Time Traveler: ইরাক ধ্বংস হবে যুদ্ধে, ২০৩৬ থেকে টাইম ট্রাভেল করে এসে জানিয়েছিলেন জন! করেছিলেন আরও সাঙ্ঘাতিক ভবিষ্যদ্বাণীও
John Titor: জন টিটর। নিজেকে টাইম ট্রাভেলার বলে দাবি করতেন টিটর। জন বলতেন তিনি নাকি ২০৩৬ সাল থেকে টাইম ট্রাভেল করে অতীতে এসেছিলেন।

টাইম ট্রাভেলার কি সত্যিই হয়? বিজ্ঞানের এই অদ্ভুত ক্যারিস্মার বাস্তবতা নিয়ে আজও রয়েছে বহু সংশয়। কারণ সিনেমা বা গল্পের বইতে যতই টাইম মেশিন দেখানো হোক না কেন, বাস্তবে এমন কোনও মেশিন এখনও অবধি আবিষ্কার হয়েছে বলে জানা যায়নি।
তবু মাঝে মাঝে আমাদের চারপাশেই এমন কিছু ঘটনা ঘটে, যার সঠিক ব্যাখা খুঁজে পাওয়া যায় না। কখনও কেউ তাকে সুপার পাওয়ার বলে আখ্যা দেন কেউ আবার তাকেই ধরে নেন বিজ্ঞানের অগ্রগতি। আজ এই প্রতিবেদনে সেই রকম এক গল্প রইল আপনাদের জন্য।
সময়টা ২০০০ সাল। হঠাৎই এক জনের নাম ছড়িয়ে পড়ে গোটা বিশ্ব জুড়ে। জন টিটর। নিজেকে টাইম ট্রাভেলার বলে দাবি করতেন টিটর। জন বলতেন তিনি নাকি ২০৩৬ সাল থেকে টাইম ট্রাভেল করে অতীতে এসেছিলেন।
২০০০ সালের ২ নভেম্বর। ইন্টারনেটে একটি পোস্ট করেন জন। তিনি লেখেন, “আমি একজন টাইম ট্রাভেলার। ২০৩৬ সাল থেকে এসেছি। আমি ১৯৭৫ সালেও টাইম ট্রাভেল করে গিয়েছিলাম। একটি IBM ৫১০০ কম্পিউটার নিয়ে এসেছি। এইটুকু ম্যাসেজ পড়ে অদ্ভুত লাগছে না? মনে হচ্ছে, সেতো একজন পাগল নিজেকে টাইম ট্রাভেলার বলে দাবি করতে পারেন। তা বলে কি তা সত্যি হয়ে যায়? অবাক লাগার এই সবে শুরু।
জন নিজের সেই পোস্টে, পৃথিবীর ভবিষ্যত সম্পর্কে নানা ভবিষ্যদ্বাণী করেন। যার মধ্যে বেশ কিছু ভয়ানক, এবং বড় বিপদের ইঙ্গিত দেয়। বিশ্বব্যাপী এক বড় বিপর্যয়ের আভাস দিয়েছিলেন তিনি। জন জানান পারমাণবিক সংঘাত এব্বগ কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থা বড় বিপদ ডেকে আনবে সমগ্র বিশ্বে।
আবার জনের করা বেশ কিছু কথা সত্যি বলেও প্রমাণিত হয়েছে ইতিমধ্যেই। তার মধ্যে একটি হল ইরাকের বর্তমান পরিস্থিতি। জন ২০০০ সালের ইরাকে যুদ্ধের পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। এমনকি এও জানিয়েছিলেন যে বিধবংসী অস্ত্রের আঘাতে মর্মান্তিক অবস্থা আসতে চলেছে।
প্রযুক্তির বিষয়ে অদ্ভুত দূর দৃষ্টি ছিল জনের। উল্লেখযোগ্য ভবিষ্যদ্বাণীগুলির মধ্যে একটি ছিল IBM 5100, কম্পিউটারে একটি লুকানো বৈশিষ্ট্য। পরবর্তীতে ২০০৪ সালে, IBM সেই বৈশিষ্ট্যটি প্রকাশ করে। ৪ বছর আগেই সেই কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন জন। যার পরে সন্দেহ আরও বেড়েছে। তাহলে কি সত্যি টাইম ট্রাভেলার ছিলেন জন?
জন জানান, ভবিষ্যতে ফ্লোরিডায় মোতায়েন থাকা একটি সামরিক ইউনিটের অংশ তিনি। যদিও সেই সময়ে জনকে প্রায় ৯০ ভাগ লোক অবিশ্বাস করেছিলেন। জন অবশ্য তাতে অবিচলিত থেকেই জানিয়েছিলেন, তাঁর লক্ষ্য বিশ্বাস অর্জন করা নয়, বরং সমাজের ত্রুটিগুলির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা। তিনি বলেন, “আমার লক্ষ্য বিশ্বাস করা নয়। সম্ভবত আমার তোমাদের সবাইকে একটি ছোট্ট গোপন কথা বলা উচিত। ভবিষ্যতে কেউ তোমাদের পছন্দ করবে না। এই সময় অলস, স্বার্থপর, অজ্ঞ মানুষে ভরে উঠবে। সম্ভবত তোমাদের আমার সম্পর্কে কম চিন্তিত হওয়া উচিত এবং সে সম্পর্কে বেশি চিন্তিত হওয়া প্রয়োজন।”
কিছু ভবিষ্যদ্বাণী সত্যি হলেও, জনের সব দাবিই সত্য প্রমাণিত হয়নি। ২০০৪ সালের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গৃহযুদ্ধ শুরু হবে বলেও জানিয়েছিলেন জন। তিনি আরও বলেন যে, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে অদ্ভুত ম্যাড কাউ রোগ। বাতিল হয়ে যাবে অলিম্পিকও। যদিও সেসব কিছুই সত্যি হয়নি।
এরপরে ২০০১ সালে হঠাৎ করেই রহস্যজনক ভাবে ইন্টারনেট থেকে গায়েব হয়ে যান জন। কেউ কেউ মনে করেন ফ্লোরিডার বাসিন্দা দুই ভাই, ল্যারি এবং জন রিক হ্যাবার, বাস্তবে জন টোটোর নেপথ্যে ছিলেন। আজও জন টিটোর রহস্যের উদ্ঘাটন করতে পারেননি কেউই। সত্যি জন টাইম ট্রাভেলার ছিল কি না, তা নিয়েও রয়ে গিয়েছে ধন্দ।





