North 24 Parganas: একমাত্র শিক্ষিকা অবসর নিলে স্কুলের কী হবে? জবাব খুঁজছে হিঙ্গলগঞ্জ
North 24 Parganas: জগদীশ মাইতি নামে এক অভিভাবক বলেন, "আগে ৮০-৮৫ জন ছাত্রছাত্রী ছিল। এখন একজন শিক্ষক রয়েছেন। তাঁর অফিসিয়াল কোনও কাজ থাকলে স্কুল বন্ধ থাকে। আমাদের সন্তানদের পড়াশোনায় ক্ষতি হয়। অন্য স্কুল অনেক দূরে। বাচ্চাদের পক্ষে হেঁটে যাওয়া সম্ভব নয়। আমরা চাই, স্কুলটা চালু থাকুক।"

হিঙ্গলগঞ্জ: স্থানীয় ছেলেমেয়েদের সুবিধার কথা ভেবে বছর বাইশ আগে চালু হয়েছিল প্রাথমিক স্কুল। সেই স্কুলে আজ একজন মাত্র শিক্ষক। তাই, ছাত্রসংখ্যা কমতে কমতে ৩০-৩৫ জনে এসে ঠেকেছে। একমাত্র শিক্ষকও অবসর নেবেন মাস পাঁচেক পর। তখন কী হবে স্কুলের? চিরতরে কি তালা পড়বে? এই প্রশ্নই এখন উঠছে উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জের ২০ নম্বর নিত্যানন্দ এসএসকে স্কুলকে ঘিরে।
হিঙ্গলগঞ্জের ২০ নম্বর মামুদপুর এলাকায় একসময় কোনও প্রাথমিক স্কুল ছিল না। ৩ মাইল দূরের স্কুলে যেতে হত ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের। সেজন্য ২০০৩ সালে এখানে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপিত হয়। স্কুলের পুরো নাম ২০ নম্বর নিত্যানন্দ শিশু শিক্ষা কেন্দ্র। একসময় এই স্কুলে তিনজন শিক্ষিকা ছিলেন। ছাত্রছাত্রীও অনেক ছিল। এরপর একজন শিক্ষিকার বদলি হয়ে যায়। গত কয়েক বছর ধরে ২ জন শিক্ষিকাই পড়াচ্ছিলেন। চলতি বছরে এপ্রিলে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় এক শিক্ষিকারা। এই মুহূর্তে ঝর্ণা চক্রবর্তী নামে একজন শিক্ষিকাই রয়েছেন। তবে কয়েকমাস পর তিনিও অবসর নেবেন। তখন কী হবে স্কুলের?
ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে চিন্তায় স্কুলের একমাত্র শিক্ষিকা ঝর্ণা চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “এই স্কুলে শিশু শ্রেণি থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। কিন্তু, আমাকে কখনও ব্যাঙ্কে যেতে হয়। কখনও বিডিও অফিসে কিংবা এসআই অফিসে যেতে হয়। পড়াশোনা ব্যাহত হয়। অভিভাবকরা বাচ্চাদের পাঠাতে পারেন না।”
এরপরই তিনি বলেন, “আমি ২০২৬ সালের ৩১ জানুয়ারি অবসর নেব। তখন আমার বাচ্চারা কষ্টে থাকবে। অন্য স্কুল ৩ মাইল দূরে। এখন একজন শিক্ষক দরকার। না হলে স্কুল বন্ধ হয়ে যাবে।”

একমাত্র শিক্ষিকা অবসর নিলে কি বন্ধ হয়ে যাবে স্কুল?
চিন্তায় অভিভাবক-অভিভাবিকারাও। শিবানী দাস নামে এক অভিভাবিকা বলেন, “২ জন শিক্ষিকা ছিলেন। এখন একজন রয়েছেন। তিনি অবসর নিলে আমাদের বাচ্চাদের কোথায় নিয়ে যাব? অন্য স্কুল অনেক দূরে।” জগদীশ মাইতি নামে অন্য এক অভিভাবক বলেন, “আগে ৮০-৮৫ জন ছাত্রছাত্রী ছিল। এখন একজন শিক্ষক রয়েছেন। তাঁর অফিসিয়াল কোনও কাজ থাকলে স্কুল বন্ধ থাকে। আমাদের সন্তানদের পড়াশোনায় ক্ষতি হয়। অন্য স্কুল অনেক দূরে। বাচ্চাদের পক্ষে হেঁটে যাওয়া সম্ভব নয়। আমরা চাই, স্কুলটা চালু থাকুক।”
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ বুরহানুল মুকাদ্দিম অবশ্য বলছেন, “বেশ কয়েকটি জায়গায় এরকম পরিসংখ্যান রয়েছে। যেটা আমাদের কাছে এসেছে। আগামিদিনে শিক্ষার্থীদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তার জন্য রাজ্য সরকার ও শিক্ষা দফতর তৎপর রয়েছে। সদর্থক ভূমিকা পালন করছে। আশা করছি খুব শীঘ্র সমস্যার সমাধান।”
এই আশাতেই রয়েছেন মামুদপুর এলাকার বাসিন্দারা। তাঁরা চাইছেন, স্কুল যাতে বন্ধ না হয়। ওই স্কুলে কবে নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ হয়, সেটাই এখন দেখার।

