কোন মন্ত্রবলে বিশ্বব্যাপী অশান্ত পরিবেশের মধ্যেও ছুটে চলেছে ভারতের অর্থনীতি?
অর্থ বিষয়ক দপ্তর থেকে প্রকাশিত মে ২০২৫-এর মাসিক অর্থনৈতিক পর্যালোচনা অনুসারে "মোটের উপর ভারতের অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক। যা বৈশ্বিক অস্থিরতার মাঝেও স্থিতিশীলতা প্রদর্শন করছে। এর পেছনে রয়েছে দৃঢ় অভ্যন্তরীণ চাহিদা, মুদ্রাস্ফীতির চাপ হ্রাস, দৃঢ় বহিঃখাত এবং স্থির কর্মসংস্থান।"

বিশ্বব্যাপী অশান্ত পরিবেশ। কোথাও চলছে যুদ্ধ বিগ্রহ তো কোথাও আবার অর্থনৈতিক সঙ্কট তো কোথাও আবার রাজনৈতিক অস্থিরতা। বিশ্বব্যাপী এই অস্থিরতায় যেখানে টলে গিয়েছে অনেক বড় বড় দেশই সেখানে অটল হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে ভারতের অর্থনীতি। এই কথাই জানিয়েছে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়। বিশ্বব্যাপী অস্থিরতার মাঝেও ভারতের অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক। এর পেছনে রয়েছে মুদ্রাস্ফীতির পরিমাণে হ্রাস, শক্তিশালী বহিঃখাত, এবং স্থিতিশীল কর্মসংস্থান। মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থিতিশীল ছিল, যদিও তারা সতর্ক করেছে যে বৈদেশিক চ্যালেঞ্জগুলি ভারতের প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনাকে প্রভাবিত করতে পারে।
অর্থ বিষয়ক দপ্তর থেকে প্রকাশিত মে ২০২৫-এর মাসিক অর্থনৈতিক পর্যালোচনা অনুসারে “মোটের উপর ভারতের অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক। যা বৈশ্বিক অস্থিরতার মাঝেও স্থিতিশীলতা প্রদর্শন করছে। এর পেছনে রয়েছে দৃঢ় অভ্যন্তরীণ চাহিদা, মুদ্রাস্ফীতির চাপ হ্রাস, দৃঢ় বহিঃখাত এবং স্থির কর্মসংস্থান।”
ওই পর্যালোচনায় আরও বলা হয়েছে যে, ভারতের অর্থনৈতিক গতি অব্যাহত রয়েছে, যা দেশের জটিল বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ সামাল দেওয়ার ক্ষমতা এবং অভ্যন্তরীণ প্রবৃদ্ধির চালকগুলি বজায় রাখার দক্ষতাকেই প্রতিফলিত করে।
আরও বলা হয়েছে, “২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রকৃত জিডিপি ৬.৫% হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা দ্বিতীয় অগ্রিম অনুমানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এই প্রবৃদ্ধি এসেছে এমন একটি বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে, যেখানে ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা ও বাণিজ্যিক অনিশ্চয়তা বিরাজমান।”
রিপোর্ট বলছে, “দৃঢ় অভ্যন্তরীণ চাহিদা—বিশেষত গ্রামীণ ভাগে পুনরুত্থান—নিয়মিত বিনিয়োগ এবং নিট রপ্তানির ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন ভারতের অর্থনীতিতে স্থিতিস্থাপকতাকে বজায় রেখেছে।”
এখানেই শেষ নয় বেড়েছে শিল্প উৎপাদনও। কৃষি খাতেও পুনরুদ্ধার হয়েছে, অনুকূল বর্ষা এবং রেকর্ড খাদ্যশস্য উৎপাদনের ফলে লাভ দেখা গিয়েছে।
অর্থনীতির এই ইতিবাচক ধারা ২০২৫-২৬ অর্থবছরেও অব্যাহত রয়েছে। যেখানে প্রাথমিক হাই-ফ্রিকোয়েন্সি সূচক (HFIs) দেখাচ্ছে যে অর্থনৈতিক কার্যকলাপ স্থিতিশীল রয়েছে। রিপোর্ট অনুসারে, “ই-ওয়ে বিল জেনারেশন, জ্বালানির ব্যবহার, এবং পিএমআই সূচকের মতো HFIs থেকে বোঝা যায় যে অর্থনীতিতে স্থিতিস্থাপকতা বজায় রয়েছে। স্বাস্থ্যকর রবি ফসল ও ইতিবাচক বর্ষার পূর্বাভাস গ্রামীণ চাহিদাকে আরও জোরদার করেছে।”
শহরাঞ্চলে বেড়েছে ভোগ বৃদ্ধিও। বাড়ছে অবসর ও বাণিজ্যিক ভ্রমণ, ফলে লাভ করছে বিমান পরিষেবা, হোটেল ব্যবসা। যদিও নির্মাণ সামগ্রী ও গাড়ি বিক্রির ক্ষেত্রে কিছুটা ধীরতা লক্ষ করা গেছে।
মে ২০২৫-এ খুচরো ও খাদ্য মূল্যস্ফীতি ব্যাপক ও টেকসইভাবে হ্রাস পেয়েছে, যা শক্তিশালী কৃষি উৎপাদন ও কার্যকর সরকারি হস্তক্ষেপের ফল।
