বাকিদের ছাপিয়ে ভোট-প্রচারের স্পট লাইটে সেই মোদী বনাম মমতাই
দুই সুপ্রিমোর প্রচার-তরজায় আপাতত জমজমাট ভোট (West Bengal Election 2021) মহারণের বাংলা।
কলকাতা: শুধু চৈত্রের গরমই নয়। বিধানসভা ভোটের প্রচার ঘিরেও উত্তাপ বেড়েছে বাংলায়। এতদিন নির্বাচনের আগে নজর থাকত কেবল প্রার্থী-প্রচারেই। কিন্তু একুশের ভোটে লাইম লাইট কেড়ে নিয়েছেন তৃণমূল ও বিজেপির দুই প্রধান মুখ। একদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে নরেন্দ্র মোদী। বাকিরাও আছেন বটে! তবে স্পট লাইট এই দু’জনের মুখেই।
গত কয়েকদিনে জেলায় জেলায় বেশ কয়েকটি সভা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর ঘোরা হয়ে গিয়েছে। নরেন্দ্র মোদীও ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি জেলায় সভা করেছেন। যেমন শনিবারই ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুরে। মূলত, গত কয়েকদিনে মোদী-মমতার নির্বাচনী বাকযুদ্ধ আবর্তিত হয়েছে নির্দিষ্ট কয়েকটি বিষয়কে কেন্দ্র করে।
মোদী যেমন বারবার বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর সরকারের বাংলার উন্নয়ন নিয়ে কোনও মাথাব্যথাই নেই। পাল্টা মমতাও মোদীকে নিশানা করেছেন, দেশের নড়বড়ে আর্থিক পরিকাঠামোকে তুলে ধরে। প্রতিটি জনসভা থেকেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মোদীর অভিযোগ, গত ১০ বছরে এই সরকার তোলাবাজি, তুষ্টিকরণ, সিন্ডিকেটরাজ চালিয়েছে রাজ্যে। ‘ভাইপো’র স্বার্থ ছাড়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর কারও কথাই ভাবেননি। কয়লাপাচার থেকে গরুপাচার কিংবা রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা প্রতিটি ক্ষেত্রেই মোদীর কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়েছে মমতাকে।
পাল্টা মমতাও দাবি করেছেন, সেল, ভেল, কোল ইন্ডিয়া, এলআইসির মতো দেশের ঐতিহ্যশালী সংস্থাকে যারা বেঁচে দেওয়ার তাল ঠুকছে তারা আবার দেশের মানুষকে কী ভাবে বাঁচাবে। একইসঙ্গে জ্বালানি দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি, মহার্ঘ এলপিজি সিলিন্ডার, নয়া কৃষি আইন-প্রতি ইস্যুতেই মমতার নিশানায় মোদী ও তাঁর সরকার। একইসঙ্গে বিজেপিকে তোপ দাগতে মমতার অস্ত্র ‘সাম্প্রদায়িক’ দোষারোপও।
আরও পড়ুন: ভিড়ে ঠাসা প্ল্যাটফর্মের এক কোণে দেখা যাচ্ছিল দু’টি পা, এগিয়ে যেতেই আঁতকে উঠলেন যাত্রীরা
একইসঙ্গে প্রতিটি জনসভা থেকে নরেন্দ্র মোদী অভিযোগ তুলছেন, মমতার সরকার আয়ুষ্মান ভারত কিংবা কিসান সম্মান নিধি থেকে ইচ্ছা করে বঞ্চিত করছে এ রাজ্যের মানুষকে। পাল্টা মমতার যুক্তি, কোনও বঞ্চনার জায়গাই নেই। রাজ্য টাকা দেবে আর কেন্দ্র নাম কিনবে, তাতে তিনি রাজি নন। সে কারণেই তাঁর সরকার স্বাস্থ্যসাথী, কৃষকবন্ধুদের রেখেছে।
দুই সুপ্রিমোর প্রচার-তরজায় আপাতত জমজমাট মহারণের বাংলা। রাজ্য রাজনীতির প্রেক্ষাপটে মোদী-মমতার এই প্রচার-দ্বৈরথ নিঃসন্দেহে ভোটবাক্সে একটা বড় গুরুত্বের দাবিদার। তবে নিজের নিজের বক্তব্যকে তুলে ধরে ভোটারদের মন কে কতটা জয় করতে পারলেন, ২ মে মিলবে তার উত্তর।