AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Los Angeles protests: রণক্ষেত্র লস অ্যাঞ্জেলস, ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন ট্রাম্পের, গুলিবিদ্ধ সাংবাদিক

Los Angeles protests: কেন শান্তিপূর্ণ একটা আন্দলন হিংসাত্মক হয়ে উঠল? আমেরিকাতে বহু আন্দলোন হয়েছে, কিন্তু কী এমন হল যে ন্যাশনাল গার্ড নামাতে হল? তাতেও শেষ নয়। ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি তিনি মেরিন কর্পস তৈরি রেখেছেন।

Los Angeles protests: রণক্ষেত্র লস অ্যাঞ্জেলস, ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন ট্রাম্পের, গুলিবিদ্ধ সাংবাদিক
প্রতিবাদে উত্তপ্ত লস অ্যাঞ্জেলসImage Credit source: Social Media
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 09, 2025 | 7:51 PM

গত তিনদিন ধরে কী চলছে লস অ্যাঞ্জেলসে? সপ্তাহান্ত জুড়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় মার্কিন মুলুকের সাদার্ন ক্যালিফর্নিয়ার এই শহর। হোমল্যান্ড সিউকিউরিটির অধীনস্থ ‘ICE’ বা ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন হাজার হাজার মানুষ। বিক্ষোভকারীদের সামলাতে অন্তত ২০০০ ন্যাশনাল গার্ড নামানো হয়েছে শহরজুড়ে। যদিও হোয়াইট হাউসের এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন ক্যালিফর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম।

কেন এমন অবস্থা হল?

সম্প্রতি লস অ্যাঞ্জেলস জুড়ে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট ব্যাপক ধরপাকড় চালায়। কয়েকশো অভিবাসী, যাঁদের কাছে প্রয়োজনীয় নথি নেই, তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। এই ধরপাকড়ের ফলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন মার্কিন মুলুকে বসবাসকারী অভিবাসী ও অভিবাসীদের অধিকার ও সুরক্ষা আন্দোলনের সমর্থকরা। প্রথমে ‘ICE’-র বিরুদ্ধে পোস্টার হাতে বিক্ষোভ দেখানো শুরু হয়। শহরের গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক ভবনের সামনে চলে শান্তিপূর্ণ ঘেরাও কর্মসূচি। অভিযোগ, শুরু থেকেই আন্দোলনকারীদের উপর দমনপীড়ন শুরু করে লস অ্যাঞ্জেলস পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের হটাতে কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়া হয়, এমনকী কয়েকজন আন্দোলনকারীকে পুলিশ রাস্তায় ফেলে পেটায় বলেও অভিযোগ ওঠে। শুক্রবার থেকেই পরিস্থিতির অবনতি হতে শুরু করে। স্থানীয় গভর্নর বাসিন্দাদের কাছে আবেদন করেন, আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার। কিন্তু আন্দোলনকারীরা সে সব মানতে নারাজ। কয়েকজন বিক্ষোভকারী রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা বেশ কয়েকটি চালকহীন ট্যাক্সিতে আগুন ধরিয়ে দেন।

আসলে ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার মার্কিন মসনদে বসার পরেই অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর ডাক দেন। তাঁর অভিযোগ, পূর্বসূরি বাইডেনের আমলে নাকি আমেরিকাতে রেকর্ড অভিবাসী ‘অনুপ্রবেশ’ করেছে। অবৈধ বা প্রয়োজনীয় নথি নেই, এমন অভিবাসীদের ফেরত পাঠাতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ করেন ট্রাম্প। বর্ডার প্রেট্রোলিং এজেন্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়, অবৈধ অভিবাসী দেখলে অবিলম্বে ফেরত পাঠাতে। কোনও আদালত বা অ্যাসাইলামের অনুমতির তোয়াক্কা করতে হবে না। অবৈধভাবে মার্কিন মুলুকে বসবাসকারীদের ফেরত পাঠানোর জন্য ফাস্টট্র্যাক ডিপোর্টেশনের বন্দোবস্ত করা হয়। অবৈধভাবে বসবাসকারীরা স্বেচ্ছায় যদি আমেরিকা ছেড়ে চলে যান, তাহলে তাঁদের মাথাপিছু এক হাজার ডলার ও যাতায়াতের খরচও ট্রাম্প প্রশাসন দেবে বলে ঘোষণা করা হয়।

এখন কী অবস্থা?

শুক্র থেকে রবিবারের মধ্যে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে প্রতিবাদের আগুন। শহরের রাস্তায় পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে, উল্টে ফেলে দেওয়া হয়। দোকানে অবাধে লুটপাট চালানো হয়। প্রতিবাদের খবর করতে গিয়ে আক্রান্ত হন একজন অস্ট্রেলিয়ান সাংবাদিক ও একজন ব্রিটিশ ফটোগ্রাফার। ওই সাংবাদিকের লাইভ সম্প্রচার চলাকালীন পুলিশের রবার বুলেট তাঁর পায়ে এসে লাগে। শহরের দিকে দিকে মুখোশ পড়ে, হাতে ট্রাম্প বিরোধী পোস্টার নিয়ে মানুষ রাস্তায় নেমে পড়েন। এসব দেখেশুনে, ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দেন, লস অ্যাঞ্জেলস পুলিশ যদি পরিস্থিতি আয়ত্ত্বে না পারে, তিনি সেনা ডাকবেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই হোয়াইট হাউসের তরফে ন্যাশনাল গার্ড নামানো হয়। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে রেগে আগুন হয়ে যান স্থানীয় গভর্নর। তাঁর ও তাঁর পুলিশের বক্তব্য, বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণই হচ্ছিল। কিন্তু ট্রাম্পের এই এক সিদ্ধান্তে ক্ষোভের আগুনে ঘি পড়তে পারে। ন্যাশনাল গার্ড নামানোর পরেই ট্রাম্প আবার ঘোষণা করে দেন, অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধে’ তিনি জিতে গেছেন।

যদিও ট্রাম্পের হুঁশিয়ারির পরেও আন্দোলন থামার নাম নেই। বরং তা আরও বেড়েই চলেছে। রবি ও সোমবার পর্যন্ত কয়েকশো প্রতিবাদীকে ট্রাম্প প্রশাসন গ্রেপ্তার করেছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে প্রশাসন ‘পেশাদার দাঙ্গাকারী’ বলে চিহ্নিত করেছে। বিক্ষোভ দমাতে ন্যাশনাল গার্ড নামানোর তীব্র বিরোধিতা করেছেন কমলা হ্যারিসের মতো রাজনীতিবিদরা যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে অভিবাসীদের অধিকার ও সুরক্ষা নিয়ে আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। লস অ্যাঞ্জেলসের রাস্তা এখন কার্যত আন্দোলনকারীদের দখলে। বড় বড় রাস্তার দু পাশে সারিবদ্ধভাবে পোড়া পুলিশের গাড়ি পড়ে রয়েছে। পুলিশ হামলা চালাতে এলে ওই পোড়া গাড়িগুলিকেই ব্যারিকেড হিসাবে ব্যবহার করছেন আন্দোলনকারীরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ছে শান্তিপূর্ণ বলে পরিচিত এই শহরের বাসিন্দাদের মারমুখী ছবি। এক আন্তর্জাতিক সংবাদসংস্থার তোলা ছবিতে, পোড়া পুলিশের গাড়ির উপরে পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে থাকা এক প্রতিবাদীর ছবি আন্দোলনের মুখ হয়ে উঠেছে। যদিও এই ছবির সমালোচনা করেছেন টেসলা কর্তা ইলন মাস্কের মতো অনেকেই। সরকারি সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি মেনে নেওয়া যায় না, লিখছেন অনেকে।

ইতিমধ্যে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই আক্রমণকারীদের চিহ্নিত করে পোস্টার জারি করেছে। পোস্টারে মুখোশ পরা হামলাকারীদের ধরিয়ে দিলে ৫০ হাজার ডলার পুরস্কারের ঘোষণা করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিজের হাতে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করলে ঠাঁই হবে জেলে, হুঁশিয়ারি এফবিআইয়ের। কিন্তু এসব হুঁশিয়ারির পরেও কার্যত অবাধে লুট চলছেই। লস অ্যাঞ্জেলসের মোবাইলের দোকান, খাবারের হোটেল, সুপারমার্কেটে লুটতরাজ চলছেই। ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন, মুখোশ পরে এরকম হিংসাত্মক কর্মসূচি চালিয়ে গেলে তিনি ‘মেরিন কর্পস’ বা সশস্ত্র সেনা ডাকবেন।