![Budget 2023: হাসি ফুটল মুখে, বাজেট ২০২৩ থেকে কী পেলেন মধ্যবিত্তরা?](https://images.tv9bangla.com/wp-content/uploads/2023/02/Budget-for-Middle-Class.jpg?q=20&w=360)
অর্থনীতিবিদদের মতে মধ্যবিত্তের কথা মাথায় রেখেই এই বাজেট করা হয়েছে
নয়া দিল্লি: বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের জন্য কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। নয়া বাজেটে নতুন কর কাঠামোকেই প্রধান কর ব্যবস্থায় পরিণত করা-সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। বস্তুত এমন কিছু আর্থিক সংস্কারের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যা থেকে সরাসরি লাভবান হতে পারে মধ্যবিত্ত শ্রেণি। বাজেট সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মন্তব্য করেছেন, “এই বাজেট দরিদ্র, মধ্যবিত্ত, কৃষকসহ উচ্চাকাঙ্ক্ষী ভারতীয় সমাজের সকল অংশের স্বপ্ন পূরণ করবে।” অর্থনীতিবিদরাও বলছেন, এই বাজেটে অবশেষে মধ্যবিত্তের কথা শোনা হয়েছে। দেখে নেওয়া যাক ২০২৩-২৪ সালের কেন্দ্রীয় বাজেটে এমন কী কী প্রস্তাব রয়েছে, যা মধ্যবিত্তের মুখে হাসি ফোটাতে পারে –
কর ব্যবস্থার সংস্কার
২০২০ সালে প্রথমবার নতুন কর ব্যবস্থা চালু করেছিল মোদী সরকার। এদিন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেছেন, এখন থেকে এই নতুন কর ব্যবস্থাই হবে দেশের প্রধান কর ব্যবস্থা। তবে কেউ চাইলে পুরোনো ব্যবস্থাতেও কর দিতে পারেন। সেই ক্ষেত্রে তাঁকে জানাতে হবে, তিনি ওই ব্যবস্থায় কর দিতে চান। নাহলে, নয়া ব্যবস্থাতেই আয়কর নির্ধারণ করা হবে।
করমুক্ত আয়ের সীমা বৃদ্ধি
বেতনভোগীদের জন্য বিদ্যমান আয়কর কাঠামোতে বড় পরিবর্তনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। নতুন কর ব্যবস্থায় যারা কর দেবেন, এখন থেকে তাদের করমুক্ত বার্ষিক আয়ের পরিমাণ ৫ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭ লক্ষ টাকা করা হয়েছে। অর্থাৎ, নতুন কর ব্যবস্থার আওতায়, যাদের বার্ষিক আয় ৭ লক্ষের নীচে তাদের আর কোনও কর দেওয়ার দায় থাকবে না।
নয়া কর কাঠামো
কর কাঠামো সংস্কারের পর –
– ০ থেকে ৩ লক্ষ টাকা অবধি উপার্জনে আয়কর – ০
– ৩ লক্ষ থেকে ৬ লক্ষ টাকা অবধি উপার্জনে আয়কর – ৫ শতাংশ
– ৬ লক্ষ থেকে ৯ লক্ষ টাকা উপার্জনে আয়কর – ১০ শতাংশ
– ৯ লক্ষ থেকে ১২ লক্ষ টাকা উপার্জনে আয়কর – ১৫ শতাংশ
– ১২ লক্ষ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা উপার্জনে আয়কর – ২০ শতাংশ
– ১৫ লক্ষ টাকার বেশি উপার্জনে আয়কর – ৩০ শতাংশ
বেতনভোগী এবং পেনশনভোগীদের লাভ
বেতনভোগী এবং পেনশনভোগীদের জন্য নতুন কর ব্যবস্থায় স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশনের সীমা ৪৫,০০০ টাকা করা হয়েছে। কোনও ব্যক্তির বার্ষিক আয় ৯ লক্ষ টাকা হলে, তাকে এখন ৪৫,০০০ টাকা বা তার বেতনের ৫ শতাংশ দিতে হবে। এর আগে ওই ব্যক্তিকে কর দিতে হত ৬০,০০০ টাকা। অর্থাৎ, আগের থেকে ১৫,০০০ টাকা সাশ্রয় হবে।
বেসরকারী কর্মচারীদের সুবিধা
বেসরকারী কর্মচারীরা অবসরের সময়ে জমে থাকা ছুটির বদলে যে অর্থ পান, তার উপর যে কর ছাড় দেওয়া হয়, তার সীমাও বাড়ানো হয়েছে। ২০০২ সালে অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকারের সময় শেষ বার এই সীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেই সময় দেশের সর্বোচ্চ বেতন ছিল প্রতি মাসে ৩০,০০০ টাকা। কর ছাড়ের সীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩ লক্ষ টাকা। সরকারি বেতন বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে, এই বাজেটে কর ছাড়ের সীমা বাড়িয়ে ২৫ লক্ষ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
প্রবীণ নাগরিকদের সুবিধা
সিনিয়র সিটিজেন সেভিং স্কিমে সর্বোচ্চ আমানতের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ঘোষণা করেছেন, “প্রবীণ নাগরিকদের সঞ্চয় প্রকল্পটিতে সর্বোচ্চ আমানতের পরিমাণ ১৫ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০ লক্ষ টাকা করা হবে।”
পোস্ট অফিস মাসিক আয় প্রকল্প
অন্যতম জনপ্রিয় ক্ষুদ্র সঞ্চয় প্রকল্প, পোস্ট অফিস মাসিক আয় প্রকল্প বা পিওএমআইএস-এর আমানতের সীমাও বাড়ানো হয়েছে। একক অ্যাকাউন্টধারীরা আগে যেখানে সর্বোচ্চ ৪.৫ লক্ষ টাকা জমা রাখতে পারতেন, বর্তমানে তার জায়গায় ৯ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জমা করতে পারবেন। আর যৌথ অ্যাকাউন্টধারীদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আমানতের পরিমাণ ৯ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৫ লক্ষ টাকা করা হয়েছে।
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য স্বস্তি
এমএসএমই-গুলিকে ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির ইঞ্জিন বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী। এদিন বাজেট বক্তৃতার সময় মাইক্রো, স্মল, এবং মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজ বা এমএসএমই সেক্টরের জন্য ক্রেডিট গ্যারান্টি প্রকল্পকে ফের চালু করার জন্য তিনি ৯,০০০ কোটি টাকার তহবিল ঘোষণা করেছেন। চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে এই প্রকল্প কার্যকর করা হবে। তিনি আরও জানিয়েছেন, ২ কোটি টাকা পর্যন্ত টার্নওভারের মাইক্রো এন্টারপ্রাইজ এবং বার্ষিক ৫০ লক্ষ টাকা আয় পর্যন্ত নির্দিষ্ট পেশাদারদের প্রিসাম্টিভ ট্যাক্সেসনের সুবিধা দেওয়া হবে।
দীর্ঘমেয়াদী মূলধনী লাভে ছাড়
আবাসিক সম্পত্তিতে বিনিয়োগ করা হলে, দীর্ঘমেয়াদী মূলধনী লাভের উপর আয়কর আইনের ৫৪ এবং ৫৪-র ঙ ধারা অনুযায়ী কর ছাড় পাওয়া যায়। বাজেট ২০২৩-এ এই দুই ছাড়কেই সর্বোচ্চ ১০ কোটি টাকায় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, আবাসিক সম্পত্তিতে বিনিয়োগ থেকে হওয়া আয়ের কর দেওয়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০ কোটি টাকা ছাড় পাওয়া যাবে।
বেসরকারী কর্মচারীদের সুবিধা
বেসরকারী কর্মচারীরা অবসরের সময়ে জমে থাকা ছুটির বদলে যে অর্থ পান, তার উপর যে কর ছাড় দেওয়া হয়, তার সীমাও বাড়ানো হয়েছে। ২০০২ সালে অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকারের সময় শেষ বার এই সীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেই সময় দেশের সর্বোচ্চ বেতন ছিল প্রতি মাসে ৩০,০০০ টাকা। কর ছাড়ের সীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩ লক্ষ টাকা। সরকারি বেতন বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে, এই বাজেটে কর ছাড়ের সীমা বাড়িয়ে ২৫ লক্ষ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।