Royal Bengal Tiger: দাঁড় করানো নৌকায় এক ঝাঁপ! চোখের সামনেই স্ত্রী-র পাশ থেকে স্বামীকে তুলে নিয়ে গেল রয়্যাল বেঙ্গল
Sundarban: মঙ্গলবার ভোর রাত্রে প্রতিবেশী শশাঙ্ক মণ্ডল ও স্ত্রী রীণা সরকারকে নিয়ে মাছ,কাঁকড়া ধরার জন্য বাড়ি থেকে রওনা দিয়েছিলেন সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলের নদীখাঁড়িতে।
সুন্দরবন: দিন আনা দিন খাওয়া পরিবার ওদের। সুন্দরবনের নদীর খাঁড়িতে মাছ, কাঁকড়া ধরেই চলে সংসার। রোজের মতই স্বামী-স্ত্রী বেরিয়েছিলেন রুজির আশায়। তবে বিপদ যে এভাবে ওঁত পেতে বসেছিল তা হয়ত ঠাউর করতে পারেননি। আচমকাই নৌকায় ঝাঁপ ডোরাকাটার। কিছু বুঝে ওঠার আগে স্ত্রীর পাশ থেকে স্বামীকে তুলে গেল রয়্যাল বেঙ্গল।
মঙ্গলবার ভোরের ঘটনা। সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলের গোলভক্সা এলাকার নদীখাঁড়িতে কাঁকড়া ধরতে বেরিয়েছিলেন গোসাবা ব্লকের সুন্দরবন উপকুল থানার অন্তর্গত লাহিড়ীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চরঘেরী এলাকার বাসিন্দা শিবপদ সরকার (৫৫) ও তাঁর স্ত্রী রিনা সরকার।
সরকার দম্পতির তিন পুত্র ও এক পুত্রবধূ রয়েছে। দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী শিবপদ। পরিবারের মুখে দু’মুঠো অন্নসংস্থানের জন্য সুন্দরবনের নদীখাঁড়িতে মাছ কাঁকড়া ধরে জীবন জীবিকা নির্বাহ করেন তাঁরা।
মঙ্গলবার ভোর রাত্রে প্রতিবেশী শশাঙ্ক মণ্ডল ও স্ত্রী রিনা সরকারকে নিয়ে মাছ,কাঁকড়া ধরার জন্য বাড়ি থেকে রওনা দিয়েছিলেন সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলের নদীখাঁড়িতে। ডিঙি নৌকা দাঁড় বেয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই পৌঁছে গিয়েছিলেন সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলের গোলভক্সা নদীখাঁড়িতে।
সেখানে চরের কাছে নৌকা বেঁধে রেখে কাঁকড়া ধরার জন্য দোন তৈরি করছিলেন স্বামী-স্ত্রী।একটু দূরেই ছিলেন সঙ্গী শশাঙ্ক মণ্ডল। ঘড়ির কাঁটায় সময় প্রায় ভোর সাড়ে চারটে। সেই সময় সুন্দরবনের গভীর জঙ্গল থেকে একটি বাঘ বেরিয়ে আসে। টার্গেট করে শিবপদকে। আচমকা কোনও কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাঘটি ঝাঁপিয়ে পড়ে শিব পদ-র উপরে। তাঁর ঘাড়ে কামড় বসিয়ে টানতে-টানতে জঙ্গলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
চোখের সামনে স্বামীর করুণ পরিণতির মর্মান্তিক দৃশ্য দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ে রীণা সরকার। অন্যদিকে সঙ্গীকে বাঘে আক্রমণ করেছে বুঝতে পেরে দৌড়ে আসেন শশাঙ্ক। নৌকার বৈঠা আর গাছের ভাঙা ডাল নিয়ে রীণা আর শশাঙ্ক প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। বাঘটি তার শিকারকে টানতে-টানতে গভীর জঙ্গলে নিয়ে পালিয়ে যায়। ব্যর্থ দুই সঙ্গী নৌকার হাল বেয়ে সকালে গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসে। সাতসকালে এমন ঘটনার কথা এলাকায় চাউর হতেই শোকের ছায়া নেমে আসে গোটা গ্রামে।