রাজনৈতিক অস্থিরতার কথা বাদ দিলেও আর্থিকভাবেও বিরাট চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে বাংলাদেশের তদারকি সরকার। প্রবল আর্থিক সঙ্কটের মুখে আইএমএফ থেকে ঋণ নিয়েছিল বাংলাদেশ। ফেব্রুয়ারির ১০ তারিখ চলতি ঋণের চতুর্থ ও শেষ কিস্তি পাওয়ার কথা। কিন্তু নির্দিষ্ট দিনে আইএমএফের টাকা আসছে না। চলতি ঋণের বাইরে আরও ৭০ কোটি ডলার ঋণ চেয়েছিল তদারকি সরকার। সেই টাকাও আপাতত বিশ বাঁও জলে। বাংলাদেশের মিডিয়ায় দেশের সরকার দাবি করছে, টেকনিক্যাল কারণে ঋণের কিস্তি পেতে কিছুটা দেরি হবে।
সূত্রের খবর, এটা নির্ভেজাল মিথ্যা। আসল কারণটা আলাদা। ঋণের জন্য আইএমএফ যে শর্ত দিয়েছিল তা পুরোপুরি পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ। তদারকি সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনুস আইএমএফের কাছে আবেদনও করেছিলেন – কিছুটা বাড়তি সময় দেওয়ার জন্য। আইএমএফ কান দেয়নি। মার্চে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে বৈঠক করবে আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার। সেখানে বাংলাদেশ, নতুন পরিকল্পনা জমা দিলে তারপর ঋণের কিস্তি ছাড়া নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে আইএমএফ।
প্রসঙ্গত, আইএমএফের থেকে ঋণ পাওয়ার শর্ত বেশ কড়া। সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারকে প্রচুর কর চাপাতে হয়। বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডারও বাড়াতে হয়। সোজা কথায় ঋণ শোধ করার টাকাটা সংশ্লিষ্ট দেশ তুলতে পারছ কিনা, সেটাই আসল কথা। আইএমএফ আর অন্য কিছু নিয়ে মাথা ঘামায়-না। সেই শর্ত বা চাপ ছিল বলেই ইউনুস সরকার কিছুদিন আগে ভ্যাটের হার বাড়িয়েছে। বাংলাদেশে এখন এমনিতেই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কার্যত নাগালের বাইরে। ভ্যাট বাড়ানোর পর দাম আরও ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যায়। তারপরেও আইএমএফের শর্ত পূরণ করা যায়নি। অবস্থা এমন হয়েছিল যে সরকারের রোজকার খরচ চালানোও কঠিন হয়ে পড়ে। অন্তত কয়েকদিন আগে পর্যন্তও সেই অবস্থাই ছিল। আর ঠিক সেখানেই চিনের এন্ট্রি। একাধিক আর্জি নিয়ে চিনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মহম্মদ ইউনুস। সূত্রের খবর, বাংলাদেশের ঋণ পুর্নগঠনের আর্জি মানতে নীতিগতভাবে রাজি শি জিনপিংয়ের দেশ। সুদের হার কম করা, কয়েকটি ঋণের মেয়াদ বাড়ানো ও নতুন করে ঋণ মঞ্জুর করতে রাজি হয়েছে চিন। ফেব্রুয়ারিতে নতুন চুক্তি হয়ে যেতে পারে। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ সঙ্কট, বাংলাদেশে পট-পরিবর্তনে চিন যে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকবে না তা আগেই বলেছিলেন অনেক আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞই। সুযোগ পেলেই যে সূচ হয়ে ঢুকে ফাল হয়ে বেরনোর চেষ্টা করবে। আশঙ্কা করেছিলেন অনেকেই। এবার বাস্তবেও যেন তারই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে।