Bhangar: জেলমুক্তি হল বটে, কিন্তু আজ ভাঙড়েই ‘তাজা নেতা’ আরাবুল ‘ঘরছাড়া’!

Satyajit Mondal | Edited By: শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী

Jul 03, 2024 | 12:57 PM

Bhangar: প্রায় পাঁচ মাস  জেলবন্দি থাকার পর অবশেষে জামিন পান তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম। এককালে ভাঙড়ের তাজা নেতা। কিন্তু তাঁর জেলমুক্তি নিয়ে ভাঙড়ে তেমন করে কোনও উত্তেজনা নেই। কোথাও কোনও উচ্ছ্বাস বা বিজয় মিছিল নেই। জামিনের ক'দিন আগেই পঞ্চায়েত সমিতি থেকে খুলে নেওয়া হল আরাবুল ইসলামের নেমপ্লেট।

Bhangar: জেলমুক্তি হল বটে, কিন্তু আজ ভাঙড়েই তাজা নেতা আরাবুল ঘরছাড়া!
আরাবুল ইসলাম (ফাইল ছবি)
Image Credit source: Facebook

Follow Us

ভাঙড়: পঞ্চায়েত সমিতিতে ঘরছাড়া তৃণমূলের আরাবুল ইসলাম। ১৬ বছর পর ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতিতে গৃহহীন আরাবুল। ১১ বছর পর ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতি থেকে সরানো হল আরাবুলের নেম প্লেট। সভাপতির ঘরে এখন সহ সভাপতি ও শওকত মোল্লা ঘনিষ্ঠ খাইরুল ইসলাম। জামিন পাওয়ার পর আজই জেল থেকে ফেরার সম্ভাবনা ভাঙড়ের তাজা নেতার। তিনি কি ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতিতে যাবেন? এখন সেই প্রশ্ন ভাঙড় জুড়ে।

২০০৮ সালে ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতিতে বোর্ড গঠন করে তৃণমূল। সভাপতি হন আমিনা বেগম বিশ্বাস। আরাবুল তখন বিধায়ক। বিধায়ক হওয়ায় পঞ্চায়েত সমিতিতে ছিল তাঁর বসার ঘর। বিধায়ক পদ খুইয়ে ২০১৩ সালে ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হন আরাবুল। পাকাপাকি ভাবে নেমপ্লেট দিয়ে আরাবুলের নামে আধুনিক মানের ঘর তৈরি হয়। যা অক্ষত হয়ে ছিল ২০২৪ সালের ৯ জুন পর্যন্ত। ২০১৮ সালে ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি হলেও নিজের ঘর ছাড়েনি তিনি। ২০২৩ সালে আবার সভাপতি হন আরাবুল। ঘর সেই একই রেখে দিয়েছিলেন। ক্ষমতায় থাকার পরও সেই ঘর থেকেই সরল আরাবুলের নেম প্লেট। প্রশ্ন ভাঙড়ে কি তাহলে আরাবুলের রাজনৈতিক জীবনের সমাপ্তি!

প্রায় পাঁচ মাস  জেলবন্দি থাকার পর অবশেষে জামিন পান তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম। এককালে ভাঙড়ের তাজা নেতা। কিন্তু তাঁর জেলমুক্তি নিয়ে ভাঙড়ে তেমন করে কোনও উত্তেজনা নেই। কোথাও কোনও উচ্ছ্বাস বা বিজয় মিছিল নেই। জামিনের ক’দিন আগেই পঞ্চায়েত সমিতি থেকে খুলে নেওয়া হল আরাবুল ইসলামের নেমপ্লেট। সহ-সভাপতি কে পঞ্চায়েত সমিতির চার্জ দেওয়ায় সহ-সভাপতি সোনালি বাছাড় বসলেন আরাবুলের চেয়ারে। আর তার পাশে বসে পঞ্চায়েত সমিতি পরিচালনা করলেন আরাবুল বিরোধী খইরুল ইসলাম। এই খইরুলকে খুন করার ছক কষেছিলেন আরাবুল ইসলাম, যা নিয়ে জনসমক্ষে সরব হয়েছিলেন তৃণমূল নেতা শওকত মোল্লা। আরাবুলের জামিন প্রসঙ্গে তাঁর ছেলে হাকিমুল ইসলাম সহ আরাবুল ইসলাম ঘনিষ্ঠরা কেউ কিছুই বলতে চাইছে না প্রকাশ্যে।

আরাবুলের বিরুদ্ধে খুন সহ ৯টি মামলা রুজু হয়। এবছর ৮ ফেব্রুয়ারি আরাবুল ইসলামকে গ্রেফতার করে উত্তর কাশীপুর থানার পুলিশ। তারপর পোলেরহাট, ভাঙড় থানা এলাকায় বেশ কয়েকটি ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে নাম জড়ায় আরাবুলের। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একাধিকবার নিজেদের হেফাজতে নেয় পুলিশ। এরপর পুলিশের বিরুদ্ধে অতি সক্রিয়তার অভিযোগ তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন আরাবুল। এমনকি তাঁর স্ত্রী জাহানারা বিবিও আরাবুলের বিরুদ্ধে কি কি মামলা রয়েছে তা জানতে চেয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন।

এদিকে আরাবুল জেলে থাকার পর লোকসভা ভোটের আগেই তাঁকে ভাঙড় ২ ব্লক তৃণমূলের কনভেনার পদ থেকে সরিয়ে দেয় দল। লোকসভা নির্বাচনে আরাবুলহীন ভাঙড়ে সওকাত মোল্লার নেতৃত্বে তৃণমূল ভালো মার্জিনে জেতে। তারপরই ৯ জুন ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি সোনালী বাছাড়কে কার্যকারী সভাপতি করা হয় আরাবুল ইসলামের জায়গায়। শুধু তাই নয় আরাবুল জামিন পাওয়ার আগেই তাঁর নামাঙ্কিত পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির বোর্ড খুলে ফেলা হয়। জামিন পাওয়ার আগেই কী কারণে আরাবুলের নাম লেখা সভাপতির বোর্ড খুলে ফেলা হল, তা নিয়ে জানতে চাওয়া হলে শওকত মোল্লা বলেন, “বিষয়টি জানিনা। খোঁজ নিয়ে দেখছি।”

প্রসঙ্গত, কদিন আগেই শওকত মোল্লা প্রকাশ্যে আরাবুল ইসলামের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন। বিস্ফোরক অভিযোগও করেছিলেন। শওকতের বিস্ফোরক দাবি, ‘পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামীকে খুন করার চক্রান্ত করেছে আরাবুল। পঞ্চায়েত সদস্য ও পঞ্চায়েত প্রধান করার জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়েছেন আরাবুল।’  পঞ্চায়েত নির্বাচনে গন্ডগোলের অভিযোগে আরাবুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার তাঁর জেলমুক্তি হয়।  আরাবুলের জেলে যাওয়ার পর ভাঙড়ের অন্দরে গুঞ্জন ছড়িয়েছিল এবার কি তাহলে ভাঙড়ের রাজনৈতিক রাশ থাকবে শওকতের হাতে?  এদিনের ঘটনা যেন তারই প্রমাণ।

Next Article