‘সিংহের গুহায় ঢুকেছে তালিবান, এ বার ফল ভুগবে’, পঞ্জশীর নিয়ে ফের হুংকার মাসুদ বাহিনীর

আহমেদ মাসুদের মুখপাত্র তথা প্রতিরোধ বাহিনীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রধান আলি মাইসাম নাজারি বলেন, "আহমেদ মাসুদ ও প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট আমিরুল্লাহ সালেহ-দুজনেই সুরক্ষিত রয়েছেন। তারা অন্য কোথাও যাননি, আফগানিস্তানেই রয়েছেন।"

'সিংহের গুহায় ঢুকেছে তালিবান, এ বার ফল ভুগবে', পঞ্জশীর নিয়ে ফের হুংকার মাসুদ বাহিনীর
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 09, 2021 | 2:40 PM

পঞ্জশীর: তালিবানের দাবিকে ফের ভুয়ো বলে দাবি করল প্রতিরোধ বাহিনী (National Resistance Front)। এ দিন পঞ্জশীরের প্রতিরোধ বাহিনীর তরফে জানানো হল, আহমেদ মাসুদ(Ahmed Massoud) এবং প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট আমিরুল্লাহ সালেহ (Amrullah Saleh) সুরক্ষিতই রয়েছেন এবং গোটা পঞ্জশীরও দখল করতে পারেনি তালিবান, ওই প্রদেশের অধিকাংশই এখনও প্রতিরোধ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

গত ১৫ অগস্ট অগস্ট কাবুল দখল নিয়ে গোটা আফগানিস্তানে নিজেদের শাসন জারি করলেও রাজধানীর উত্তরেই অবস্থিত পাহাড় ঘেরা পঞ্জশীর(Panjshir)-র দখল নিতে পারছিল না তালিবান বাহিনী। গত সপ্তাহের মঙ্গলবার থেকেই পঞ্জশীর চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলে তালিব বাহিনী। লাগাতার গুলি বর্ষণ ও সংঘর্ষ চালিয়ে অবশেষে চলতি সপ্তাহের সোমবার পঞ্জশীরের দখল নেয় তালিবান। গভর্নর হাউসে তালিবানি পতাকা উত্তোলন করে নিজেদের জয় ঘোষণা করে তালিবান। সূত্রের খবর, তাদের সাহায্য করেছে আল কায়েদা সহ অন্যান্য পাক জঙ্গি সংগঠনগুলি।

পঞ্জশীরের দখল নিলেও তা সাময়িক জয় বলেই মনে করেছিলেন অনেকে, কারণ এত সহজে পিছু হটার নয় প্রতিরোধ বাহিনী। তালিবানরা প্রতিরোধ বাহিনীর শীর্ষ নেতা আহমেদ মাসুদকে বন্দি বানিয়েছে বলে দাবি করলেও, রাতেই তিনি ফেসবুকে একটি অডিয়ো বার্তা দিয়ে জানান, প্রতিরোধ বাহিনী এখনও পঞ্জশীরেই উপস্থিত রয়েছে এবং তারা তালিবানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাবে।

দেশবাসী ও  আন্তর্জাতিক মহলের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে তিনি বলেছিলেন, “সকলেরই উচিত তালিবান বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যোগ দেওয়া। তালিবান বদলে গিয়েছে ঠিকই, তারা আরও হিংস্র হয়ে উঠেছে।” এরপরই জল্পনা শুরু হয়েছিল প্রতিরোধ বাহিনীর অবস্থান ও তালিবানের দাবি ঘিরে।

আহমেদ মাসুদের মুখপাত্র তথা প্রতিরোধ বাহিনীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রধান আলি মাইসাম নাজারি বলেন, “আহমেদ মাসুদ ও প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট আমিরুল্লাহ সালেহ-দুজনেই সুরক্ষিত রয়েছেন। তারা অন্য কোথাও যাননি, আফগানিস্তানেই রয়েছেন। ওনারা কখনওই নিজেদের মানুষদের ছেড়ে যাবেন না। সাধারণ মানুষও এ বার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে এবং কাবুলে বসে থাকা সন্ত্রাসবাদীদের পাল্টা জবাব দিচ্ছেন।”

তালিবানের পঞ্জশীর দখল নেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “পঞ্জশীরের পতন হয়নি। ৬০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ এখনও আমাদের হাতেই রয়েছে। তালিবানরা সিংহের গুহায় ঢুকেছে, এ বার ফল ভোগ করতে হবে তাদের।” পাকিস্তানেরও সমালোচনা করে নাজারি বলেন, “ওরা (তালিবান) সীমান্তের ও পার থেকেও সাহায্য পাচ্ছে।”

পঞ্জশীরের বর্তমান পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, “রসদের পরিমাণ ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে। তবে আমরাও হার মানতে রাজি নই। এই মানবতার সংকটের সময়ে আন্তর্জাতিক মহল অন্ধ হয়ে গিয়েছে, যা অত্যন্ত নিন্দনীয়।”

গতকালই প্রতিরোধ বাহিনীর তরফে জানানো হয়, তারা তালিবান সরকারকে মানে না। এই সরকার অবৈধ্য। প্রতিরোধ বাহিনীর সহ প্রতিষ্ঠাতা আহমেদ মাসুদ বলেন, “প্রতিরোধ বাহিনী একটি গণতান্ত্রিক ও বৈধ সরকার গঠন করবে যা সাধারণ মানুষের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হবে এবং আন্তর্জাতিক মহলের স্বীকৃতিও পাবে।”তিনি আরও যোগ করে বলেন, “তালিবানের অবৈধ্য সরকার গঠনেই স্পষ্টত বোঝা যাচ্ছে যে আফগানিস্তানের মানুষের শত্রু এই সরকার এবং আফগানিস্তান তথা গোটা বিশ্বের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য বিপদ।” যদিও এই সরকার কবে গঠন করা হবে এবং কাদেরই বা সমর্থনে সরকার গঠন করা হবে, সে সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি এখনও।

আরও পড়ুন: আন্দোলনকারীদের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে তালিবান, সরকার বিরোধী প্রচার রুখতে বন্ধ ইন্টারনেটও