আন্দোলনকারীদের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে তালিবান, সরকার বিরোধী প্রচার রুখতে বন্ধ ইন্টারনেটও

Internet Service disrupted in Kabul: তালিবান গোয়েন্দা বিভাগের তরফেই নয়া সরকারকে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তাদের দাবি, সোশ্যাল মিডিয়ায় তালিবান বিরোধী এই ধরনের আন্দোলন ও খবর প্রচারিত হওয়ায় নতুন সরকারের ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত হচ্ছে। 

আন্দোলনকারীদের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে তালিবান, সরকার বিরোধী প্রচার রুখতে বন্ধ ইন্টারনেটও
আফগানবাসীদের আন্দোলন। ছবি:PTI
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 10, 2021 | 9:03 AM

কাবুল: সরকার গঠন হতে না হতেই দেশজুড়ে শুরু হয়ে গিয়েছে সরকার বিরোধী আন্দোলন। নতুন সরকার যেভাবে একের পর এক ফতেয়া জারি করে সাধারণ মানুষের অধিকার খর্ব করছে, তাতে অসন্তুষ্ট আফগানবাসী (Afghans)। এ বার বিশেষত তালিবানের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন আফগান মহিলারা। সোশ্যাল মাধ্যমে তালিবানি অত্যাচার ও মহিলাদের প্রতিবাদ মিছিল ভাইরাল হতেই ইন্টারনেট পরিষেবা(Internet Service)-ই বন্ধ করে দিল তালিবানরা (Taliban)।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, কাবুলের একাধিক জায়গায় তালিবান বিরোধী আন্দোলন শুরু হতেই প্রাক্তন রাজধানী শহরের একাধিক জায়গায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মূলত সোশ্যাল মিডিয়া বা অনলাইন মাধ্যমেই এই আন্দোলনগুলির পরিকল্পনা ও প্রচার হওয়ায় আন্দোলনকারীদের জমায়েত রুখতে সরাসরি ইন্টারনেট পরিষেবাই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

সূত্রের খবর, তালিবান গোয়েন্দা বিভাগের তরফেই নয়া সরকারকে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তাদের দাবি, সোশ্যাল মিডিয়ায় তালিবান বিরোধী এই ধরনের আন্দোলন ও খবর প্রচারিত হওয়ায় নতুন সরকারের ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত হচ্ছে।

শুধু সরকার গঠন করলেই চলবে না, তালিবানের চাই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও। সেই কারণেই আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর থেকেই তালিবান নিজেদের নরমপন্থী ভাবমূর্তি গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। সেই ভাবমূর্তিতে আন্তর্জাতিক মহলকে বিশ্বাস করানোর কাজে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে সরকীরবিরোধী আন্দোলন। আপাতত রক্তক্ষয় না চাওয়ায় বিকল্প হিসাবে ইন্টারনেট সংযোগই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবারই বহু আফগান মহিলা সহ অন্তত ৭০ জন দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ দেখান। তাদের হাতে ছিল ব্যানার, ইসলামাবাদ তথা আইএসআই-এর বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছিলেন তারা। পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর প্রধান যে হোটেলে ছিলেন, সেই সেরেনা হোটেলের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছিল মিছিল। এমন সময়ই আন্দোলনকারীদের সরাতে শূন্যে গুলি চালায় তালিবা। ঘটনায় এক শিশু সহ বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়।

এদিকে, দেশজুড়ে তালিবান বিরোধী আন্দোলন যে শুরু হয়েছে, তাতে রাশ টানতেই নতুন সরকারের তরফে আন্দোেলন বা প্রতিবাদ কর্মসূচি নিয়েও নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। তালিবানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, সরকার যে মিছিল বা প্রতিবাদ কর্মসূচিগুলির অনুমতি দেবে, একমাত্র সেগুলিই করা যাবে। কবে, কখন, কোথায় মিটিং-মিছিল হবে, তা আগে থেকে সরকারকে জানাতে হবে। একইসঙ্গে মিছিলে কী কী স্লোগান দেওয়া হবে, তাও জানাতে হবে। যদি তালিব সরকার সেই স্লোগানে অনুমতি দেয়, তবেই সেই স্লোগান অনুসরণ করা যাবে। যদি কোনও নির্দেশ অমান্য করা হয়, তবে কড়া শাস্তির মুখে পড়তে হবে।

সুপ্রিম নেতা আখুন্দজাদা জানিয়েছেন, শরিয়া আইন অনুসরণ করেই যাবতীয় কার্যকলাপ পরিচালনা করা হবে। অন্যদিকে, নতুন শিক্ষামন্ত্রী শেখ মৌলবি নুরউল্লাহ মুনির বলেছেন, পিএইচডি-স্নাতকোত্তর ডিগ্রির কোনও মূল্য় নেই। সাংস্কৃতিক কমিশনের ডেপুটি প্রধান আহমাদুল্লাহ ওয়াসিকও নয়া নির্দেশিকা ঘোষণা করে বলেছেন, “মহিলাদের খেলাধুলোর কোনও প্রয়োজন নেই। এতে শরীর প্রদর্শন হয়, যা আইন বিরুদ্ধ”।