মস্কো: একদিন আগেই মস্কোয় হামলা চালিয়েছে ইউক্রেনীয় ড্রোন। যার জেরে সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিতে হয়েছিল মস্কো বিমানবন্দর। ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ায় পাল্টা আক্রমণের কথা বলেছেন। এই অবস্থায় ফের একবার ‘পারমাণবিক হামলার’ হুমকি দিলেন প্রাক্তন রুশ প্রেসিডেন্ট তথা পুতিন ঘনিষ্ঠ নেতা দিমিত্রি মেদভেদেভ। তিনি সাফ জানিয়েছেন, কিয়েভ যে পাল্টা হামলা চালাচ্ছে, তা সফল হলে মস্কোকে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতেই হবে। বর্তমানে পুতিন প্রশাসনে নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান পদে আছেন মেদভেদেভ। রবিবার (৩০ জুলাই) সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি জানিয়েছেন, ইউক্রেনীয় হামলার মুখে রুশ সেনাদের যদি পিছু হটতে হয়, তাহলে রাশিয়াকে পাল্টা পরমাণু হামলার পথে হাঁটতেই হবে। এই বিষয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের ‘ডিক্রি’ রয়েছে বলে জানিয়েছেন মেদভেদেভ।
মেদভেদেভ বলেছেন, “ন্যাটোর সমর্থনে ইউক্রেন যে আক্রমণ চালাচ্ছে, ধরুন যদি তা সফল হয় এবং তারা আমাদের মাটির কোনও অংশ দখল করে, তাহলে আমরা রুশ প্রেসিডেন্টের এক ডিক্রি অনুসারে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে বাধ্য হব। এছাড়া আর কোনও উপায় থাকবে না। তাই আমাদের শত্রুদের উচিত, যাতে আমাদের যোদ্ধারা সফল হয়, তার জন্য প্রার্থনা করা। গোটা বিশ্বে যাতে পরমাণু যুদ্ধ শুরু না হয়, তা তাদেরকেই নিশ্চিত করতে হবে।” প্রসঙ্গত, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর, রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন এই ডিক্রি জারি করেছিলেন। এই ডিক্রি অনুযায়ী, রাশিয়ার অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়লে সেই আগ্রাসনের জবাবে রুশ সেনা গণবিধ্বংসী অস্ত্র ব্যবহার করতে পারবে। এই ডিক্রির কথাই উল্লেখ করেছেন মেদভেদেভ।
তবে, কাল্পনিক পরিস্থিতির ভিত্তিতে মেদভেদেভ এর আগেও একাধিকবার বিবৃতি দিয়েছেন। এর আগে তিনি বলেছিলেন, ২০২৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গৃহযুদ্ধ শুরু হবে। চলমান যুদ্ধে রাশিয়া হেরে গেলে, ‘পারমাণবিক যুদ্ধ’ শুরুর কথা তিনি আগেও বলেছিলেন। এমনকি চলতি বছরের শুরুতে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার হুমকিও দিয়েছিলেন তিনি। চলাফেরার পথে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের বিচারপতিদের আকাশের দিকে নজর রাখার পরামর্শ দেওয়ার মাধ্যমে প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়েছিলেন। টেলিগ্রামে তিনি লিখেছিলেন, “সবাইকে ঈশ্বর এবং ক্ষেপণাস্ত্রের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। উত্তর সাগরে কোনও রশ যুদ্ধজাহাজ থেকে ছোড়া হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র হেগের আদালত ভবনে কীভাবে আঘাত করবে, আমি তা বেশ কল্পনা করতে পারি।” সম্প্রতি, রাশিয়ার বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ শুরু করেছে ইউক্রেন। রাশিয়া এখনও পর্যন্ত ইউক্রেনের যে যে অংশ দখল করেছে, সেই অংশগুলি পুনরুদ্ধার করতেই এই আক্রমণ বলে জানিয়েছেন জেলেনস্কি। তবে এখনও পর্যন্ত এই পদক্ষেপটি খুব একটা ফলপ্রসূ হয়নি।