দক্ষিণ ২৪ পরগনার: কুলপির অশ্বত্থতলার বাসিন্দা বর্ণালী ধাড়া। ২৬ জানুয়ারি সাধারণতন্ত্র দিবসে ‘উদ্যোগী কৃষক’ হিসাবে রাষ্ট্রপতি পুরষ্কার পাচ্ছেন বর্ণালী। কৃষির মাধ্যমে মহিলাদের স্বনির্ভরতার দিশা দেখিয়েছেন তিনি। তাঁর কাজের ক্ষেত্র মূলত সুন্দরবন। ইতিমধ্যে রাষ্ট্রপতি ভবনের চিঠি এসে পৌঁছেছে বর্ণালীর বাড়িতে। সারা দেশের দশ জন মহিলা এবারের উদ্যোগী কৃষক হিসেবে রাষ্ট্রপতি পুরস্কারে সম্মানিত হবেন। তাঁর মধ্যে এ রাজ্য থেকে একমাত্র মনোনীত হয়েছেন বর্ণালী। গ্রাম্যবধূ বর্ণালীর এই সম্মানে খুশি জয়নগরের নিমপীঠ কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রও। এই কেন্দ্র থেকেই প্রশিক্ষণ নিয়েই বর্ণালী শুরু করেছিলেন চাষবাস।
বছর পঞ্চাশের বর্ণালীর চাষবাসের প্রতি আগ্রহ ছোট থেকে। বাবারবাড়ি কাকদ্বীপে। বাবা, মা দুজনেই শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত। পরিবারে গরুপালন, ধান চাষ ও সবজির বাগান ছিল। ছোট থেকে আগ্রহ ছিল চাষবাসের। পরবর্তীসময় কুলপিতে বিয়ে হয় তাঁর। স্বামী পেশায় স্কুল শিক্ষক। পাশাপাশি সার, বীজের দোকান ছিল। দোকানে এলাকার কৃষকরা আসতেন। সেই সূত্রে বহু কৃষকের সঙ্গে তাঁর সখ্যতা গড়ে ওঠে। কিন্তু কৃষিকে লাভজনক করে তুলতে নিমপীঠ কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র থেকে ২০১৭ সালে প্রশিক্ষণ নেন। প্রশিক্ষণ শেষে গ্রামে গড়ে তোলেন ‘এফপিসি’ বা ‘ফার্মাস প্রডিউসার কোম্পানি’ ও ‘এফআইজি’ বা ‘ফার্মাস ইন্টারেস্ট গ্রুপ’।
কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কৃষি বিষয়ক একাধিক প্রকল্পের কথা জানতে পারেন। শুরু হয় সরকারি প্রকল্প কাজে লাগিয়ে চাষবাস, হাঁস, মুরগি, ছাগল, গরু পালন। বর্ণালীর হাতে তৈরি অশ্বত্থতলা জনকল্যাণ মহিলা সমিতির সদস্য বাড়তে থাকে। বর্তমানে ২ হাজারের বেশি মহিলা তাঁর সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। সকলেই স্বনির্ভর হচ্ছেন। বীজ, জৈব সার, সেচ ব্যবস্থা নিয়ে হাতেকলমে প্রশিক্ষণ পাচ্ছেন পুরুষ ও মহিলারা। কৃষি ও হাতের কাজকে সম্বল করে স্বনির্ভর হচ্ছেন।
বর্ণালী বলেন, “চাষিদের সঙ্গে এখন আমাদের সরাসরি যোগাযোগ হয়। চাষিদের পাশে দাঁড়ানো অত্যন্ত প্রয়োজন ছিল। প্রচুর মানুষ এখন বাগান করে স্বনির্ভর। আজ আমি খুব খুশি। কষ্ট করলে, একদিন ভাল খবর আসবেই।”