কলকাতা: ভরা উত্সবের মরশুমেও জল গড়াচ্ছে অন্য খাতে। ফেস্টিভ ট্র্যাভেলকে ছাপিয়ে ট্রফি জিততে চলেছে বিশ্বকাপ ক্রিকেট। যা প্রবণতা সারা দেশে তাতে দেখা যাচ্ছে ছুটিতে বেড়াতে যাওয়ার বাজার তেমন জমেনি। বরং ক্রিকেট বিশ্বকাপ দেখতে যাওয়ার উত্সাহ। আর সেটাকে ঘিরে বিক্রিবাটা তুলনায় অনেক বেশি। দেশের তিনটে বড় ট্র্যাভেল পোর্টাল বলছে গত ৩ মাসে যত প্লেন ও ট্রেনের টিকিট বিক্রি হয়েছে, যত হোটেল বুকিং হয়েছে তার ৬৭ শতাংশই হয়েছে ক্রিকেটে ম্যাচের জন্য। যেসব শহরে ভারতের ম্যাচ রয়েছে সেসব শহরে দেশের সবপ্রান্ত থেকেই ভিড় এসে উপচে পড়ছে। এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে এগিয়ে আমেদাবাদ। ১৪ অক্টোবর ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের আগের দিন ৩৫ হাজার দর্শক আমেদাবাদ বিমানবন্দরে নামেন। ১৩ থেকে ১৫ অক্টোবর শহরের সব হোটেল বুকড ছিল।
একই ছবি কলকাতারও। ইডেনেও দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ভারতের খেলা দেখতে বাইরে থেকে এসেছিলেন প্রায় ৩৫ হাজার দর্শক। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ভারতের সেমিফাইনাল খেলার সম্ভাবনা বেশি। তবে প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তান হলে সেই খেলা হবে ইডেনে। এখনও পর্যন্ত এটাই ঠিক আছে। আপনাদের বলি বিশ্বকাপে শেষ চারের লড়াইয়ের পুরো ছবিটা এখনও স্পষ্ট না হলেও কলকাতা ও মুম্বইয়ে হোটেল আর বিমানের টিকিট প্রায় শেষ। একটা অনলাইন ট্র্যাভেল পোর্টাল জানাচ্ছে অক্টোবর-নভেম্বরে তাদের মাধ্যমে বিমান-হোটেল বুকিংয়ের ৫৩ শতাংশই হয়েছে বিশ্বকাপের জন্য। তুলনায় মাত্র ২৫ শতাংশ বুকিং হয়েছে ছুটিতে পরিবার নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার জন্য। আর বাকিটা অফিসিয়াল ও পার্সোনাল ট্র্যাভেল।
ট্রেন ও প্লেনের ক্ষেত্রে মোটামুটি একই ছবি। আরেকটা অনলাইন ভ্রমণ সংস্থা আবার বলছে উত্সবের মরশুমে ৭-১০ দিন ঘুরতে যাওয়ার বদলে অনেক পরিবারই তিন বা চারদিনের ক্রিকেট ট্যুরিজমে আগ্রহী। মানে কোনও একটা শহরে গিয়ে খেলা দেখা। তারপর সেই শহর ঘুরে দেখে বাড়ি ফেরা। শহরের এক নামী পর্যটন সংস্থার কর্তা তো বলছেন, বাঙালি পুজোয় ঘুরতে যাওয়া ছেড়ে পরিবার নিয়ে ক্রিকেট খেলা দেখতে আমেদাবাদ-মুম্বই ছুটছে। এ জিনিস মশাই জন্মে দেখিনি। তাঁর কথায় বিশ্বকাপ শুরুর আগে এমনটা ভাবা যায়নি। ভারতের পরপর জয় ছবিটা পুরো বদলে দিয়েছে। এখন তো লোকে মাঠে ঢুকতে পারবে না জেনেও খেলার দিন ওই শহরে যাওয়ার টিকিট চাইছে। শুধু স্টেডিয়ামের বাইরের ফিলটা এনজয় করার জন্য। অনেকেই বলছেন, এইভাবে স্টেডিয়ামে না ঢুকতে পেরেও বাইরে থেকে ম্যাচের ফিল নেওয়ার ব্যাপারটা এতকাল শুধু ফুটবল বিশ্বকাপেই দেখা গিয়েছে। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে বা লা-লিগায়। এবার আমাদের দেশে স্পোর্টস কালচারের মধ্যেও তা ঢুকে পড়ছে। এতে নতুন করে আশার আলো দেখছে পর্যটন সংস্থাগুলি।