Iran: ট্রাম্পের মুখে ঝামা ঘষল ইরান? ফোরডো পরমাণুঘাঁটিতে নতুন করে নির্মাণকাজের ছবি ধরা পড়ল স্যাটেলাইটে
Iran: ফোরডো পরমাণুকেন্দ্রে জোর তৎপরতায় নির্মাণকাজ চলছে। ভারী ভারী মাটি কাটার মেশিন, ক্রেন, বুলডোজার এমনকী লরিও চলাচল করছে। নতুন রাস্তা তৈরি হচ্ছে। ইরানের যে তিনটি পরমাণুঘাঁটিতে মার্কিন বায়ুসেনা বাঙ্কার বাস্টার বোমা ফেলেছিল, তার মধ্যে একটি ফোরডো। এই ঘাঁটিতে বোমা ফেলে ইরানের পারমাণবিক গবেষণাকে (পড়ুন বোমা তৈরির অভিযোগ) সম্পূর্ণ স্তব্ধ করে দেওয়ার দাবি করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

তেহরান: আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন খোদ রাষ্ট্রসঙ্ঘের পরমাণু নজরদারি বিভাগের প্রধান। বলেছিলেন, মার্কিন হানাতে মোটেও ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়নি। বড়জোর মাসখানেক! তারপরই ইরান ফের তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধিকরণের কাজ শুরু করে দিতে পারে। IAEA প্রধান রাফাল গ্রাসির সেই আশঙ্কাকে সত্যি প্রমাণ করে, ইরানের পরমাণুকেন্দ্রে জোর তৎপরতার নতুন ছবি প্রকাশ্যে চলে এল। নয়া স্যাটেলাইট ইমেজে দেখা যাচ্ছে, ইরানের পরমাণুকেন্দ্রে ফের ভারী মেশিন, গাড়ি ঢুকছে-বেরোচ্ছে।
ম্যাক্সারের এই নতুন স্যাটেলাইট ছবি ইরানের ‘দুর্ভেদ্য’ ফোরডো পরমাণুঘাঁটির। এই কেন্দ্রে ইরান তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধিকরণের কাজ জোরকদমে চালাত। নতুন এই ছবিটি ২৯ জুনের। মানে, মার্কিন হামলার পরে। দেখা যাচ্ছে, এই কেন্দ্রে জোর তৎপরতায় নির্মাণকাজ চলছে। ভারী ভারী মাটি কাটার মেশিন, ক্রেন, বুলডোজার এমনকী লরিও চলাচল করছে। নতুন রাস্তা তৈরি হচ্ছে। ইরানের যে তিনটি পরমাণুঘাঁটিতে মার্কিন বায়ুসেনা বাঙ্কার বাস্টার বোমা ফেলেছিল, তার মধ্যে একটি ফোরডো। এই ঘাঁটিতে বোমা ফেলে ইরানের পারমাণবিক গবেষণাকে (পড়ুন বোমা তৈরির অভিযোগ) সম্পূর্ণ স্তব্ধ করে দেওয়ার দাবি করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও ট্রাম্পের এই দাবি নস্যাৎ করে দেয় তেহরান। তেহরান জানায়, কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বটে, কিন্তু পাহাড়ের কোলে মাটির নিচের এই ঘাঁটিটি মোটেই মার্কিন হানায় মাটিতে মিশে যায়নি। তেহরান যে স্রেফ ফাঁকা বুলি ছাড়েনি সেটা ম্যাক্সারের নতুন স্যাটেলাইট ইমেজেই স্পষ্ট হয়ে গেল।
ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির আগে আমেরিকা সরাসরি দুই দেশের সংঘাতে জড়িয়ে ইরানের তিনটি পরমাণু ঘাঁটি নাতানজ, ইশফাহান ও ফোরডোতে হামলা চালায়। পরমাণু ঘাঁটিতে হামলা নিয়ে নিজের ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লেখেন, ‘ইতিহাসের অন্যতম সফল সেনা অভিযান। ইরানের পরমাণুঘাঁটিগুলি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।’ এমনকী যে বি-২ বোমারু বিমানের চালকরা এই অপারেশন চালিয়েছেন, তাদের ডেকে হোয়াইট হাউসে রীতিমতো সংবর্ধনা দেন। রাতারাতি জবাব দেয় ইরানি সেনাও। কাতার-সহ মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক মার্কিন সেনাঘাঁটিতে মিসাইল ছোড়ে তেহরান। আশঙ্কা তৈরি হয়, এই বুঝি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ লাগল। শেষমেশ অবশ্য কাতারের দৌত্ম্যেই সংঘৰ্ষবিরতিতে রাজি হয় বিবাদমান ইরান ও ইজরায়েল। পরে দুপক্ষই দাবি করে, জয় তাদেরই হয়েছে। আমেরিকা ও ইজরায়েল একযোগে দাবি করে, ইরানের পরমাণু বোমা তৈরির দুঃস্বপ্নকে চিরতরে ঘুম পাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নতুন এই স্যাটেলাইট ছবি যে ফের ইজরায়েল ও আমেরিকার মাথাব্যথা বাড়াবে- সে কথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

