Chopra: ছাত্রী ধর্ষণে প্রতিবাদের মাসুল! স্কুলেই ‘একঘরে’ চোপড়ার শিক্ষক
Chopra: বুধবার স্কুল শুরু হতেই টাটু সিং উচ্চ বিদ্যালয়ে গোলমাল শুরু হয়। স্কুলের ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক স্কুলে গিয়ে হাজিরা খাতায় সই করতে গেলে গোলমাল বাধে। অভিযোগ, স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি সহ তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা শিক্ষককে বাধা দেন।

উত্তর দিনাজপুর: জামিনে মুক্ত এক শিক্ষককে ক্লাস করতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠল স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে ইংরাজির ওই শিক্ষক প্ল্যাকার্ড হাতে স্কুলের বাইরে ধর্নায় বসলেন। তাঁর অভিযোগ, বোর্ডের নির্দেশ ছাড়াই স্কুলের হাজিরা খাতায় সই করতে ও স্কুলে ঢুকতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। তৃণমূল স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন ওই শিক্ষক। ওই শিক্ষকের পাশে দাঁড়িয়েছে এলাকার নাগরিক সমাজ। উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায় টাটু সিংহ উচ্চ বিদ্যালয়ের ঘটনা বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালে এক কিশোরীকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ ওঠে চোপড়ায়। সেই সময়ে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে এলাকা। অভিযুক্তদের গ্রেফতার দাবিতে বিক্ষোভ-আন্দোলন হয়। সে সময়ে এলাকায় বেশ কিছু সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুরেরও অভিযোগ ওঠে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। সেই বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে পুলিশ। ওই শিক্ষক থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। তিনি জেল খাটেন।
পরে জামিনে মুক্ত পান ওই শিক্ষক। তিনি কর্মস্থলে যোগ দিতে গিয়েও বাধার সম্মুখীন হন বলে অভিযোগ। শিক্ষকের বক্তব্য, কোনও সরকারি নির্দেশিকা ছাড়াই স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক তাঁকে রেজিস্টারে সই করতে দেওয়া হয় না।
বুধবার স্কুল শুরু হতেই টাটু সিং উচ্চ বিদ্যালয়ে গোলমাল শুরু হয়। স্কুলের ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক স্কুলে গিয়ে হাজিরা খাতায় সই করতে গেলে গোলমাল বাধে। অভিযোগ, স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি সহ তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা শিক্ষককে বাধা দেন। স্কুল থেকে বের করে দেন। গোটা ঘটনায় স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সহমত ছিল বলেও অভিযোগ ওঠে। ওই শিক্ষককে স্কুলের গেটের বাইরে অবস্থানে বসে পড়েন।
অভিযুক্ত শিক্ষকের বক্তব্য, তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। কিছুদিন জেল হেফাজতে থাকার পর জামিন পান তিনি। আর অভিযোগ, এরপরেই তাঁর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক অবস্থানগত কারণে চক্রান্ত শুরু করেন স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি। গত মাসে তিনি বেতনও পাননি বলে দাবি।
অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের আরও দাবি, তাঁকে বরখাস্ত করার কোনও নির্দেশিকার কাগজ দিচ্ছেন না কেউ।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, “ওই শিক্ষককে আমরা বরখাস্ত করতে পারি না। তাঁকে বরখাস্ত করার অধিকার আছে ওয়েস্ট বেঙ্গল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশনের সভাপতির। তাঁকে পুনর্বহাল করার অধিকারীও তিনি।” প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, “ওই শিক্ষক আইনের চোখে অপরাধী। তাঁর জেলে থাকার এবং জামিনে মুক্তি হওয়ার কাগজ আমরা পেয়েছি, তাই সেগুলো আমরা বোর্ডে পাঠিয়েছি। বোর্ড থেকে বলা হয়েছে আপনারা ধৈর্য ধরুন ওই শিক্ষকের বরাখাস্তের নির্দেশ বোর্ড থেকে আসবে।”
স্বাভাবিক ভাবে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠছে? যখন প্রধান শিক্ষক ও স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি নিজেরাই বলছেন, তাঁরা বরখাস্ত করার কেউ নন,তাহলে কেন হাজিরা খাতায় সই করতে দেওয়া হচ্ছে না?
