লকডাউনে নেই আয়, শিকল দিয়ে বেঁধে স্বামীর পা ভাঙলেন স্ত্রী, ফেলে রাখলেন বারান্দায়!

Sonarpur: প্রতিবেশীদের অভিযোগ, শিকল দিয়ে বেঁধে মারধর করেই স্বামীর পা ভেঙেছেন স্ত্রী।

লকডাউনে নেই আয়, শিকল দিয়ে বেঁধে স্বামীর পা ভাঙলেন স্ত্রী, ফেলে রাখলেন বারান্দায়!
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 31, 2021 | 1:00 PM

সোনারপুর: ওষুধের দোকানে কাজ করেই সংসার চালাতেন। কিন্তু ইদানীং শরীর খারাপে আয় ছিল না সেরকম। ঘরেই বসে থাকতেন তিনি। আর তাতেই শিকার হলেন স্ত্রীয়ের অত্যাচারের। শুধু তাই নয়, শিকল দিয়ে বেঁধে রাখলেন স্ত্রী, মারধরে পা ভাঙলেন, বিনা চিকিত্সায় ফেলে রাখলেন বাড়ির বারান্দায়। মায়ের সঙ্গে বাবার ওপর এই অত্যাচারে সামিল মেয়েও। সোনারপুরের বাদামতলার এই ঘটনায় সরব প্রতিবেশীরা। অভিযোগ তুলে প্রশাসনের দ্বারস্থ তাঁরা।

প্রতিবেশীদের অভিযোগ, শিকল দিয়ে বেঁধে মারধর করেই স্বামীর পা ভেঙেছেন স্ত্রী। অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসা না করেই ঘরের বারন্দায় স্বামীকে ফেলে রেখেছেন মা-মেয়ে।

বাদামতলার দীর্ঘদিনের বাসিন্দা বিশ্বনাথ পাত্র। মেয়ে-স্ত্রীকে নিয়ে সংসার। একার রোজগারেই চলত সংসার। কিন্তু করোনা কালে আয় হত না ভাল। উপরন্তু অসুস্থতায় শরীর হয়ে পড়ে দুর্বল। প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, বিশ্বনাথের স্ত্রী বরাবরই দেমাকি। সেরকমই মেয়ে। পাড়ায় খুব একটা মিশতেন না কেউই। স্বামীর ওপর চোটপাট করতেন খুবই। আয় কমে যাওয়ায় চোটপাটের মাত্রা দ্বিগুণ হয়।

ইদানীং ওই বিশ্বনাথের বাড়ি থেকে চিত্কার চেঁচামেচির শব্দ খুব বেশি ভেসে আসত। প্রতিবেশীদের কথায়, গলা শোনা যেত কেবল মা-মেয়েরই। বরাবরই শান্ত স্বভাবের বিশ্বনাথ। নিতান্ত পারিবারিক বিবাদ বলে প্রথমটায় বিশেষ আমল দেননি প্রতিবেশীরা। কিন্তু কয়েকদিন ধরে দেখতে পান, বাড়ির বারান্দার এক কোণে পড়ে রয়েছেন বিশ্বনাথ। চরম অযত্নে-অবহেলায়।

প্রতিবেশীরা সহ্য করতে পারেননি। খোঁজ নিতে যান। তখনই দেখা যায় গোটা বিষয়টি। পা ভেঙে গিয়েছে বিশ্বনাথের। সেই পায়েই আবার বাঁধা রয়েছে শিকল। হয়নি প্লাস্টারও। বিশ্বনাথের মেয়ের এক বান্ধবীর কথায়, “কাকু খেয়েছেন কিনা, খোঁজ নিতে গিয়েছিলাম। বলল, আলু সেদ্ধ আর ভাত দিয়েছে। নুনটা পর্যন্ত দেয়নি। এরকমই করে ওরা।”

এই ঘটনায় নাকি একবার পুলিশও এসেছিল বিশ্বনাথের বাড়িতে। বিশ্বনাথের স্ত্রী ও মেয়ের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদেরকে বুঝিয়ে যান। কিন্তু তারপরও খেতে দেওয়া হত না বলে অভিযোগ। পাড়ার লোকেরাই তাঁকে খেতে দিতেন। এদিনও ক্যামেরার সামনে ক্ষোভ উগরে দেন প্রতিবেশীরা।

আরেক প্রতিবেশীর কথায়, “পরিবারের ঝামেলা ভেবে আমরা প্রথমে একদমই নাক গলাতাম না। কিন্তু পরে দেখি অত্যাচারের মাত্রা বাড়ছে। শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছিল। পাও ভেঙে গিয়েছে। এরপর তো আর সহ্য করা যায় না।”

প্রতিবেশীদের সাহায্যে আপাতত কোনরকমে খেতে পাচ্ছেন বিশ্বনাথ পাত্র ৷ স্থানীয় বাসিন্দারাই খবর দিয়েছেন সোনারপুর থানায় ৷ খবর পেয়ে সোনারপুর থানার পুলিশ যায় ৷ তারপর শিকল খুলে চিকিত্সার ব্যবস্থা করা হয়।

যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিশ্বনাথের স্ত্রী ৷ তিনি পাল্টা দাবি করেছেন, মত্ত অবস্থায় মাঝেমধ্যেই বাড়ি ফিরতেন না বিশ্বনাথ। রাস্তায় যেখানে সেখানে পড়ে থাকতেন। ওই ভাবেই পা ভেঙেছেন। ভয় দেখানোর জন্যই এক রাত পায়ে শিকল বেঁধে রেখেছিলেন তাঁরা। তাঁর কথায়, বিশ্বনাথের জন্যই নাকি তাঁদের মান-সম্মান ডুবছে এলাকায়। বিশ্বনাথ অবশ্য স্ত্রীয়ের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ তুলেছেন। আরও পড়ুন: EXCLUSIVE: ‘শান্তি কীসে পাব?’ ফেসবুকে পোস্টের পরই গায়ে অ্যালকোহল ঢেলে আগুন ধরালেন চিকিত্সক! কাঠগড়ায় রাজ্য সরকার