ভাতার: বাংলা আবাস যোজনা নিয়ে গ্রামসভা ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের বনপাশ পঞ্চায়েতে। বৃহস্পতিবার আবাস যোজনার চূড়ান্ত তালিকায় নাম না থাকায় স্থানীয়দের একাংশ গ্রামসভায় উপস্থিত পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধান এবং প্রশাসনিক প্রতিনিধিকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশ কোনওরকমে পরিস্থিতি সামাল দেয়। পুলিশ কর্মী ও আধিকারিকরা উত্তেজিত গ্রামবাসীদের বোঝানোর পর তাঁরা বাড়ি ফিরে যান। তবে এলাকায় চাপা উত্তেজনা থাকায় পুলিশের নজরদারি রাখা হয়েছে।
এদিন ভাতার ব্লকের বনপাশ পঞ্চায়েত থেকে বাংলা আবাস যোজনার অনুদান নিয়ে গ্রামসভা ডাকা হয়েছিল। কামারপাড়া বাজারে বনপাশ শিক্ষানিকেতন হাইস্কুলের মাঠে এই গ্রামসভার আয়োজন করা হয়। সম্প্রতি ২০১৮ সালের আবাস যোজনার তালিকা অনুযায়ী যে সার্ভে চলছিল সেই সার্ভে শেষ হওয়ার পর চূড়ান্ত তালিকা গ্রামসভায় প্রকাশ করা হয়। বনপাশ পঞ্চায়েতের মোট ১৬ টি সংসদ রয়েছে। সমগ্র পঞ্চায়েত এলাকার উপভোক্তাদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ্যে জানানোর জন্য গ্রামসভা ডাকা হয়েছিল। দেখা যায় তালিকা অনুযায়ী নাম ঘোষণার পরেই স্থানীয়দের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ শুরু হয়। কারণ, তালিকায় তাঁদের নাম নেই। নাম না থাকায় পঞ্চায়েত প্রধান উপপ্রধান থেকে শাসকদলের স্থানীয় নেতৃত্বের উপর ক্ষোভ উগরে দেন তাঁরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বনপাশ পঞ্চায়েত এলাকায় যে আবাস তালিকা এসেছিল তাতে উপভোক্তার সংখ্যা ছিল প্রায় ৯০০ জন। সার্ভে হওয়ার পর ২০০ এর বেশি উপভোক্তার নাম তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে। আবার অনেকে অভিযোগ তোলেন, তাঁরা তালিকায় থাকার যোগ্য হলেও বারবার আবেদন সত্বেও আবাস তালিকায় নাম ওঠেনি। এইসমস্ত অভিযোগ ঘিরে গ্রামসভায় সাময়িক ক্ষোভ বিক্ষোভ শুরু হয়। তবে ঝামেলার আশঙ্কায় আগে থেকেই পর্যাপ্ত পুলিশকর্মী মোতায়েন রাখা হয়েছিল।
আবাস তালিকায় নাম না থাকায় কেঁদে ফেলেন এক মহিলা। কাঁদতে কাঁদতে সুতি গোস্বামী নামে ওই মহিলা বলেন, “আমি গরিব মানুষ। মাটির বাড়ি। ঘরে কিছু নেই। আমার ঘরে সার্ভে করতেও আসেনি। এখন দেখছি তালিকায় আমার নাম নেই।”
বনপাশ পঞ্চায়েতের প্রধান চম্পা আরোষ জানান, “আমরা পঞ্চায়েত থেকে সার্ভে করিনি। প্রশাসন থেকে করা হয়েছে। তাই নাম বাদ দেওয়ার ক্ষমতা আমাদের নেই। যদি কারও অভাব অভিযোগ থাকে তাঁরা আমাদের কাছে জানাতে পারেন। আমরা তা নির্দিষ্ট জায়গায় পৌছে দেব।”