Pakistan Election 2024: পাকিস্তানেও কি লাগল মোদীর হাওয়া, ছুঁড়ে ফেলল পরিবারতন্ত্রের রাজনীতিকে?

Pakistan Election 2024: কংগ্রেস-সহ যাদের বিরুদ্ধে পরিবারতন্ত্রের রাজনীতির অভিযোগ করে বিজেপি, গত কয়েকটি নির্বাচনে সেই সমস্ত দলেরই শক্তি ব্যাপকভাবে কমেছে। এবার কি ভারতের এই পরিবারতন্ত্রকে ছুঁড়ে ফেলার প্রবণতা ছড়িয়ে গেল পাকিস্তানেও? নরেন্দ্র মোদীর আহ্বানে সাড়া দিল পাকিস্তানও? না-হলে কেন পিপিপি এবং পিএমএল(এন) দলের ফল প্রত্যাশা মতো হল না?

Pakistan Election 2024: পাকিস্তানেও কি লাগল মোদীর হাওয়া, ছুঁড়ে ফেলল পরিবারতন্ত্রের রাজনীতিকে?
পাকিস্তানের রাস্তায় ইমরান কানের পোস্টারImage Credit source: PTI
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 10, 2024 | 3:41 PM

ইসলামবাদ: ভারতে গত কয়েক বছর ধরে ব্যাপকভাবে চর্চায় রয়েছে পরিবারতন্ত্রের রাজনীতি। নরেন্দ্র মোদী-সহ বিদেপি নেতারা বারংবার পরিবারতন্ত্রের রাজনীতির বিরোধিতা করেছেন। অতি সম্প্রতি সংসদের বাজেট অধিবেশনেও, পরিবারতন্ত্র যে গণতন্ত্রের জন্য কত বড় বিপদ, তা ব্যাখ্যা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কংগ্রেস-সহ যাদের বিরুদ্ধে পরিবারতন্ত্রের রাজনীতির অভিযোগ করে বিজেপি, গত কয়েকটি নির্বাচনে সেই সমস্ত দলেরই শক্তি ব্যাপকভাবে কমেছে। এবার কি ভারতের এই পরিবারতন্ত্রকে ছুঁড়ে ফেলার প্রবণতা ছড়িয়ে গেল পাকিস্তানেও? নরেন্দ্র মোদীর আহ্বানে সাড়া দিল পাকিস্তানও?

পাক নির্বাচনের ফলাফলই এই প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। নির্বাচনের ফলাফল এখনও প্রকাশ হচ্ছে। অল্প কয়েকটি আসনের চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করা হয়েছে। দেখা যাচ্ছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছে ইমরান খানের পিটিআই এবং নওয়াজ শরিফের পিএমএল(এন) ও বিলাবল ভুট্টোর পিপিপি দলের মধ্যে। তবে, ভোট গণনার প্রবণতা বলছে শেষ পর্যন্ত বাজিমাত করতে পারেন ইমরানই। অথচ, ইমরান খান এবারের ভোটে পুরো উড়ে যাবেন বলে মনে করা হয়েছিল। দীর্ঘদিন পর ভোটকে কেন্দ্র করে দেশে ফিরেছিলেন নওয়াজ শরিফ। তাঁর প্রতি ভরপুর সমর্থন রয়েছে পাকিস্তানি সেনার। একের পর এক মামলা হয়েছে ইমরান খানের বিরুদ্ধে। তাঁর জায়গা হয়েছে কারাগারে। তাঁর দলের নির্বাচনে সলড়ার অধিকার পর্যন্ত কেড়ে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু, তারপরও ইমরানকে ধুয়ে মুছে সাফ করা যায়নি। আর এখানেই প্রশ্নটা উঠছে, তাহলে কি সত্যিই পাকিস্তানও আর গ্রহণ করছে না পরিবারতন্ত্রকে?

কাকে বলে পরিবারতন্ত্র? সম্প্রতি লোকসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছেন, যদি কোনও পরিবার থেকে নিজস্ব দক্ষতায় এবং জনমত মেনে একাধিক সদস্য রাদনীতিতে আসে, তাহলে অসুবিধা নেই। তাদের বিরুদ্ধে পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ তোলা যায় না। কিন্তু, যে দলগুলি একটিই পরিবার চালায়, তাদের সব সিদ্ধান্ত পরিবার থেকেই নেওয়া হয়, পরিবারের বাইরে অন্য কাউকে সুযোগ দেওয়া হয় না, সেই দলগুলিকেই পরিবারতন্ত্রের রাজনীতি করা অভিযোগে বিদ্ধ করেছেন তিনি।

এবার নওয়াজ শরিফের দলের কথা ধরা যাক। দলের প্রধান নেতা নওয়াজ শরিফ। ২০১৭ সালে যখন তাঁকে দুর্নীতির দায়ে জেলে পাঠানো হয়েছিল, সেই সময় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন তাঁর ভাই শেহবাজ শরিফ। দলের দেখভালের দায়িত্ব ছিল, মেয়ে মরিয়ম শরিফের উপর। অর্থাৎ, দল ও সরকারের নিয়ন্ত্রণ শরিফ পরিবারেই আবদ্ধ রাখা হয়েছে। অন্যদিকে ভুট্টো-জারদারি পরিবারকে তো তুলনা করা যেতে পারে ভারতের নেহরু-গান্ধী পরিবারের সঙ্গে। জুলফিকার আলি ভুট্টো, বেনজির ভুট্টো পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। বেনজিরের স্বামী আসিফ আলি জারদারি হয়েছিলেন পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি। এরপর বিদেশমন্ত্রী হয়েছেন বিলাবল ভুট্টো। অর্থাৎ, দুটি দলই পরিবারতন্ত্রে ডুবে আছে।

উল্টোদিকে, ইমরান খানের দলে তাঁর পরের বড় নেতা হলেন প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী কুরেশি। তিনি জেলে যাওয়ার পর, দলের নেতৃত্বে রওহর খান নামে এক অনামী আইনজীবীকে এনেছেন ইমরান। তাঁর দুই পুত্রই ইংল্যান্ডে থাকেন, পাকিস্তানের রাজনীতিতে এখনও তাঁদের কোনও আগ্রহ নেই। পরিবারতন্ত্রের বোঝামুক্ত বলেই কি ইমরান তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ ওঠার পরও তাঁর জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে সক্ষম হলেন? পরিবারতন্ত্রের রাজনীতির সঙ্গে ওতোপ্রোতভাবে জড়িত দুর্নীতির প্রশ্ন। পাকিস্তানকে দুর্নীতিমুক্ত করারই স্লোগান দিয়েছেন ইমরান। তাই কি পরিবারতন্ত্রের রাজনীতি করা দুই দলকে বহুমত দিল না পাকিস্তান?