অবসর নিয়েও শান্তি নেই MiG-21 বাইসনের, আবার উড়তে পারে এই Fighter Jet!
MiG-21 Bison, Indian Air Force: ভারতীয় বায়ুসেনা সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই যুদ্ধবিমানগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করবে। না, অবশ্যই দেশের আকাশসীমা পাহারা দেওয়ার জন্য পুনরায় ফিরিয়ে নিয়ে আসা হবে না 'ফ্লাইং কফিন' নামে খ্যাত এই যুদ্ধবিমানগুলোকে।

মিগ ২১ যুদ্ধবিমান ভারতের বায়ুসেনার কাছে সত্যিই একটি আইকনিক নাম। ৬০ বছরের বেশি সময় ধরে এই যুদ্ধবিমান ভারতের আকাশসীমা পাহারা দিয়ে এসেছে। চলতি বছরের ২৬ সেপ্তেম্বর অফিসিয়ালি এই বিমানটি অবসর নিয়েছে। কিন্তু অবসরের কোথায় একটু শান্তির জীবন কাটাবে এই বিমান, তা নয়। হয়তও অবসর ভেঙে আবারও তাকে ফিরতে হবে।
ভারতীয় বায়ুসেনা সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই যুদ্ধবিমানগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করবে। না, অবশ্যই দেশের আকাশসীমা পাহারা দেওয়ার জন্য পুনরায় ফিরিয়ে নিয়ে আসা হবে না ‘ফ্লাইং কফিন’ নামে খ্যাত এই যুদ্ধবিমানগুলোকে। বরং ভারতীয় বায়ুসেনা তাদের ‘হেরিটেজ ফ্লাইট’ কর্মসূচির অংশ হিসাবে ফিরিয়ে নিয়ে আসবে এই বিমানগুলোকে।
ভারতীয় বায়ুসেনার এই উইংকে বলা যায় ইতিহাসে সাক্ষী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের ব্রিটিশ ‘টাইগার মথ’, আমেরিকান ‘হার্ভার্ড’ ও ‘ড্যাকোটা’-এর মতো তিনটি বিমান ইতিমধ্যেই পরিচালনা করে ভারতীয় বায়ুসেনা। ভারতীয় বায়ুসেনার সামরিক বিমান চালানোর বিবর্তন তুলে ধরতে একাধিক বিশেষ ইভেন্ট ও বিভিন্ন এয়ার শো-তে ওড়ানো হয় এই বিমানগুলোকে। আর তেমনই ক্ষেত্রে ওড়ানো হবে মিগ ২১ যুদ্ধবিমানকে।
কেন গুরুত্বপূর্ণ এই প্রত্যাবর্তন?
১৯৭১ সালের বাংলাদেশ যুদ্ধ, ১৯৯৯ সালের কার্গিল সংঘাত এবং ২০১৯ সালের বালাকোট এয়ারস্ট্রাইক সহ একাধিক বড় অভিযানে অংশ নিয়েছে মিগ ২১। এমনকি, গ্রুপ ক্যাপ্টেন অভিনন্দন বর্তমান এই মিগ-২১ নিয়েই পাক যুদ্ধবিমানকে তাড়া করেছিলেন। এটি ভারতীয় বায়ুসেনার অন্যতম সফল যুদ্ধবিমান।
তবে এই পুনরুজ্জীবনের পথে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল রক্ষণাবেক্ষণ এবং যন্ত্রাংশ সরবরাহ। বিমানগুলি বর্তমানে নাসিকে রয়েছে। চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি একটা সুখবর হল এই মিগ ২১ হ্যাল ভারতের মাটিতেই লাইসেন্সের অধীনে তৈরি করত। ফলে ইঞ্জিন ও যন্ত্রাংশের খুব সহজেই পাওয়া যাবে।
এছাড়াও, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সামরিক জাদুঘরগুলি অবসরপ্রাপ্ত মিগ ২১ যুদ্ধবিমানকে রাখার জন্য আবেদন জানিয়েছে। ইঞ্জিন, অস্ত্র বা এভিওনিক্স ছাড়া এয়ারফ্রেমটি এই সব ক্ষেত্রে দিয়ে দেয় ভারতীয় বায়ুসেনা। সরকারি প্রতিষ্ঠান বা ওয়ার মেমোরিয়ালে এই বরাদ্দ হয় একেবারে বিনামূল্যে। তবে বেসরকারি সংস্থাগুলিকে প্রতিটি এয়ারফ্রেমের জন্য ৩০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দিতে হয়। ইতিহাস ও প্রযুক্তির এই মিলন একদিকে যেমন আমাদের ঐতিহ্যকে সম্মান জানাবে, তেমনই নতুন প্রজন্মের কাছেও তুলে ধরবে ভারতের বায়ুসেনার সাহসিকতার গল্প।
