AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

আজকের দিনেই স্বাধীন হয়েছিল আফগানিস্তান, ফের নিজ ভূমে পরাধীনতার শৃঙ্খল

১৯১৯-এর ১৯ অগস্ট স্বাধীন হয়েছিল আফগানিস্তান। প্রতিবার এই দিনটি ছুটির দিন হিসেবে গণ্য হয়।

আজকের দিনেই স্বাধীন হয়েছিল আফগানিস্তান, ফের নিজ ভূমে পরাধীনতার শৃঙ্খল
ফাইল ছবি
| Edited By: | Updated on: Aug 19, 2021 | 2:18 PM
Share

কাবুল: আজ আফগানিস্তানের স্বাধীনতা দিবস। প্রত্যেকবার দেশ জুড়ে ছুটির মেজাজ থাকে এই দিনে। যদিও দেশটা বিপর্যস্ত হয়েছে বারবার, তবু গত কয়েক বছর ধরে ছুটির দিন হিসেবে গণ্য হয়েছে এই ১৯ অগস্ট দিনটি। আজ ফের একটা ১৯ অগস্ট। আর আজ সে দেশে আবার শুরু হয়েছে আর এক স্বাধীনতার লড়াই। আজ নিজের দেশের মাটি ছেড়ে পালানোর জন্য পথে নেমেছে আফগানরা। প্লেনের চাকায় ঝুলতে ঝুলতে মৃত্যু হওয়াটাও ভাল, তবু তালিবানের সারিয়া শাসনে দেশের মাটিতে প্রত্যেকটা দিন যেন বিভীষিকা। শুধু তাই নয় অনেকেই সকালে ঘুম ভেঙে অনেকেই দেখছেন চারপাশে লাগানো তালিবানের পতাকা। আফগানিস্তানের তেরঙা পতাকা খুলে জায়গায় জায়গায় তালিবান লাগাচ্ছে তাদের সাদা-কালো পতাকা। আর প্রাণের ঝুঁকি নিয়েও সেই পতাকা বাঁচাতে পিছপা হচ্ছেন না আফগানিস্তানের বাসিন্দারা।

গতকাল তালিবানি চোখরাঙানির মাঝেই আফগানিস্তানের রাস্তায় হয়েছে পতাকা বাঁচানোর লড়াই। সেই ‘যুদ্ধে’ প্রাণ হারিয়েছেন দু’জন। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আরও ১২ জন। আফগানিস্তানের জালালাবাদ শহরে পতাকা রক্ষার জন্য পথে নামতেই ভিড় লক্ষ্য করে গুলি চালায় তালিবান। তৃতীয় অ্যাংলো- আফগান যুদ্ধ শেষে ব্রিটিশদের কাছে যখন জয় পেয়েছিল আফগানিস্তান, ১৯১৯ সালের সেই দিন থেকেই আফগানিস্তানের স্বাধীনতা দিবস হিসেবে চিহ্নিত করা হয় ১৯ অগস্ট দিনটিকে। আর প্রত্যেক বছর সেই ১৯ অগস্ট এই জালালাবাদ শহরের রাস্তায় ছড়িয়ে থাকে স্বাধীনতার রঙ। সেই স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালেই এ বার জালালাবাদে দেখা গেল এক অন্য ছবি।

জালালাবাদ শহরের রাস্তায় এ দিন একটি তালিবানের সাদা কালো পতাকা উড়তে দেখা গিয়েছিল। আর সেটা নামিয়ে আফগানিস্তানের পুরনো তেরঙা পতাকা লাগিয়ে দিয়ে আসে কেউ বা কারা। এরপরই পথচলতি মানুষকে লক্ষ্য করে গুলি চালাতে শুরু করে তালিবান। তাতেও থেমে থাকেনি দেশের মানুষ। তালিবানের গুলিকে তোয়াক্কা না করে আফগানিস্তানের জাতীয় পতাকা হাতে রাস্তায় নেমে পড়েন বহু মানুষ।

আফগানিস্তানের পতাকা অবশ্য বদলেছে বহুবার। ১৯১৯ অর্থাৎ আফগানিস্তান যখন স্বাধীনতা পায় সে বছর যে পতাকা উড়ানো হয়েছিল তাতে ছিল তিনটি রং লাল, কালো সবুজ। বলা হয়, কালো হল আফগানিস্তানের ইতিহাস, লাল হল আফগানিস্তানের উন্নয়ন আর সবুজ হলো কৃষির উন্নয়নের প্রতীক। পরে ১৯২৮ সালে একটু বদল আসে সেই পতাকায়। পতাকার তিনটি রঙের মাঝে লাগিয়ে দেওয়া হয় একটি ন্যাশনাল এমব্লেম। সেই এমব্লেমে রয়েছে একটি মসজিদ আর চারপাশের গমের প্রতীক। মূল ছবিটা একই রেখে পরে আরও কিছু পরিবর্তন আনা হয় পতাকায়। শেষবার ২০১৩ সালে পতাকায় বদল এসেছিল।

১৯১৯ অর্থাৎ ভারতের স্বাধীনতার অনেক আগেই মুক্ত হয়েছিল আফগানিস্তান। ব্রিটেনের সঙ্গে বেশ কয়েক মাসের যুদ্ধ শেষে ওই বছরের অগস্টে স্বাধীনতা পেয়েছিল আফগানিস্তান। ১৯৫০ কিংবা ১৯৬০ সালের আশেপাশে অর্থাৎ যখন ভারত সদ্য স্বাধীন হয়েছে তখন আফগানিস্তানের ছবিটা একেবারে অন্যরকম ছিল। বোরখা পরা তখন মহিলাদের জন্য ঐচ্ছিক। আফগান মহিলাদের পরণে তখন দেখা যেত মিনি স্কার্ট, পুরুষ বন্ধুদের সঙ্গে অবাধে গল্প করতেন তাঁরা। অথচ ১৯৭০ সালের পর থেকেই আস্তে আস্তে বদলে যেতে শুরু করল ছবিটা।১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত তালিবানি শাসন চলল আফগানিস্থানে। খাটো পোশাক তো দূরের কথা মুখ না ঢেকে আফগানিস্তানে রাস্তায় বেরোনোটাই যেন মহিলাদের জন্য হয়ে উঠল গল্প কথা। মাঝে কয়েক বছরের সামান্য স্বস্তি। আবার কাবুলের মসনদে পৌঁছে গিয়েছে তালিবান। তাই আবারও রক্ত, চাবুক আর গোলা বারুদের গন্ধ পাচ্ছে আফগানবাসী। তাই ১০২ বছর পরের এই স্বাধীনতা দিবসে উড়ল না তেরঙা। কাবুল বিমানবন্দরের ছবি বলে দিচ্ছে, আর এক নতুন স্বাধীনতা সংগ্রামে নেমেছে আফগানরা। আরও পড়ুন: তালিবানের সঙ্গে কি যোগাযোগ রাখছে ভারত? উত্তর দিলেন বিদেশমন্ত্রী