Madhyamgram Trolley Bag Murder: পিসিশাশুড়িকে খুন করে ট্রলিতে দেহ-লোপাট! মধ্যমগ্রামের মা-মেয়েকে যাবজ্জীবন সাজা শোনাল আদালত
Madhyamgram News: গোটা ঘটনার শিকড় উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামে। সেখানকার দক্ষিণ বীরেশপল্লির বাসন্তী মন্দির সংলগ্ন এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন আরতি ঘোষ ও তাঁর মেয়ে ফাল্গুনী ঘোষের। ওই বাড়িতেই দিন কতকের জন্য থাকতে গিয়েছিলেন নিহত সুমিতা ঘোষ।

বারাসত: সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ। দিন কতকের জন্য বাড়িতে আসা পিসি শাশুড়িকে শেষ করে ফেলেন মা-মেয়ে। এরপর একটি ট্রলি ব্যাগে দেহ ঢুকিয়ে তা লোপাটের জন্য পৌঁছে যান আহিরীটোলা ঘাটে। সাতসকালে দুই অজ্ঞাত পরিচয়ের ব্যক্তির হাতে মস্ত বড় ট্রলি ব্যাগ দেখে সন্দেহ তৈরি হয় ঘাটে উপস্থিত সাধারণ মানুষের মনে। তারপরই সেই সন্দেহ প্রকাশ্যে আনে এক হাড়হিম করা খুনের ঘটনা। সোমবার সেই খুনের মামলায় বারাসতের অতিরিক্ত জেলা বিচারক আদালতে ছিল সাজা ঘোষণার পালা। মধ্য়মগ্রাম ট্রলি-কাণ্ডে অভিযুক্ত মা-মেয়েকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল আদালত।
একনজরে মধ্যমগ্রামের ট্রলি ব্যাগ-কাণ্ড
গোটা ঘটনার শিকড় উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামে। সেখানকার দক্ষিণ বীরেশপল্লির বাসন্তী মন্দির সংলগ্ন এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন আরতি ঘোষ ও তাঁর মেয়ে ফাল্গুনী ঘোষের। ওই বাড়িতেই দিন কতকের জন্য থাকতে গিয়েছিলেন নিহত সুমিতা ঘোষ। বলে রাখা প্রয়োজন, সুমিতা সম্পর্কে ফাল্গুনীর পিসিশাশুড়ি। গত ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁদের বাড়ি গিয়েছিলেন তিনি। ২৪ ফেব্রুয়ারি সেখান থেকে অসমের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু তা আর হয়নি।
- ২৩ ফেব্রুয়ারি সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জেরে খুন করা হয় সুমিতা ঘোষকে। প্রথমে ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে দেওয়া হয়। তারপর শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত। অবশেষে বাড়িতে থাকা একটি ট্রলি ব্য়াগে দেহ স্থানান্তর।
- ২৪ ফেব্রুয়ারি ছিল এই ঘটনার দুই মূলচক্রী আরতি ঘোষ ও তাঁর মেয়ে ফাল্গুনী ঘোষের ‘আনন্দের দিন’। দেহ বাড়িতে তালা বন্ধ করে, সুমিতা ঘোষের ফোনপে ব্যবহার করে প্রথম একটি বড় নীল রঙের ট্রলিব্যাগ কেনেন তাঁরা। তারপর নিহতের টাকাতেই হোটেলে খাওয়া-দাওয়া করে, সোনার গয়না কিনে রাতের দিকে বাড়ি ফেরেন দু’জনে।
- এবার পালা দেহ লোপাটের। সেই কাজেই ২৫ ফেব্রুয়ারি নতুন ট্রলি ব্যাগে দেহ ঢুকিয়ে নিয়ে প্রথমে একটি ভ্য়ানে চাপিয়ে, পরে একটি সাদা ক্যাবে করে সরাসরি আহিরীটোলা ঘাটে পৌঁছে যান মা-মেয়ে। কিন্তু উদ্দেশ্য সফল হয়নি। ঘাটে গিয়েই বিপত্তি বাড়ে আরতি-ফাল্গুনীর। সাতসকালে ট্রলি ব্যাগ নিয়ে ওই দুই মহিলাকে যেতে দেখে তাঁদের ঘিরে ধরেন স্থানীয়রা। ট্রলি খুলতেই বেরিয়ে আসে রক্ত মাখা, পচন ধরা দেহ। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় উত্তর বন্দর থানার পুলিশ।
- ২৭ ফেব্রুয়ারি তদন্তভার গ্রহণ করে মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশ।
- ৩০ ফেব্রুয়ারি রাজ্য পুলিশের থেকে সিবিআইয়ের কাছে মামলা হস্তান্তরের দাবিতে আবেদন জানানো হয় হাইকোর্টে। তবে সেই আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ায় মামলার তদন্তভার থাকে মধ্যমগ্রাম থানার হাতেই।
- ২০ মে অভিযুক্ত আরতি ঘোষ ও ফাল্গুনী ঘোষের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্য়ায়সংহিতার (বিএনএস) ১০৩ (১), ২৩৮, ৩ (৫) ধারায় প্রথম চার্জশিট দাখিল।
- ৩০ অক্টোবর এই মামলায় অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করে বারাসত আদালত।
- ৩রা নভেম্বর হয় সাজা ঘোষণা। যাবজ্জীবন সাজা হয় মা-মেয়ের। পাশাপাশি এক লক্ষ টাকার জরিমানা করে আদালত। তা না দিতে পারলে আরও ৬ মাস বাড়বে কারাদণ্ডের মেয়াদ, নির্দেশ বিচারকের।
