AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

তরুণদের হাতে ব্যাটন দিয়ে ৬ দশকের কাস্ত্রো পর্বের অবসান কিউবায়

প্রকৃত অর্থেই পরবর্তী প্রজন্মের হাতে যাচ্ছে কিউবার (Cuba) শাসক দলের দায়িত্ব।

তরুণদের হাতে ব্যাটন দিয়ে ৬ দশকের কাস্ত্রো পর্বের অবসান কিউবায়
ছবি-পিটিআই
| Updated on: Apr 17, 2021 | 6:31 PM
Share

হাভানা: সমাজতন্ত্রের পালে দিন বদলের হাওয়া। তবে শুধু দিন নয় বদলাচ্ছে নেতৃত্বও। ব্যাটন যাচ্ছে তরুণদের হাতে। বাংলা থেকে হাভানা সব জায়গায়ই একই প্রবণতা। দীর্ঘ ৬ দশক কাস্ত্রোদের কাঁধে ছিল কিউবার কমিউনিস্ট পার্টির দায়িত্ব। কিন্তু এ বার কার্যত পরবর্তী প্রজন্মের হাতে দায়িত্ব তুলে দিলেন রাউল কাস্ত্রো। কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষপদ থেকে অবসর নিতে চলেছেন ফিদেল কাস্ত্রোর ভাই। তাঁর জায়গায় কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষে বসছেন মিগুয়েল ডিয়াজ়-ক্যানেল। যা দেখে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রকৃত অর্থেই পরবর্তী প্রজন্মের হাতে যাচ্ছে কিউবার শাসক দলের দায়িত্ব। কারণ, ফিদেল বা রাউলের মতো উর্দিপরা অবস্থায় দেখা যায় না মিগুয়েল ডিয়াজ়-ক্যানেলকে। তিনি পছন্দ করেন বিটলসের মিউজিক আর আধুনিক প্রযুক্তি।

১৯৫৯ সালে কিউবা আন্দোলন। আমেরিকা সমর্থিত প্রেসিডেন্ট ফুলগেনসিও বতিস্তার বিরুদ্ধে ফিদেল কাস্ত্রোর লড়াই। দীর্ঘ লড়াইয়ে বতিস্তা সরকারের পতনের সঙ্গে সঙ্গেই তিক্ততার সম্পর্ক তৈরি হয় আমেরিকা-কিউবার মধ্যে। ১৯৬২ সালে কিউবার উপর এম্বার্গো জারি করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট কেনেডি। বুর্জোয়া শক্তির বিরুদ্ধে ফিদেলদের লড়াইয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ক্রমশ দূরত্ব তৈরি হয় কমিউনিস্ট কিউবার। তবে লড়াই থামাননি কাস্ত্রোরা। ফিদেলের সঙ্গে আমেরিকার নীতির যে লড়াই শুরু হয়েছিল, তার ঝাঁজ কমে রাউল কাস্ত্রোর সময়। ২০১৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও কিউবার প্রেসিডেন্ট ফিদেলের ভাই রাউল কাস্ত্রো ঘোষণা করেন, দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কে উন্নতি সাধনে তাঁরা কাজ করবেন।

২০১৫ সালে ‘স্টেট স্পনসর টেররিজ়মের’ তালিকা থেকে কিউবার নাম বাদ দেন বারাক ওবামা। ২০১৫ সালে ফের দুই দেশে দূতাবাস খোলে। সেই বছরই আমেরিকায় রাউল কাস্ত্রোর সঙ্গে বৈঠক করেন ওবামা। ২০১৬ সালে প্রথম কিউবায় আসেন বারাক ওবামা। এটাই ছিল ৯০ বছরে কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রথম কিউবা সফর। কিউবার মাটিতে দাঁড়িয়ে সেই বার বক্তব্য রাখেন ডেমোক্র্যাট বারাক ওবামা।

ক্রমেই যখন কিউবা-আমেরিকা সম্পর্কের বরফ গলছে তখনই নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে হোয়াইট হাউসে আসেন ট্রাম্প। বারাক ওবামার বিপরীত স্রোতে হেঁটে কিউবার উপর একাধিক বিধি নিষেধ আরোপ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফের অবনতি হয় দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের। আর শেষবেলায় কিউবাকে ‘সন্ত্রাসবাদী’ তকমা দিয়ে যান প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। আমেরিকার সঙ্গে কিউবার এই সম্পর্কের হাল-হকিকত তুলে ধরার কারণ একটাই সোভিয়েত ইউনিয়ন পতনের পর সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতির সামনে দাঁড়িয়ে আছে কিউবা। কারণ আর্থিক সঙ্কটের মুখে পড়েছে ফিদেলের দেশ। মূল্যবৃদ্ধি থেকে শুরু করে খাদ্যসামগ্রীর অভাব কিংবা নিত্য়প্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনতে লম্বা লাইন, একাধিক সমস্যা দেখা দিয়েছে সেখানে। সেই আবহে কমিউনিস্ট পার্টির সর্বোচ্চ পদ ছাড়ার কথা জানালেন রাউল কাস্ত্রো। হোয়াইট হাউসের সর্বেসর্বা এখন জো বাইডেন। বারাক ওবামার মতো কিউবার সঙ্গে সু-সম্পর্ক স্থাপনের একটা চেষ্টা হয়ত বাইডেন করবেন। এমনটা মনে করেন বিশ্লেষকরা। তার মধ্যেই কমিউনিস্ট পার্টির সর্বোচ্চ পদ ছাড়লেন কাস্ত্রো। তবে তাতে কিউবার শাসনতন্ত্রে কোনও প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন না বিশ্লেষক মহলের একাংশ।

আরও পড়ুন: মার্কিন মুলুকে হামলায় মৃত ৮ জনের মধ্যে ৪ জন শিখ, ‘যথা সম্ভব সাহায্যের’ আশ্বাস ভারতের