ভেবেছিলিস বেঁচে যাবি? বুকে বন্দুক ঠেকিয়ে থ্রেট! সামনে চলে আসে বাস, পরের ঘটনা পুরো সিনেমা…

Medinipur: এরপরই, সামনে পেয়ে যান এক ব্যক্তিকে। তাঁর বুকে বন্দুক ঠেকিয়ে দেন এক দুষ্কৃতী। দু'-এক কথা বলতে বলতেই একটি বাস চলে আসে। সেই সুযোগে দুষ্কৃতীদের ধাক্কা দিয়ে শ্মশানের ভেতরে ঢুকে যান ওই ব্যক্তি।

ভেবেছিলিস বেঁচে যাবি? বুকে বন্দুক ঠেকিয়ে থ্রেট! সামনে চলে আসে বাস, পরের ঘটনা পুরো সিনেমা...
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 29, 2021 | 7:15 AM

পশ্চিম মেদিনীপুর: ভর সন্ধ্যা তখন! মেদিনীপুর শহরের (Medinipur Shootout) শ্মশান সংলগ্ন এলাকাতেও বেশ লোকজন রয়েছে। আচমকাই আপ্রাণ ছুট এক ব্যক্তির। পিছনে ছুটছেন আরও কয়েকজন। তাঁদের মধ্যে এক-দুজন বলছেন, “তুই কী ভেবেছিলি বেঁচে যাবি? কোথায় তুই?” সামনে চলে আসে বাস। ধাক্কাধাক্কি দিয়ে ভিড়ে মিশে যাওয়ার চেষ্টা করেন ‘টার্গেট পার্সন’! আর বলতে থাকেন, ‘আমাকেই কেন টার্গেট করছে ওরা?’ গোটা প্লটটা যেন হার মানাবে অ্যাকশন মুভিকেও! পশ্চিম মেদিনীপুর শহরের বুকেই এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

স্থানীয় দোকানদার এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা রীতিমতো স্তম্ভিত। রাত ঠিক সাড়ে আটটা বাজে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, দু’টি বাইকে করে ৪ জন আসে পদ্মাবতী শ্মশানঘাটের ঠিক সামনে। একজনের নাম করে হুমকি দিতে থাকেন তাঁরা। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ বলতে থাকেন, “তুই কি ভেবেছিস বেঁচে যাবি, কোথায় তুই!”

এরপরই, সামনে পেয়ে যান এক ব্যক্তিকে। তাঁর বুকে বন্দুক ঠেকিয়ে দেন এক দুষ্কৃতী। দু’-এক কথা বলতে বলতেই একটি বাস চলে আসে। সেই সুযোগে দুষ্কৃতীদের ধাক্কা দিয়ে শ্মশানের ভেতরে ঢুকে যান ওই ব্যক্তি।

তাঁকেও নাকি বলতে শোনা গিয়েছে, “জানি না আমাকেই বারবার টার্গেট করছে কেন! আমি ওঁর কী ক্ষতি করেছি।” ছুটতে ছুটতেই নাকি ওই ব্যক্তি বলেছেন, “আমি আতঙ্কিত। পুলিশ প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা দাবি করছি।” দুষ্কৃতী’র নাম মুখে না আনলেও, জানা গিয়েছে মেদিনীপুর ও খড়্গপুর শহরের একপ্রকার ত্রাস এবং নানা অভিযোগে দুষ্ট কুখ্যাত এক অপরাধীর দিকে।

জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তি আসলে শ্মশানেই এসেছিলেন। নিকট আত্মীয়ের সত্কার্যে অংশ নিতে। শ্মশানেই তাঁর ওপর হামলার ছক হয়। তাঁকে লক্ষ্য করে দুষ্কৃতীরা গুলি চালায়। তাঁর বুকেও বন্দুক ঠেকিয়ে রাখে। তবে কপাল জোরে তিনি কোনওক্রমে রক্ষা পান বলে দাবি। একটি বাস চলে আসে। ভিড় বাড়ে এলাকার। ধাক্কাধাক্কি দিয়ে ভিড়ের মধ্যে মিশে যান তিনি। দুষ্কৃতীরা পিছু নিয়েও তাঁকে সে সময় ধরতে পারেননি।

ওই ব্যক্তির কথায়, “আমি তো নিজেও বুঝতে পারছি না, কেন আমাকে মারতে চায় ওরা। আমার সঙ্গে তো কোনও শুত্রুতা নেই। কোনওদিন অশান্তিও হয়নি। আচমকাই কেন খুন করতে চায়, সেটা ভেবেও বুঝতে পারছি না। আমি তো শ্মশানে এসেছিলাম সত্কার্য করতে। তার মধ্যেই এই ঘটনা। এর আগেও আমার ওপর হামলা হয়েছে। সেবারও কোনওক্রমে বেঁচে যাই।” নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ওই ব্যক্তি। প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা দাবি করেছেন।

এক প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য অনুযায়ী, “একটি ছেলে এসেছিল, তার সঙ্গে আরও দু-তিন ছিল। পুরো সিনেমার স্টাইলে ঘটনাটি ঘটল। বন্দুক উঁচিয়ে গুলি করল। বলতে থাকল দেখে নেব… সঙ্গীদের নিয়ে জগন্নাথ মন্দিরের দিকে চলে যায়। তারপর কিছুক্ষণ পরই শ্মশানের ভিতর থেকে আরেক ব্যক্তি এসে চিত্কার চেঁচামেচি করতে থাকেন। বলতে থাকেন, আমাকে মেরে ফেলতে চাইছে ওরা। পুরো ঘটনাটাই বড্ড ধোঁয়াশা ও সিনেমার মতো।”

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। আক্রান্তের সঙ্গে কথা বলে। পুলিশ বলছে, সন্ধ্যায় গুলি চালনার খবর হয়েছে। অভিযুক্তের নাম জানার চেষ্টা চলছে। আক্রান্তের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে, তাঁর বয়ানও খতিয়ে দেখা হবে। অভিযুক্তদের সঙ্গে আদৌ তাঁর কী সম্পর্ক, দেখা হচ্ছে। আরও পড়ুন: তদন্তে যেতেই ঘিরে ধরল একদল, খুলে দেওয়া হল সিবিআইয়ের গাড়ির চাকার হাওয়া