নয়া দিল্লি: সিবিাইয়ের এক সিনিয়র আধিকারিক মঙ্গলবার জানিয়েছেন যে ২২৮৪২ কোটি টাকার ঋণ প্রতারণা মামলায় এবিজি শিপইয়ার্ড কোম্পানির ডিরেক্টরদের বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিস জারি করা হয়েছে। ওই আধিকারি বলনে যে এই মামলার অভিযুক্তরা যাতে দেশ ছেড়ে বাইরে যেতে না পারেন, এর জন্য নোটিস জারি করা হয়েছে। সিবিআই জানিয়েছে যে ১২ ফেব্রুয়ারি মোট ১৩টি জায়গায় ওই ব্যক্তিদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হয়েছিল। এর মধ্যে বেশকিছু নথীপত্রও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। অভিযুক্তদের পাশাপাশি তল্লাশিতে এই ঘটনায় সম্পর্কিত বেশকিছু ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেরও সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা বলেছে যে অভিযুক্তরা ভারতেই রয়েছেন। প্রসঙ্গত এর আগে সিবিআইয়ের তরফে দেশের সবচেয়ে বড় ব্যাঙ্ক প্রতারণা মামলায় এবিজি শিপইয়ার্ড লিমিটেডে আর তার তৎকালীন সভাপতি এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর ঋষি কমলেশ আগরওয়াল সহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছিল।
শনিবার সিবিআই আধিকারিকেরা জানান যে কথিতভাবে ২২৮৪২ কোটি টাকার বেশি প্রতারণার জন্য ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্কের নেতৃত্বে ব্যাঙ্কের একটি গোষ্ঠী এই মামলা দায়ের করেছে। এই মুহূর্তে দেশের সবচেয়ে বড় ব্যাঙ্ক প্রতারণার মামলাটি সামনে আসায় দেশজুড়ে হইচই শুরু হয়ে গিয়েছে। এই মামলা সামনে আসার পর কংগ্রেসের তরফে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ করা শুরু হয়ে গিয়েছে।
কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেছিলেন যে ব্যাঙ্ক ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে সিবিআইয়ের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিল যে এবিজি শিপইয়ার্ডের তরফে বড় মাত্রায় প্রতারণা করা হচ্ছে। এই অবস্থায় ওই কোম্পানির বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল অ্যাকশন নেওয়া হোক। অভিযোগ দায়ের করা সত্ত্বেও সিবিআই কোনো অ্যাকশন নেয়নি, আর তাদের তরফে মামলার ফাইল এসবিআইয়ের কাছে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। প্রসঙ্গত ২৮টি ব্যাঙ্কের কন্সোর্টিয়ামের নেতৃত্বে ছিল আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক। কিন্তু এই অভিযোগ এসবিআইয়ের তরফে দায়ের করা হয়। স্টেট ব্যাঙ্ক নভেম্বর ২০১৮য় প্রথমবার ওই কোম্পানির বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিল।
পিএম মোদী বলুন যে ব্যাঙ্ক থেকে ২২,৮৪২ কোটি টাকার প্রতারণা কীভাবে হল: কংগ্রেস
কংগ্রেস গত সোমবার গুজরাতের এবিজি শিপইয়ার্ড কোম্পানি দ্বারা ২২৮৪২ কোটি টাকার কথিত প্রতারণা মামলা নিয়ে কেন্দ্র সরকারকে নিশানা করেছিল। তারা বলেছিল যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জানানো উচিৎ যে এই প্রতারণা কীভাবে হয়েছে আর তিনি এই বিষয়ে নীরব কেন। অন্যদিকে কংগ্রেসের আরেক মুখপাত্র গৌরভ বল্লভ দাবি করেছেন যে এবিজি শিপইয়ার্ডের এই প্রতারণার ব্যাপারে সরকার পাঁচ বছর আগেই জানত, কিন্তু সরকারের তরফে পাঁচ বছর পর্যন্ত কোনো অ্যাকশন নেওয়া হয়নি।
দেশের সবচেয়ে বড় ব্যাঙ্ক প্রতারণা মামলায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট কী করছে -রাউত
শিবসেনার নেতা এবং সাংসদ সঞ্জয় রাউত সোমবার বলেছিলেন যে মুম্বইতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের রেড করা যদি জাতীয় সুরক্ষার সঙ্গে সম্পর্কিত থাকে, তাহলে মহারাষ্ট্র সরকারের জন্য এটা জরুরী যে তারা তদন্তকারী সংস্থার সঙ্গে সহযোগীতা করুক। শিবসেনার প্রধান মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত সেই সঙ্গেই প্রশ্ন তুলেছেন যে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা কি গুজরাতেক সবচেয়ে বড় ব্যাঙ্ক প্রতারণারও তদন্ত করবে? রাউত বলেন, ‘আমরাও দেখতে চাই যে দেশের সবচেয়ে বড় ব্যাঙ্ক প্রতারণা মামলায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট কী করছে। গত দু বছর ধরে যারা প্রতারণার এই মামলাটি চাপার চেষ্টা করছেন তারা কারা.. যারা প্রাথমিক অভিযোগও দায়ের করতে দেয়নি। দেশ থেকে ষড়যন্ত্রকারীরা কীভাবে বেঁচে গেলেন?’