Asansol: কেবল বক্রেশ্বরই নয়, আসানসোলেও রয়েছে আরও একটি উষ্ণ প্রস্রবণ! এই পর্যটনকেন্দ্রের কথা জানেন কি?

Asansol: টিকিট কাউন্টারের সব জিনিসপত্রও খোয়া গিয়েছে। উধাও হয়ে গিয়েছে পর্যটন কেন্দ্রের নাম লেখা ফলকটিও। এবার দাবি উঠেছে আবারও সেজে উঠুক উষ্ণ প্রস্রবণ। পর্যটনের হাত ধরে আর্থসামাজিক ব্যবস্থার উন্নতি হোক বারাবনির প্রান্তিক এলাকা পানিফলার।

Asansol: কেবল বক্রেশ্বরই নয়, আসানসোলেও রয়েছে আরও একটি উষ্ণ প্রস্রবণ! এই পর্যটনকেন্দ্রের কথা জানেন কি?
আসানসোলে উষ্ণ প্রস্রবণImage Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 02, 2023 | 9:19 AM

আসানসোল: আসানসোলেও রয়েছে এক বক্রেশ্বর! সেখানেও রয়েছে এক উষ্ণ প্রস্রবণ। মাটির তলা থেকে ২৪ ঘণ্টা অন্তত ৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের গরম জল বেরিয়ে আসছে। প্রকৃতির সেই আশ্চর্যের কথা জানেন না অনেকেই। স্থানীয় কিছু লোকজন এলেও পর্যটকের দেখা মেলে না। কার্যত ধ্বংসস্তূপের মধ্যে পড়ে রয়েছে সেই উষ্ণ প্রস্রবণ। স্থানীয় বাসিন্দারা চাইছেন, এই এলাকাকেই পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে তৈরি করা হোক।

বারাবনির জঙ্গল ঘেরা নির্জন এলাকায় মাটির নীচ থেকে গলগল করে ২৪ ঘণ্টা বেরিয়ে আসে গরম জল। সেই জল প্রায় ৮০ ডিগ্রি সেলসিয়ার বা ১৭০ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রার। যার মধ্যে চাল ফেললে সেদ্ধ হয়ে যায়। উষ্ণ প্রস্রবণ দেখতে বা স্নান করতে বিক্ষিপ্তভাবে লোকজন আজও আসেন। শীতকালে বনভোজনও করতেও আসেন কেউ কেউ।

বারাবনির পানিফলায় উষ্ণ প্রস্রবণটি ২০০০ সালে প্রথম নজরে আসে তৎকালীন বর্ধমান জেলা প্রশাসনের। ২৩ বছর আগে বক্রেশ্বরের ধাঁচে সেই উষ্ণ প্রস্রবণকে ঘিরে পর্যটক টানায় উদ্যোগী হয়েছিল জেলা পরিষদ। বারাবনির পানিফলায় সেই উদ্দেশ্যে গড়া হয়েছিল পার্ক, জলাধার। কিন্তু বাম জামানাতেই জেলাপরিষদের অবহেলায় শেষ হয়ে যায় নিরালা পার্কটি।

পানিফলা গ্রামের ১৯ জনের দান করা জমি ও কিছু খাস জমিতে গড়ে ওঠে ওই পর্যটন কেন্দ্রটি। গ্রামবাসীদের আশা ছিল, পর্যটনকে ঘিরে তাঁদের কিছুটা হলে আর্থিক উন্নয়নও হবে। বর্ধমান জেলা পরিষদের উদ্যোগে নির্মিত নিরালা উষ্ণ প্রস্রবণটির উদ্বোধন করেছিলেন রাজ্যের তৎকালীন পর্যটনমন্ত্রী দীনেশচন্দ্র ডাকুয়া।

উষ্ণ প্রস্রবণ জল ধরে রাখতে স্নান করার জন্য একটি চৌবাচ্চা তৈরি হয়। শিশুদের জন্য পার্ক বা খেলার ব্যবস্থা, জলাধারে নৌকাবিহারের ব্যবস্থাও করা হয়। পাঁচিলের মাঝে কৃত্রিম পাহাড়, এমনকি ভাড়া দেওয়ার জন্য ডর্মিটরি বা ছোট কটেজও তৈরি করা হয়। সেই নিরালা উষ্ণ প্রস্রবণের এখন কঙ্কালসার চেহারা। সদর দরজায় লোহার অংশ খুলে নিয়ে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা।

টিকিট কাউন্টারের সব জিনিসপত্রও খোয়া গিয়েছে। উধাও হয়ে গিয়েছে পর্যটন কেন্দ্রের নাম লেখা ফলকটিও। এবার দাবি উঠেছে আবারও সেজে উঠুক উষ্ণ প্রস্রবণ। পর্যটনের হাত ধরে আর্থসামাজিক ব্যবস্থার উন্নতি হোক বারাবনির প্রান্তিক এলাকা পানিফলার।

তবে এবার পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে উষ্ণ প্রস্রবণ সংস্কারের জন্য দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে, যা দিয়ে ভেঙে পড়া পাঁচিল সংস্কারের কাজ হচ্ছে। কটেজ ও রেস্তোরাঁও তৈরির কাজও শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের অর্থ তহবিলেও নতুন করে সেজে উঠবে আসানসোলের বক্রেশ্বর।

বারাবনি ব্লক পঞ্চায়েত সমিতির দাবি পার্কের বাইরে যে রাস্তাটি গিয়েছে লালগঞ্জ থেকে দমাহানি পর্যন্ত, সেটি একেবারে কাঁচা রাস্তা ছিল। ১০ কিলোমিটার এই রাস্তাটি পাকা করা হয়েছে। ফলে শহর আসানসোল থেকে পানিফলা যাতায়াতের অনেকটাই সুবিধা হচ্ছে এখন। ইতিমধ্যে জেলা পরিষদ থেকে দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। যা দিয়ে পুরো পার্কটির নতুন করে বাউন্ডারি তৈরি করা হচ্ছে। ছোট্ট একটি অফিস ঘর ইতিমধ্যে বানানো হয়েছে।’

জানা গিয়েছে, ষাটের দশকে কোন এক প্রাইভেট কোল কোম্পানি এখানে বোরিং করে গিয়েছিল। তাদের কাজকর্ম শেষ হওয়ার পর চলে যায়। এরপরে ওই বোরিং দিয়ে এই গরম জল বের হতে শুরু হয়। সেই যে ষাটের দশকের শুরু হয়েছে ২৪ ঘন্টা এখনও ওই জল বেরিয়ে আসছে।