Burdwan: ‘দুর্গার মতো মমতা’, স্তুতি গাইতে গিয়েই বিপাকে জেলাশাসক
Burdwan DM: এর আগেও শাসকদলের নেতাদের মুখে একাধিকবার মা সারদার সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তুলনা করতে দেখা গিয়েছে। তবে এবার আর শাসক দলের নেতা নয় খোদ জেলাশাসক। যিনি সরকারি মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মা দুর্গার তুলনা টানলেন।
বর্ধমান: “আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মা দুর্গার মতো সমস্ত দিকেই।” মন্তব্য করে ফের বির্তকে জেলাশাসক। বীরভূমের পর এবার বর্ধমানে। জেলাশাসক বিধান রায়ের মন্তব্যে কড়া সমালোচনায় বিরোধীরা। মা সারদার পর এবার মা দুর্গার সঙ্গে মমতার তুলনা! তবে এবার শাসক দলের কোনও নেতা নয়, মমতা-স্তুতি শোনা গেল খোদ জেলাশাসকের গলাতেই। যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতর।
শুক্রবার বর্ধমানের স্পন্দন মাঠে জেলা সৃষ্টিশ্রী মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পূর্ব বর্ধমানের জেলা শাসক বিধান রায়।সেখানেই স্বনির্ভর গোষ্ঠী সম্পর্কে উপস্থিত মহিলাদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমরা সেই পথ পেরিয়ে এসেছি। কোন পথ? যেখানে মা, বোন, দিদিদের একত্রিত করে স্বনির্ভর গোষ্ঠী গঠন করতে হত। আমার যতদূর জানা আছে, পরিসংখ্যানের নিরিখে এখানে পূর্ব বর্ধমান জেলায় ৭০ হাজারের মতো স্বনির্ভর দল গঠন হয়েছে। ৭ লক্ষ মানুষ কিন্তু এই স্বনির্ভর দলের সঙ্গে যুক্ত। এটা কিন্তু আমাদের একটা শক্তি।”
এখানেই থামেননি জেলাশাসক। তিনি আরও বলেন, “এটা নিছক একটা ভাবনা নয়,এটা আমাদের শক্তি।এই শক্তিকে আমরা কাজে লাগাচ্ছি। এ বার এই আর্থিক বছরে, ২০২৩-২৪ সালে স্বনির্ভর দল গঠনের লক্ষ্যমাত্রা ১৭০০।” স্বনির্ভর গোষ্ঠী প্রসঙ্গে কথা বলছিলেন জেলাশাসক, কথা বলছিলেন নারীশক্তি নিয়ে। তখন তাঁর মুখে মমতা-স্তুতি।
তিনি বলেন, “আমি একটা উদাহরণ দেব, আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন মহিলা। তিনি মা দুর্গার মতো সমস্ত দিকেই। আমি আপনাদের বলব, মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী, তিনি একজন, মা দুর্গার মতো কার্যক্রম গ্রহণ করতে পারেন,তাহলে কেন পারবেন না? একটা জ্বলন্ত উদাহরণ আছে আপনাদের কাছে। আমি অনুরোধ করব, সেই উদাহরণকে সামনে রেখে আপনারা এগিয়ে চলুন।”
আর এখানেই শুরু বিতর্ক। একটা সরকারি কর্মসূচিতে, একজন জেলাশাসক কীভাবে এভাবে কথা বলতে পারেন। তা নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, “আমরা বারংবার বলেছি যে,জেলায় জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা তৃণমূলের দলীয় দলীয় নেতৃত্ব হিসেবে কাজ করছে। সরকার এবং দলের মধ্যে কোন তফাৎ নেই।তাই একজন সরকারি কর্মচারী হিসেবে জেলাশাসক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্তুতি করবেন বাংলায় এটাই স্বাভাবিক।”
উল্লেখ্য,এর আগেও শাসকদলের নেতাদের মুখে একাধিকবার মা সারদার সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তুলনা করতে দেখা গিয়েছে। তবে এবার আর শাসক দলের নেতা নয় খোদ জেলাশাসক। যিনি সরকারি মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মা দুর্গার তুলনা টানলেন।
তবে জেলাশাসকের মন্তব্যে সমালোচনার কিছু দেখছে না তৃণমূল কংগ্রেসে। রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সব প্রকল্পের রূপায়ন করেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা।সুতরাং জেলাশাসক নিজে কাজ করছেন। তাই তিনি বলেছেন। এটা নিয়ে বির্তকের কী আছে?” বিতর্কের প্রেক্ষিতে জেলাশাসক অবশ্য আর মুখ খুলতে চাননি।