রাজ্যে ফের বড় প্রশাসনিক রদবদল ঘটাল নির্বাচন কমিশন। পশ্চিমবঙ্গের নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদ থেকে সুরজিৎ কর পুরকায়স্থকে সরিয়ে দেওয়া হল। অন্যদিকে, বিজেপিতে টিকিট না পেয়ে দলীয় পদ ছাড়লেন দুলাল বর। তাঁর দল ছাড়ার জল্পনাও তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি আজ কাঁথিতে শুভেন্দু গড়ে নির্বাচনী প্রচারে গিয়েছিলেন (West Bengal Assembly Election 2021) নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। তৃণমূল সুপ্রিমোর বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে মোদী বলেন, “২ মে দিদি যাচ্ছে।” এরপরই খাস নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে সাংসদ কড়া ভাষায় শুভেন্দুকে আক্রমণ করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভেন্দুকে জবাব দিতে গিয়ে ‘ফোর-টোয়েন্টি অধিকারী’ বলে কটাক্ষ করলেন তিনি।
দেখে নিন এক নজরে ভোট বঙ্গে বেশ কিছু ছবি…
রাজ্যের নিরাপত্তা উপদেষ্টার (Security Advisor) পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল আইপিএস সুরজিৎ কর পুরকায়স্থকে (Surajit Kar Purakayastha)। তাঁকে এ দিন অপসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। ২০১৮ সালের ১৩ মে রাজ্যের নিরাপত্ত উপদেষ্টার পদে নিয়োগ করা হয়েছিল সুরজিৎ কর পুরকায়স্থকে। তিনি অবসরপ্রাপ্ত এডিজি ও আইপিএস। বুধবার একটি নির্দেশিকা জারি করে করে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, নির্বাচন চলাকালীন তিনি কোনও ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন না।
সবিস্তারে পড়ুন: রাজ্যের নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদ থেকে সুরজিৎ কর পুরকায়স্থকে সরাল কমিশন
নির্বাচনে টিকিট ন পেয়ে দল ছাড়ার ঘটনা এ রাজ্যে আর নতুন নয়। সাম্প্রতিককালে একাধিক নেতা-নেত্রীকে দল ছাড়তে দেখেছে বাংলার রাজনীতি। এবার একই ছবি বিজেপিতে (BJP)। বিজেপি থেকে টিকিট না পাওয়ার পর এসসি-এসটি মোর্চার সভাপতি পদ ছাড়লেন বাগদার বিধায়ক দুলাল বর (Dulal Bar)। ১০ বছর ধরে ওই কেন্দ্রের বিধায়ক তিনি। কিন্তু এবার তাঁকে টিকিট দেয়নি বিজেপি।
বিস্তারিত পড়ুন: টিকিট দেয়নি বিজেপি, দলীয় পদ ছাড়লেন দুলাল বর
বিধানসভা নির্বাচনে কার্যত এবার সব নজর নন্দীগ্রামের দিকে। তৃণমূল জিতলে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হবেন, এ কথা মোটামুটি স্পষ্ট। আর বিজেপি জয়ী হলে শুভেন্দু যে মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন সেই জল্পনাও ঘোরাফেরা করছে রাজনৈতিক মহলে। সুতরাং শুধু ক্ষমতায় কোন দল আসবে সেটাই নয়, মুখ্যমন্ত্রীও নির্বাচিত করতে পারে নন্দীগ্রামই। আর সেই নন্দীগ্রামের সভায় দাঁড়িয়ে মমতার মূল প্রতিপক্ষ শুভেন্দুকে একের পর এক তোপ দাগলেন অভিষেক। শিবির বদলের পর থেকে শুভেন্দু একের পর এক সভায় ‘তোলাবাজ ভাইপো’ বলে কটাক্ষ করেছেন শুভেন্দু। আর প্রথমবার নন্দীগ্রামে গিয়ে সেই শুভেন্দুকে ‘ফোর-টোয়েন্টি অধিকারী’ বলে কটাক্ষ করলেন অভিষেক। একের পর এক জবাব দিলেন এক সময়ের সহযোদ্ধা শুভেন্দুকে। তাঁকে জবাব দিতে গিয়ে এ দিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর একটি চিঠিও তুলে ধরেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ।
বিস্তারিত পড়ুন: ‘পাকিস্তানকে প্রেমপত্র লিখছেন মোদী’, প্রধানমন্ত্রীর চিঠি হাতে নন্দীগ্রামে তোপ অভিষেকের
গোসাবায় সভা করে সুন্দরবন উন্নয়নের কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বলেছেন সুন্দরবনকে নতুন জেলা করে জেলার উন্নয়নে ২ লক্ষ কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে। সেই প্রতিশ্রুতির পরিপ্রেক্ষিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সুন্দরবন নতুন জেলা হলে বাংলায় ২৪টি জেলা হবে। একটি জেলায় ২ লক্ষ কোটি খরচ করলে বাংলায় মোট ৪৮ লক্ষ টাকা দেবে। অভিষেকের দাবি তিনি হিসেব করে দেখেছেন, ৪৮ লক্ষ টাকা খরচ করলে বাংলার প্রত্যেক মানুষকে ৫ লক্ষ করে দেওয়া সম্ভব। অভিষেক বলেন, প্রত্যেককে ৫ লক্ষ করে দিয়ে দিন তৃণমূল প্রতিদ্বন্দিতা করবে না। পাশাপাশি বিজেপিকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘৬ কোটি টাকার গাড়ি চড়েন আর কৃষকদের ৬ হাজার টাকা দেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টালির চালে থাকেন, হাওয়াই চটি পরেন আর কৃষকদের ১০ হাজার টাকা দেন। কাকে ভোট দেবেন?’
একাধিক প্রচার সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, বিজেপি ভোটের জন্য টাকা বিলোচ্ছে। তিনি আগেও বলেছেন চাকা দিলে নিতে পারেন, কারণ ওটা মানুষের টাকা। বাঁকুড়ার ওন্দার সভা থেকে মমতা বললেন, ‘বিজেপি অন্ধকারে টাকা ছড়াচ্ছে, এটা যদি ধরিয়ে দিতে পারেন তাহলে একটা পুরস্কার, একটা চাকরি।’ তিনি আরও বলেন, ‘মনে রাখবেন ওই টাকা বিজেপির নয়। ওটা রেল বিক্রির টাকা, বিএসএনএল বিক্রির টাকা, পিএম কেয়ারের টাকা।’
বিস্তারিত পড়ুন: ‘বিজেপি টাকা বিলোচ্ছে ধরিয়ে দিতে পারলে পুরস্কার, একটা চাকরি’
শান্তিপূর্ণ ভোট করতে বদ্ধপরিকর কমিশন। কোভিড বিধি মেনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে চায় কমিশন। ২০৯ জন সাধারণ পর্যবেক্ষক, ৫৪ জন পুলিশ পর্যবেক্ষক নিয়োগ করেছে কমিশন। সমস্ত ভোটগ্রহণ কেন্দ্র একতলায় হবে। বাইক র্যালির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সিভিক পুলিশ, গ্রিন পুলিশ থাকবে না।
নন্দীগ্রামের মানুষের ওপর মিথ্যা দোষ দিচ্ছে দিদি। নন্দীগ্রাম দিদিকে সম্মান করেছে, দিদি তাদের অপমান করেছে। নন্দীগ্রামের মানুষ এই অপমানের জবাব দেবে। বিজেপি সরকার সোনার বাংলা দেবে।
বাংলায় যে বিজেপি-র সরকার আপনারা বানাতে চলেছেন, তার মুখ্যমন্ত্রী এখানকার ভূমিপুত্রই হবেন। দিদি আপনি খেলা খেলুন, আমরা সেবা করব। খেলা নয়, সেবা হবে।
যে পশ্চিমবঙ্গ পুরো ভারতকে বন্দে মা তরম-এর স্লোগান শিখিয়েছে, দিদি সেই বাংলায় দাঁড়িয়ে বহিরাগত বলছেন? এই ভূমি রবিঠাকুর, বঙ্কিমচন্দ্রের। আমরা ভারত মাতার সন্তান। এই ভূমিতে কোনও ভারতীয়ই বহিরাগত নয়। দিদি এখানে কোনও ভারতবাসী বহিরাগত নয়। সবাই ভারতমাতার সন্তান।
আপনার একটা ভোটেই কাট-কালচার শেষ হবে। হলদিয়ায় ব্যাপক উন্নতি হবে। কেবল হলদিয়াই, গোটা মেদিনীপুরে বিকাশ হবে। কর্মসংস্থানের ব্যাপক ক্ষেত্র বাড়বে। পর্যটনশিল্পেও ব্যাপক উন্নতি হবে। কেন্দ্রীয় সরকার পেটুয়াঘাট বন্দরকে আধুনিকীকরণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এতে এখানকার যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ মিলবে। আপনাদের যে উপকূল রয়েছে, তাতে আপনাদের জন্য বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে। কেন্দ্র সরকার নানা প্রকল্পের মাধ্যমে পর্যটনের প্রসার ঘটাচ্ছে।
বাংলা চায় শিক্ষা, কর্মসংস্থান। বিজেপির সংকল্পপত্রে জনতার আওয়াজ। মানুষের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেছে। কৃষক সম্মান নিধি পেতে দেয়নি দিদি। বিজেপি ক্ষমতায় এলে গত ৩ বছরের টাকা পাবেন চাষিরা। ডবল ইঞ্জিন সরকারের কার্যকারিতা এবার বাংলা দেখবে। হলদিয়ার কী পরিস্থিতি! এখানকার কাজু চাষি, পান চাষি, ফুল চাষিদের কেন্দ্রের সব প্রকল্পের সুবিধা দেওয়া হবে। গমের প্যাকেজিং একশো শতাংশ চটের ব্যাগে হচ্ছে। এর সুবিধা কৃষকরাও পাবেন।
বিজেপি সব স্কিমকে স্ক্যামমুক্ত করবে। বাংলার প্রতিটি হাড়ি থেকে একটাই আওয়াজ। ২ মে যাচ্ছে দিদি. আসল পরিবর্তন আসছে। বাংলার মানুষ কুশাসনের জবাব দিতে প্রস্তুত। তৃণমূলের খেলা শেষ হবে, উন্নয়ন শুরু হবে।
দিদির খেলা ধরা পড়ে গিয়েছে, এবার মানুষ তাঁকে দরজা দেখাবে। ভোটের সময়ে বলছেন দুয়ারে সরকার। এতদিন আপনি কোথায় ছিলেন? এবার বাংলায় বিকাশ শুরু হবে। আমফানের রিলিফ কে লুটেছে? ভাইপো উইন্ডোয় কাটমানি ঢুকেছে। বাংলায় এবার আসল পরিবর্তন হবে।
শুভেন্দু অধিকারীর খাসতালুকে নরেন্দ্র মোদী। তাঁর সভায় উপস্থিত তমলুকের সাংসগ দিব্যেন্দু অধিকারী। কাঁথির রেলস্টেশন ময়দান থেকে ‘দিদি’ বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন মোদী। বললেন, “২ মে দিদি যাচ্ছে।” স্বাধীনতার ৭৫ বছর পালনে বাংলার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে। এই ভোটে যাঁরা প্রথমবার ভোট দেবেন, তাঁদের জন্যও এই সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: মোদী
বোমা বিস্ফোরণে শিশু মৃত্যুর রেশ এখনও কাটেনি। তারই মধ্যে রাজনৈতিক সংঘর্ষে (West Bengal Assembly Election 2021)ফের উত্তপ্ত বর্ধমান (Bardhaman)। বিজেপি (Bengal BJP) তৃণমূল (TMC) সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বর্ধমানের পালিতপুর। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন দু’জন। শেখ ডালিম ও শেখ জাহাঙ্গির নামে ওই দুই ব্যক্তি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১০ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
বিস্তারিত পড়ুন: বোমা বিস্ফোরণে শিশু মৃত্যুর রেশ কাটার আগেই ফের সংঘর্ষে উত্তপ্ত বর্ধমান
বিজেপি নেতার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার। ভোট বঙ্গে (West Bengal Assembly Election 2021) ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য কোচবিহারের (Cooch Behar) দিনহাটায় (Dinhata)। মৃতের নাম অমিত সরকার। জানা গিয়েছে, অমিত দিনহাটার বিজেপির শহর মণ্ডলের সভাপতি। পরিবারের দাবি, মঙ্গলবার রাতে কেউ তাঁকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। রাতে বাড়ি ফিরে আসেন। পরে আবার বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান তিনি। পরিবারের তরফে সম্ভাব্য সমস্ত জায়গায় খোঁজ করা হয়। বুধবার সকালে দিনহাটা পশু হাসপাতালের বারান্দায় তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখা যায়।
বিস্তারিত পড়ুন: ভোট আবহে দিনহাটায় বিজেপি নেতার রহস্যমৃত্যু, উদ্ধার ঝুলন্ত দেহ
মঙ্গলবার রাতে কাঁথি পৌরসভার ২০ নং ওয়ার্ডে ৯০ নং বুথে ধর্মদাসবাড় গ্রামে বিজেপি কর্মীর বাড়িতে কয়েকজন দুষ্কৃতী চড়াও হয়। দুষ্কৃতীরা রড ,বাঁশ নিয়ে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। আঙুল ওঠে তৃণমূলের দিকে। এক বিজেপি কর্মী আহত হয়। অন্যদিকে, উত্তর কাঁথি বিধানসভার ভাজাচাউলির ডুমুরবেড়িয়া বুথের কার্যকর্তা তৎসহ কাঁথি সাংগঠনিক জেলার ওবিসি মোর্চার সম্পাদক সুপর্ণ মন্ডলের ওপর ,সর্পাই বাজারে হামলা হয় বলে অভিযোগ। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
বিজেপি ভেবেছিল, মমতার তো পায়ে মেরেছি ও আর বেরোবে না। আমাকে চেনে না, এক পা দিয়ে যা শট মারব না, পুরো মাঠ থেকে ফাঁকা করে দেব। আমি বন্দুকের সঙ্গে লড়াই করা লোক। বন্দুকের গুলি আমার মাথা থেকে বেরিয়ে গিয়েছে। ভোটটা আপনার। কেউ যদি বলে কোথায় ভোট দিচ্ছিস দেখতে পাচ্ছি। এটা মিথ্যা কথা। কেউ কিন্তু দেখতে পায় না। ভোটার মেশিন ভাল করে ক্রস চেক করবেন। তিরিশটা করে ভোট গুনবেন। দুবার অন দুবার অফ করবেন। না হলে বিজেপি ভোট ভরে রাখবে। ভোট মেশিন পাহারা দেবেন। পুলিশ পুলিশের কাজ করবেন। ভোট মেশিন পাহাড়া দেবেন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা। আপনার চায়ে বিষ মিশিয়ে দেবে বিজেপির হাতের খাবার খাবেন না। পুলিশ তো আমাদের রাজ্যেরও আছে। এদিকে উত্তরপ্রদেশের পুলিশও ঢোকানো হচ্ছে। কেন তা হবে? ভরসা করবেন না।