তালিবানি বুটের শব্দ শুনেই গোপন নথি ফেলে পালিয়েছে কর্মীরা! প্রশ্নের মুখে দূতাবাসের আফগান কর্মীদের নিরাপত্তা

টাইমস সংবাদপত্রে এই খবর প্রকাশ পাওয়ার পরই ব্রিটেনের বিদেশমন্ত্রকের তরফে খবরের সত্যতা স্বীকার করে নেওয়া হয়। মুখপাত্র বলেন, "কাবুলের পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করার পরই আমাদের দূতাবাস খালি করার কাজ শুরু করা হয়েছিল। সমস্ত গোপন নথি নষ্ট করার যথাসাধ্য প্রচেষ্টা করা হচ্ছে।"

তালিবানি বুটের শব্দ শুনেই গোপন নথি ফেলে পালিয়েছে কর্মীরা! প্রশ্নের মুখে দূতাবাসের আফগান কর্মীদের নিরাপত্তা
এভাবেই পড়ে ছিল যাবতীয় গোপন নথি। ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 27, 2021 | 10:45 AM

কাবুল: তালিবান(Taliban)-দের হাতে চলে গিয়েছে সমস্ত গোপন তথ্য, এমনটাই আশঙ্কা ব্রিটেনের বিদেশ মন্ত্রকের (UK Foreign Ministry)। নথিপত্র নিয়ে পালিয়ে আসার চেষ্টা করলেও তার আগেই কাবুলে ব্রিটিশ দূতাবাসে (UK Embassy) তালিবানিরা হামলা চালায়। প্রাণ বাঁচাতে দূতাবাসের কর্মীরা সমস্ত কাগজপত্র ফেলেই পালিয়ে আসেন, এমনটাই জানিয়েছে দ্য টাইমস সংবাদপত্র।

গত সপ্তাহোর রবিবার তালিবানরা কাবুলের দখল নেওয়ার পরই আফগান ও মার্কিন সেনাকে মদতদাতা এবং অন্যান্য দেশের দূতাবাসের কর্মরত আফগান নাগরিকদের প্রাণ সংশয় দেখা দিয়েছে। তালিবানিদের হাতে তাদের পরিচয় পৌঁছে গেলেই সোজা বাড়িতে হানা দিয়ে খুন বা চরম শাস্তি দেওয়া হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেই কারণেই সমস্ত দেশের দূতাবাস থেকেই যাবতীয় গোপন নথি সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

আফগান সরকারের পতনের পরই মার্কিন দূতাবাসে বিশেষ বাহিনী পাঠিয়ে যাবতীয় গোপন নথি সরিয়ে ফেলা হয় ও বাকি তথ্য আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়। দূতাবাসে যে সমস্ত আফগান নাগরিক কাজ করতেন, তাদেরও উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। একইভাবে ভারতও দূতাবাসের আফগান কর্মীদের উদ্ধার করে আনা হয়েছে। কান্দাহারের দূতাবাস ফাঁকা করে দেওয়ার পরই তালিবানিদের সেখানে হানা দেওয়া এবং গোপন নথির খোঁজে চিরুনি তল্লাশির খবরও জানা গিয়েছে সম্প্রতিই।

এই পরিস্থিতিতে ব্রিটেনের তরফেও দূতাবাস খালি করার আগে যাবতীয় গোপন নথি সরিয়ে আনা হচ্ছিল। এরমধ্যে দূতাবাসে কর্মরত আফগান নাগরিকদের পরিচয় সংক্রান্ত যাবতীয় নথি ছিল। কিন্তু দূতাবাসে তালিবানরা প্রবেশ করেছে, এ কথা বুঝতে পেরেই দূতাবাসের কর্মীরা যাবতীয় নথি মাটিতে ফেলেই পালিয়ে যায়। তালিবানদের হাতে সেই তথ্য চলে গিয়েছে বলেই জানা গিয়েছে।

টাইমস সংবাদপত্রে এই খবর প্রকাশ পাওয়ার পরই ব্রিটেনের বিদেশমন্ত্রকের তরফে খবরের সত্যতা স্বীকার করে নেওয়া হয়। মুখপাত্র বলেন, “কাবুলের পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করার পরই আমাদের দূতাবাস খালি করার কাজ শুরু করা হয়েছিল। সমস্ত গোপন নথি নষ্ট করার যথাসাধ্য প্রচেষ্টা করা হচ্ছে।”

মঙ্গলবার টাইমস সংবাদপত্রের প্রতিনিধি সাতজন আফগান নাগরিকের পরিচয়পত্র খুঁজে পায়। সেই সময়ই দূতাবাসের ভিতরে ঘুরে বেড়াচ্ছিল তালিবান বাহিনী। তিনজন আফগানকর্মী ও তাদের পরিবারের আটজন সদস্যদের যাবতীয় তথ্য ব্রিটেনের বিদেশমন্ত্রকের অফিসে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ব্রিটিশ মুখপাত্র বলেন, “ওই তিন পরিবারকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।”

তালিবানরা সকলকে ক্ষমা করে দেওয়ার ঘোষণা করলেও তাদের মুখের কথা ও কাজের মধ্যে আকাশ পাতাল ফারাক দেখা যাচ্ছে বিগত সপ্তাহ থেকেই। বাড়ি বাড়ি গিয়ে আফগান সেনা, সরকারী কর্মী, সাংবাদিকদের খোঁজ করা, তাদের আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া এবং গোটা পরিবারকে খুন করার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। মহিলাদের ক্ষেত্রেও ফতেয়া জারি করা হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া অবধি মহিলাদের গৃহবন্দি থাকার নির্দেশই দেওয়া হয়েছে।  আরও পড়ুন: ‘সারারাত কেবল আর্তনাদ ও কান্নাই শুনেছি’, কাবুলে হামলার পরই উদ্বেগে আটকে পড়া ২০ ভারতীয়