Sushanta Ghosh: বড়-মেজ-সেজ বোন থেকে স্ত্রী, শ্যালিকা, কে নেই? সুশান্তর পরিবারের চাকরির লিস্ট দেখালেন অখিল
Sushanta Ghosh: সেই তালিকায় এবার নয়া সংযোজন কারা মন্ত্রী অখিল গিরি। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর পর কাঠগড়ায় তৎকালীন বাম মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষ।
পূর্ব মেদিনীপুর: নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে বিদ্ধ রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। শিক্ষক নিয়োগে উঠছে ভূরি-ভূরি অভিযোগ। নাম জড়িয়েছে হেভিওয়েট তৃণমূল নেতা মন্ত্রীদের। হাজতবাসও করতে হচ্ছে তাঁদের। পরিস্থিতি সামলাতে মাঠে নেমে পড়েছে শাসকদলও। রাজ্যের প্রাক্তন শাসক বামফ্রন্টের দিকেই আঙুল তুলেছে ঘাসফুল শিবির। বামেদের বিরুদ্ধে নিয়োগে দু্র্নীতি নিয়ে অভিযোগ করতে গিয়েই তৃণমূল নেতাদের মুখে উঠে এসেছে চিরকুট প্রসঙ্গ। কুণাল ঘোষ থেকে ব্রাত্য বসু, মদন মিত্র, উদয়ন গুহ সকলের মুখেই এখন বামেদের নাম। সেই তালিকায় এবার নয়া সংযোজন কারা মন্ত্রী অখিল গিরি। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর পর কাঠগড়ায় তৎকালীন বাম মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষ। কারামন্ত্রীর অভিযোগ, চিরকুটের মাধ্যমে সুশান্ত ঘোষ পরিবারের একাধিক সদস্যদের চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন। এমনকী একটি তালিকাও সংবাদ মাধ্যমে তুলে ধরেন মন্ত্রী।
অখিল গিরি বলেন, “ওনার শ্বশুরবাড়ির এবং ওনার ভাই বোন আত্মীয় স্বজন কেউ বেকার নেই। তবে পাপ বাপকেও ছাড়ে না। আর সত্য গোপন থাকে না। এতদিন চুপ ছিলাম সিপিএম নেতারা ইদানিং বড্ড লাফালাফি করছেন। লাল পতাকার তলায় লুকিয়ে তাঁরা কত যে দুর্নীতি করছেন তা বোধহয় ভুলে গিয়েছেন। আমি শিক্ষামন্ত্রীকে তদন্তের আর্জি জানাব।”
সংবাদ মাধ্যমের সামনে অখিল গিরির একটি তালিকা প্রকাশ করে অভিযোগ করেন, বিধায়ক এবং মন্ত্রী থাকাকালীন পনেরো বছরে বড়বোন এবং ভগ্নীপতির চাকরি করে দিয়েছেন। বর্তমানে তাঁরা অবসর নিয়েছেন। সুশান্ত ঘোষের স্ত্রী ছিলেন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। বড়বোনের বড় ছেলে অর্থাৎ বামনেতার ভাগ্না বর্তমানে আধাননয়ন হাইস্কুলের লাইব্রেরিয়ান। ছোট ভাগ্না চাকরি করছেন ক্ষীরপাই এলাকার সেচ দফতরে। অখিল গিরর দাবি, তৎকালীন সিপিএম সেচ মন্ত্রীকে দিয়ে এই চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন।
বড় বোনের পর সুশান্ত ঘোষের ছোট বোন। তিনি একটি সরকারি স্কুলে কর্মরত। মেজবোনের স্বামী স্বামী গড়বেতার কেশিয়াতে ‘বাড়ি প্রাইমারি স্কুলে’ চাকরি করছেন। সেজবোনের স্বামী মেদিনীপুর প্রাইমারি বোর্ডে চাকরিরত। সুশান্ত ঘোষের আরও এক বোন আইসিডিএস-এর সুপারভাইজারে চাকুরি করছেন। তাঁর স্বামী অর্থাৎ সুশান্ত ঘোষের আরও এক ভগ্নীপতিও সেচ দফতরে চাকরি করছেন। বাম নেতার পিসির দুই ছেলেও সরকারি চাকরি করছেন।
শুধু তাই নয়, তাড়া গ্রামের বাসিন্দা সুনীল মালের ভাইয়ের পরিবহন দফতরে চাকরি ও তাঁর মেয়ের চাকরি করিয়ে দিয়েছেন সুশান্ত ঘোষ এমনটাই অভিযোগ করছে অখিল গিরি। একই সঙ্গে বামনেতার মামাতো ভাই অতনু খামরুই ও তাপস খামরুই পরিবহন দফতরে চাকরিরত।
প্রাক্তন বাম মন্ত্রীর এক শ্যালিকা মেদিনীপুর এক্সচেঞ্জ অফিসে পিওনের চাকরি করেন। ছোট শ্যালিকার ভাই হাইস্কুলে চাকুরিরত। পাশাপাশি ওনার বড় শ্যালক অরবিন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় পাটির জেলা কমিটির সদস্য। উনি পাটির হোল টাইমার। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা রোডে বাড়ি। বর্তমানে দিল্লিতে কয়েক কোটি টাকার ফ্ল্যাট বলে অভিযোগ অখিলের।
রবিবার তৃণমূল নেতা বলেন, “নিজের এলাকায় খোঁজ নিয়ে দেখুন পরীক্ষায় পাশ না করে চাকরি করছেন কতজন। কমরেডদের পরিবার দেখুন কতজন চাকরি করছে? কোন যোগ্যতাই বা তাঁরা চাকরি করছে। মেদিনীপুর জেলার তৎকালীন সম্পাদক দীপক সরকারের মদতেই উনি এই সব কাজ করেছেন যোগ্য প্রার্থীদের বঞ্চিত করে। আর এখন ধুয়া তুলসি পাতা ?”
বাম নেতা সুশান্ত ঘোষ বলেন, “এমন স্তরের নেতা যে এদের কথার প্রতি উত্তরে কোনও কথা বলা মানে এদের গুরুত্ব বাড়ানো হয়েছে। এরা কোনও গুরুত্ব পাওয়ার মতো নেতা নয়। যারা চোর হিসাবে চিহ্নিত হয়েছেন তাঁরা মনে করেন অন্যের দিকে আঙুল তুললে তাঁরা যে চোর সেটা খানিকটা লাঘব হয়ে যাবে।”