kaliganj: লোকে বলছে, ‘এটা তো বোমার গ্রাম’, তাহলে কি বারুদের স্তুপে দাঁড়িয়েছিল বালিকা?

Kaliganj: ঘটনায় ইতিমধ্যেই ২৪ জনের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ৪ জনকে। যদিও নিহত নাবালিকার মা সাবিনা বিবি বলছেন, যাঁরা আক্রমণ করেছিল তিনি তাঁদের সকলকেই চেনেন। কিন্তু, পুলিশ কেন ধরছে না তা তিনি জানেন না!

Kaliganj: লোকে বলছে, 'এটা তো বোমার গ্রাম', তাহলে কি বারুদের স্তুপে দাঁড়িয়েছিল বালিকা?
এখনও আতঙ্কের ছাপ গোটা এলাকায় Image Credit: TV 9 Bangla
| Edited By: | Updated on: Jun 24, 2025 | 8:52 PM
Share

মহাদেব কুন্ডু, সুপ্রিয় গুহ ও প্রদীপ্তকান্তি ঘোষের রিপোর্ট 

চাঁদঘর: শেষ পঞ্চায়েত ভোট হোক বা সাম্প্রতিক সময়— অশান্তি এখানে নতুন নয়। কিছু বছর আগেই এখানেই রাজনৈতিক হিংসায় মাথা ফেটেছিল ওসির। গোটা গ্রাম অন্ধকার করে বোমা ছুড়েছিল দুস্কৃতীরা। আহত হয়েছিলেন কালীগঞ্জ থানার ওসি সৌরভকুমার চট্টোপাধ্যায় ও মহম্মদ আলি মোল্লা নামে এক সিভিক ভলান্টিয়র। ওই ঘটনায় সিপিএমের পলাশি এরিয়া কমিটির সম্পাদক হকসাদ মণ্ডল-সহ ২০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরও করে পুলিশ। প্রায় শতাধিক লোকের জড়িত থাকার কথাও উঠে আসে।  সময়টা ছিল তেইশ সালের শুরুর দিক। সেই সময়েই রাজনৈতিক সংঘর্ষে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল চাঁদঘর পঞ্চায়েতের মোলন্দা গ্রাম। শাসক তৃণমূলের অভিযোগ ছিল সাগরদিঘি বাম-কংগ্রেস জোটের জয়ের পর থেকে সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা প্রায়শই বোমা ছুড়তে থাকে। যদিও পাল্টা তৃণমূলের বিরুদ্ধেও সুর চড়ায় বাম সমর্থকেরা। তারপর থেকে অনেকেই এই গ্রামকে ‘বোমার গ্রাম’ বলে ডাকতে থাকেন। স্থানীয় স্তরে অভিযোগ, এলাকাতেই তৈরি হয় বোমা। তা ছড়িয়ে যায় আশপাশে। এবার উপনির্বাচনের ফল সামনে আসতেই ফের উত্তপ্ত সেই মোলান্দা। তৃণমূলের বিজয় মিছিল থেকে ছোড়া বোমায় মৃত্যু ১০ বছরের কিশোরীর। তৃণমূলের মিছিল থেকে ৫০ থেকে ৬০টি বোমা ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। 

সিবিআই তদন্তের কথা বলছে পরিবার 

এ ঘটনায় ইতিমধ্যেই ২৪ জনের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ৪ জনকে। যদিও নিহত নাবালিকার মা সাবিনা বিবি বলছেন, যাঁরা আক্রমণ করেছিল তিনি তাঁদের সকলকেই চেনেন। কিন্তু, পুলিশ কেন ধরছে না তা তিনি জানেন না! প্রয়োজনে সিবিআই তদন্তের কথাও বলছেন তিনি। এলাকার এক সিপিএম কর্মী বলছেন, “আমরা সিপিএম পার্টি করি বলেই আমাদের বেছে বেছে মেরেছে। যাঁরা যাঁরা সিপিএম করে তাঁদের টার্গেট করে মারা হয়েছে। কাল যখন বোমা মার হয় তখন সবে ১১ রাউন্ড গণনা হয়েছিল। ৫০ থেকে ৬০টা বোমা পড়েছে। আমার তো মাথাতেও আঘাত লেগেছে। ঘরে, চিলেকোঠায় সর্বত্র বোমা পড়েছে।” 

‘নৃশংসতার নমুনা’ 

ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তৃণমূলের বিরুদ্ধে ধারাল কটাক্ষবাণ শানিয়ে তিনি বলছেন, ‘নৃশংসতার নমুনা’। এলাকার আর এক বাসিন্দা বলছেন, আর একজন বলছেন, “রাস্তায় ১০ থেকে ১৫ জন ছিল, আমার বাড়ির ছাদে ১০ থেকে ১৫ জন এসেছিল। পুরো ঘেরাও করে পাড়াটাকে শেষ করে দিতে চেয়েছিল। ভোটের আগেও আমরা আতঙ্কে ছিলাম। এখন ভোটের পরেও আতঙ্কে আছি। ভোটের আগেই বলেছিল ভোটের রেজাল্ট বের হলেই আমাদের দেখে নেবে। কাল যখন আলিফা আহমেদ ৩২ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিল তখনই ওরা সিপিএম কর্মীদের বাড়ি লক্ষ্য করে সকেট বোমা চার্জ করে।”  

শুরুটা অনেক আগেই? 

এদিকে যাঁদের বিরুদ্ধে বোমা মারার অভিযোগ রয়েছে তাঁরা প্রত্যেকেই তৃণমূল কর্মী বলে জানা যায়। এর মধ্যে মনোয়ার শেখ দাপুটে তৃণমূল নেতা বলে খবর। মনোয়ার শেখের ৬ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এর আগেও অশান্তিতে জড়িয়েছে এই মনোয়ার। সূত্রের খবর, তেইশের আগে রাজনৈতিক হিংসায় তাঁরও বোমার আঘাত লেগেছিল। হাসপাতালেও ভর্তি হতে হয়েছিল। মূলত এলাকা দখল নিয়েই বিরোধী শিবিরের সঙ্গে সেই ঝামেলা হয়েছিল বলে খবর। তারপর থেকে বেশ কিছু সিপিএম কর্মী বাড়ি ছাড়াও ছিল।  

কী বলছে তৃণমূল? 

সোমবার, ১০ থেকে ১৫টি বাম কর্মী সমর্থকদের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা মারা হয় বলে অভিযোগ। ছোড়া হয় পঞ্চাশের বেশি বোমা। সিপিআইএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘ জয় পেয়েও বীভৎস আচরণ করল তৃণমূল কংগ্রেস। সংগঠিতভাবে বোমা মারা হয়েছে। বামপন্থী বলে বোমা মারা হয়েছে।” তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলছেন, “যে নির্বাচনী হিংসার বলি হয়েছে এই ছোট্ট শিশুটি, যেভাবে তার উপর অবিচার হয়েছে তাতে আমরা চাই দোষীরা উপযুক্ত শাস্তি পাক।” যদিও কুণাল ঘোষ বলছেন, “যদি মিছিল থেকে কেউ অসভ্যতা করে থাকে, শাস্তি হোক.. আবার যদি কেউ জয়কে বদনাম করার জন্য কেউ যদি অন্তর্ঘাতমূলক কাজ করে, বিরোধীদের সুবিধা করে দিয়ে থাকে, সেটারও তদন্ত হোক।” যদিও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গ্রামীণ উত্তম ঘোষ বলছেন, পুলিশ এই ঘটনাকে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গেই দেখছে। এদিন বিকালে স্পেশাল পিপিকে সঙ্গে নিয়ে গ্রামের সার্বিক পরিস্থিতিও ঘুরে দেখেন।