পুরভোটে রাজ্য জুড়ে অশান্তির ছবি ধরা পড়েছে। একাধিক ওয়ার্ডে শাসক দলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছে। তবে গণনা নিয়ে যাতে কোনও অশান্তি না হয়, তার জন্য সতর্ক রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কড়া নিরাপত্তার ঘেরাটোপে গণনা শুরু হবে। কোনওরকম অশান্তি, অপ্রীতিকর পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয় তার জন্য প্রস্তুত রয়েছে রাজ্য পুলিশ। বিধিনিষেধের কড়াকড়ি থাকবে দিনভর। গণনা শুরু হবে সকাল ৮টা থেকে। প্রথমে পোস্টাল ব্যালট গণনা হবে। তারপর ইভিএম গণনা শুরু হবে। দিনভর নজর রাখুন সব আপডেটে।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সাংবাদিক বৈঠক করেন বুধবার। তিনি বলেন, “যেভাবে এই নির্বাচন হয়েছে, তাকে কি নির্বাচন বলা যায়? এটা জনগণের রায় নয় । সব জায়গায় ভোটের দাবি করেছিলাম আমরা।”
শ্রীরামপুরে একটি ওয়ার্ডে ৪ মার্চ ফের ভোট হবে। শ্রীরামপুর পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের ৩ নম্বর বুথে পুনর্নির্বাচন হবে। কারণ এই বুথের ইভিএম খোলা যায়নি। তাই ফের ভোটের সিদ্ধান্ত কমিশনের। নন্দলাল ইনস্টিটিউশনের ৩ নম্বর রুমে ভোট হবে। ৭১৩ জন ভোট দিয়েছিলেন।
বিকেল ৪টে পর্যন্ত গণনায় শতাংশের হিসাবে কোন দল কত ভোট পেয়েছে-
তৃণমূল ৬২.৪৪
বিজেপি ১৩.৪২
সিপিআই ০.৭১
সিপিএম ১১.৮৩
ফরোয়ার্ড ব্লক ০.৬৬ শতাংশ
আরএসপি ০.৩৭
কংগ্রেস ৫.০৬
নির্দল ৫.৩৫
দীর্ঘদিন ধরে জয়নগর-মজিলপুর পুরসভা কংগ্রেসের দখলে ছিল। এবার সেখানে জয় ছিনিয়ে এনেছে তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা, “পাহাড় থেকে জঙ্গল, সুন্দরবন থেকে বর্ধমান, বীরভূম থেকে নবদ্বীপ, শান্তিপুর প্রতিটা জায়গা। ব্যারাকপুর থেকে বাগদা বনগাঁ সব, যে জয়নগরে আমরা জীবনে কোনওদিন জিতিনি পুরভোটে সেখানেও এত বড় জয় মানুষের কাজ করতে আমাদের আরও এগিয়ে দেবে। যত জিতব তত যেন নম্র হই, শান্ত হই। মানুষের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করে মানুষের কাজ করতে হবে।”
এবারের পুরভোটে দার্জিলিংয়ে নয়া সমীকরণ। অজয় এডওয়ার্ডের হামরো পার্টি বোর্ড তৈরি করতে চলেছে সেখানে। এই জয় নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি সবথেকে খুশি দার্জিলিংয়ের ভোটের প্রসেস শুরু হয়েছে। গণতান্ত্রিক পদ্ধতি ফিরে এসেছে। পাঁচটা রাজনৈতিক দল ভোটে অংশ নিয়েছে। আমাদের কোনও দিন কিছু ছিল না আমাদেরও খাতা খুলেছে। যে পাঁচটা পার্টি অংশ নিয়েছে সকলের সঙ্গে আমাদের ভাল সম্পর্ক আছে। আগামিদিনে জিটিএ ভোটও করিয়ে দেব। পাহাড়ে পঞ্চায়েত ভোটের জন্য বারবার কেন্দ্রকে বলছি আইনটা পাঠাতে। ওখানে দ্বিস্তরীয় পঞ্চায়েত। ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নেই। পঞ্চায়েতের আইনটা কেন্দ্রীয় আইন। বারবার আইনটা করে দিতে বলেছি। এটা করে দিলে মানুষ পঞ্চায়েতের সুবিধাটা পায়। দীর্ঘদিন ধরে পড়ে আছে।”
উত্তর প্রদেশে যাওয়ার আগে দমদম বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বাংলার মানুষ আমাকে আরও বেশি করে আশীর্বাদ দিয়েছেন। আমি মানুষের আশীর্বাদ দিয়ে বেরোচ্ছি উত্তর প্রদেশের জন্য। মানুষের প্রতি আমাদের অনেক কৃতজ্ঞতা। অনেক কুৎসাই রটেছিল। ১১ হাজার ২৫টা বুথে ভোট হয়েছিল সম্ভবত। তার মধ্যে সাতটা আটটা বুথে আপনারা দেখিয়েছেন গন্ডগোল। এই বুথের মধ্যেও যতদূর আমি জানি ইভিএম নিয়ে সমস্যা হয়েছে। ইভিএম রিপ্লেস হয়েছে। দু’টো বুথে রিপোল হয়েছে। আমাকে বলুন তো পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, মেদিনীপুর, বীরভূম, বর্ধমান, হুগলির আরামবাগের একটা প্রান্ত ছাড়া একটাও ঘটনা শুনেছেন? উত্তর ২৪ পরগনা এমনকী ব্যারাকপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় কোনও সমস্যা শুনেছেন? জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, দার্জিলিং, মালদহ কোথাও কিছু ঘটেনি। মানুষ উৎসবের মেজাজে নিজের ভোট নিজে দিয়েছে। আমি চাই সবসময় মানষ তাঁর গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করুক। ভোট উৎসব। এই উৎসবে যত বেশি মানুষ শামিল হবেন, তত বেশি করে গণতন্ত্র প্রাণবন্ত ও সঞ্জীবিত হবে।”
দক্ষিণ দমদমের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে স্ত্রী জোড়া পাতায় (নির্দল) দাঁড়ানোয় স্ত্রীকে ডিভোর্সের নোটিস পাঠিয়েছিলেন তৃণমূল কাউন্সিলর সুরজিৎ রায় চৌধুরী (ট্যাবলা)। প্রচারের সময় ওয়ার্ড জুড়ে জোড়া পাতার দাপট ছিল অটুট। প্রচারে তৃণমূলের পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন চোখে পড়েনি। তৃণমূল প্রার্থী টুম্পা দাস প্রচারে কার্যত বেরোননি বলেই এলাকার লোকজনের দাবি। ভোটের দিনও তাঁকে বুথে দেখা যায়নি। সেই ওয়ার্ডে রীতা রায় চৌধুরী অর্থাৎ জোড়া পাতার প্রার্থী পেয়েছেন ৪৪৯২টি ভোট। তৃণমূল পেয়েছে ৫৭৮টি ভোট।
আগামী ৮ মার্চের মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সমস্ত পুরসভার চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানের নাম ঘোষণা করা হবে বলে জানালেন রাজ্যসভার সাংসদ তথা দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের যাদবপুর ও ডায়মন্ড হারবার সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শুভাশিস চক্রবর্তী।
গণনার পাঁচ ঘণ্টা পরও খাতা খুলতে পারেনি বিজেপি। ১ টি পুরসভায় জয়ী সিপিএম ও অপরটিতে উত্তরবঙ্গের নতুন দল হামরো পার্টি। ফল সামনে আসতেই ধন্যবাদ জানালেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইটে মা-মাটি-মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন তিনি।
Heart-felt gratitude to Ma-Mati-Manush for according yet another overwhelming mandate to us. Congratulations to the winning candidates of All India Trinamool Congress in the Municipal Elections. (1/2)
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) March 2, 2022
এবার পৌরসভা নির্বাচনে তাঁদের পরিবারের সদস্য কেউ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি। তবুও কাঁথি পৌরসভা হাতে রাখতে সর্বস্ব দিয়ে লড়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। কাঁথিতে জিততেই পারলেন না বিজেপি বিধায়ক। পাঁচ দশকের সাম্রাজ্যের পতন। কাঁথি পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি বিধায়ক পরাজিত হয়ে যান। কাঁথি পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে পরাজিত হলেন বিজেপি প্রার্থী তথা উত্তর কাঁথির বিধায়িকা সুমিতা সিনহা। উত্তর কাঁথির বিজেপি বিধায়িকা হারলেন তৃণমূল প্রার্থী রীনা দাসের কাছে।
বিস্তারিত পড়ুন: শান্তিকুঞ্জের নীরবতা ভাঙচ্ছে তৃণমূলের জয়ধ্বনি!
ভাটপাড়া পুরসভার ৩৫ ওয়ার্ডের মধ্যে ৩৪ টি ওয়ার্ডেই তৃণমূল জয়ী। আর একটি ওয়ার্ডে সিপিএম প্রার্থীর মৃত্যু হওয়ায় ভোট হয়নি। অর্জুনের প্রভাব নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
বিস্তারিত পড়ুন: Municipal Elections 2022 Result: ভোট দিতে পারেননি খোদ অর্জুন, ভাটপাড়ায় ফুটল না পদ্ম
মাত্র ছয় মাস আগে অজয় এডওয়ার্ডের নেতৃত্বে গঠিত হয় হামরো পার্টি (Hamro Party)। বিজেপি, তৃণমূল, গোর্খার, জিএনএলএফ মত তাবড়-তাবড় দলগুলিকে পিছনে ফেলে দার্জিলিং পুরসভা দখল করল অজয় (Ajay Edward) ওয়ার্ডের নেতৃত্বাধীন এই দল। যেখানে পাহাড়ে সাংসদ,বিধায়ক দুই বিজেপির সেখানে পুরভোটে বিজেপি-জিএনএলএফ জোট ধরাশায়ী।
বিস্তারিত পড়ুন: Municipal ELection Counting 2022: ছয় মাসের ‘শিশু’ জিতে নিল দার্জিলিং, দাঁত ফোটাতে পারল না ঘাসফুল-জেজিএম
অনুব্রত গড়ে এখনও অস্তিত্ব বোঝাল কাস্তে হাতুড়ি তারা! গোটা বীরভূমে যখন সবুজ আবিরের ঝড়, তখন রামপুরহাটের একটি মাত্র ওয়ার্ডে জয়ী সিপিআইএম প্রার্থী। রামপুরহাটের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী বাম প্রার্থী সঞ্জীব মল্লিক। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ১২৬৭। তৃণমূল প্রার্থী আবদুল মালিককে ১৫৩ ভোটে পরাজিত করেছেন তিনি। উল্লেখ্য, সঞ্জীব মল্লিক বর্তমানে জেল হেফাজতে। আজ, বুধবারই জামিনে ছাড়া পাবেন তিনি। ভোটের দিন ইভিএম ভাঙচুরের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁকে।
বিস্তারিত পড়ুন: Municipal Elections 2022 Counting: অনুব্রত গড়ে আজও এক জায়গায় কাস্তে হাতুড়ির জমানা! চমকে দেওয়ার মতো রেজাল্ট
বিধানসভায় বামেদের ঝুলিতে আসেনি কোনও আসন। একসময় রাজ্যের শাসক দলে থাকা বামেদের অস্তিত্বই কার্যত এসে দাঁড়ায় প্রশ্নের মুখে। পরে উপ নির্বাচনে ও কলকাতার পুরভোটে বামেদের ভোট শতাংশ কিছুটা বাড়ে। তবে, রাজ্যের ১০৮ পুরসভার মধ্যে একটি পুরসভায় অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখল বামেরা। নদিয়ার তাহেরপুর পুরসভার দখল নিল তৃণমূল। তাহেরপুরের ১৩ টি পুরসভার মধ্যে ৮ টি ওয়ার্ড গেল বামেদের হাতে আর পাঁচটিতে জয়ী তৃণমূল।
বিস্তারিত পড়ুন: ঘাসফুলের ঝড়ে ঘাঁটি ধরে রাখল বামেরা, সিপিএমের দখলে তাহেরপুর
দিলীপের গড়েও হল না মুখরক্ষা। সকাল বিকাল গড় আঁকড়ে পড়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। শাসকদল-পুলিশকে এক হাত নিয়ে প্রচার সেরেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। হাত নাড়িয়ে অনুগামীদের পাশে নিয়ে খোশমেজাজে, আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে প্রচার করেছেন দিলীপ ঘোষও। কিন্তু পুরভোটের ফল বলল অন্য কথা। কিন্তু পশ্চিম মেদিনীপুরের গড় বাঁচিয়ে রাখতে পারলেন না দিলীপ। মেদিনীপুরে ২০টি আসন তৃণমূলের দখলে, তিনটি বাম, একটি নির্দল ও একটি কংগ্রেসের দখলে গিয়েছে। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তৃণমূল মেদিনীপুর পৌরসভার বোর্ড দখলের পথে। এর আগের পৌরনির্বাচনে মাত্র ১৩ টি আসন পেয়েছিল তৃণমূল। সেখান থেকে এবার ৭টি আসন বাড়িয়েছে। পরবর্তীকালে আরও অনান্য দল থেকে প্রার্থীরা তৃণমূলে যোগ দেন। মোট ১৯ টি আসন হয় তৃণমূলের।
বিস্তারিত পড়ুন: গড়টাও ধরে রাখতে পারলেন না দিলীপ! বিজেপি শূন্য পুরবোর্ডে প্রত্যাবর্তন তৃণমূলের
নদিয়ার তাহেরপুর পুরসভায় জয়ী বামেরা। মোট ১৩ টি আসনের মধ্যে ৮ টিতেই জয়ী সিপিএম। বাকি ৫ টিতে জয়ী তৃণমূল।
কামারহাটি পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে ৪৫৭০ ভোটে জয়ী মদন মিত্রের পুত্রবধূ মেঘনা মিত্র। কলেজে পড়ার সময় রাজনীতি করতেন মেঘনা। তবে এবারই প্রথম টিকিট পেলেন তিনি।
প্রথম থেকেই বিরোধী নয় গোঁজ কাঁটা নিয়ে ভয় ছিল শাসকদলের অন্দরে। তেমনটা হলও। পশ্চিম মেদিনীপুরের ক্ষীরপাই পুরসভার ৪ নং ওয়ার্ডে জয়ী তৃণমূলের গোঁজ নির্দল প্রার্থী সুনীতি হালদার। ওই ওয়ার্ডের সভাপতি ছিলেন মনোজ হালদার। তাঁর মা নির্দলে যোগ দেওয়ার পরই দল থেকে বহিষ্কার করা হয় মনোজবাবুকে। এবার ওই ওয়ার্ডে জিতেই তৃণমূল প্রার্থীকে হারিয়ে জয়ের হাসি হাসলেন সুনীতি দেবী। ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী অন্তরা সাহা পেয়েছেন ৩৮৪ ভোট। অন্যদিকে নির্দল প্রার্থী সুনীতি হালদার পেয়েছেন ৪৬১টি ভোট।
বিস্তারিত পড়ুন: Municipal Election Counting 2022: বহিষ্কৃত হয়েছিলেন ছেলে, ভোটে জিতে যোগ্য জবাব দিলেন মা
উল্লাস প্রকাশ করবেন। উল্লাস হোক, কিন্তু তা যেন কখনওই মাত্রাছাড়া না হয়। পুরভোটের ফল প্রকাশের আগেই এমন বার্তা দিল তৃণমূল। ঘাসফুল শিবিরের বার্তা, সাধারণ মানুষের জনজীবন যেন বিঘ্নিত না হয়। তৃণমূলের মুখপত্র জাগো বাংলায় লেখা হয়েছে, ভোটের আগে এবং পরে বহু প্ররোচনা, হামলা সহ্য করতে হয়েছে। কোথাও বিরূপ মনোভাব মনের মধ্যে পুষে রাখবেন না।
দলের কর্মী, নেতৃত্বকে আরও দায়িত্বশীল আরও সংবেদনশীল আরও সহনশীল হতে হবে বলেও বার্তা দেওয়া হয়েছে।
তৃণমূলে ফেরার পর প্রথম জয় শুভ্রাংশুর। কাঁচড়াপাড়া পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী মুকুল-পুত্র। ২০২১- এর বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে বীজপুর কেন্দ্র থেকে লড়েছিলেন শুভ্রাংশু, কিন্তু তিনি হেরে যান তৃণমূলের সুবোধ অধিকারীর কাছে। পরে ভোটের পর তৃণমূলে ফেরেন মুকুল ও শুভ্রাংশু।
কাঁথি পুরসভা নিয়ে শাসক-বিরোধী তরজা তুঙ্গে। মামলাও চলছে হাইকোর্টে। আর সেখানেই জয়ী হলেন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থী সুপ্রকাশ গিরি। রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরির ছেলে সুপ্রকাশ। ভোট প্রচার চলাকালীন, শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বচসায় জড়াতে দেখা গিয়েছে সুপ্রকাশকে।
গণনা ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই একাধিক পুরসভা চলে গেল ঘাসফুলের দখলে। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে শুরু জয়ের উল্লাস।
তৃণমূলের দখলে বীরভূমের ৫ পুরসভা। বোলপুরে ২২ টির মধ্যে ২১ টিতে জয়ী তৃণমূল। সিউড়ি পুরসভার ২১ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২০ টিতে জয়ী তৃণমূল। সাঁইথিয়া পুরসভার ১৬ টির মধ্যে সবকটিতেই জয় ঘাসফুলের। রামপুরহাট পুরসভা ১৮ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৬ টিতে জয়ী তৃণমূল, দুরাবরাজপুর পুরসভার ১৬ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১১ টাই তৃণমূলের দখলে। এর মধ্যে বোলপুরে ১০ টি, সাঁইথিয়ায় ১৪ টি, দুবারাজপুরে ৫ টি, সিউড়িতে ১৫ টি আর রামপুরহাটে ৫ টি তে আগে থেকেই তৃণমূল জয়ী ছিল।
গণনার ঘণ্টাখানেকের মধ্যে পরপর একাধিক ওয়ার্ডে জয়ী তৃণমূল। তার মধ্যেও ফুটছে পদ্ম। মুর্শিদাবাদ পুরসভার ১৪ এবং ১২ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী বিজেপি প্রার্থী কাকলী মন্ডল ও শাওলী দত্ত হালদার। খড়দহ পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিজেপির দখলে। মালবাজার পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী বিজেপি প্রার্থী বৃন্দাবন সাহা।
গঙ্গারামপুর পুরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী তৃণমূল প্রার্থী প্রশান্ত মিত্র। ইনি মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রের ভাই। এক সময় দল বদলে বিজেপি-তে গিয়েছিলেন। পরে যদিও তৃণমূলের ফেরেন।
মাথাভাঙা পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডে ৮৯৬ ভোটে জয়ী তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ রায় ও মাথাভাঙার ১ নম্বর ওয়ার্ডে ১৬০০-র বেশি ভোটে জয়ী। জয়ী তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ সাহা।
১০৭ পুরসভার গণনা শুরু হল। প্রথমে ব্যালট গোনা হবে। পরে ইভিএমের ভোট গোনা হবে।
১০৮ টি পুরসভায় ভোট হলেও আজ গণনা ১০৭ পুরসভায়। দিনহাটা আগেই চলে গিয়েছে শাসক দলের দখলে। দিনহাটার ১৬ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৩ টি ওয়ার্ডেই জয়ী তৃণমূল। ফলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দিনহাটা পুরসভাও দখল করল তৃণমূল।
পুরভোটের ফল ঘোষণা হওয়ার পর বিজয় মিছিল নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে সতর্ক করেছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাস। তিনি জানিয়েছেন, বিজয় মিছিলে ছাড় থাকলেও, কোনওরকম অশান্তি দেখলেই কড়া ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।
মুর্শিদাবাদ জেলার ৭ পুরসভা মুর্শিদাবাদ, জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ, কান্দি, জঙ্গিপুর, ধুলিয়ান, বেলডাঙা, বহরমপুরে ভোটের ফল বুধবার। নদিয়ায় নবদ্বীপ, শান্তিপুর, রানাঘাট, বীরনগর, কল্যাণী, গয়েশপুর, হরিণঘাটা, চাকদা, কৃষ্ণনগরে গণনা। উত্তর ২৪ পরগনার কাঁচড়াপাড়া, হালিশহর, নৈহাটি, ভাটপাড়া, গাড়ুলিয়া, উত্তর ব্যারাকপুর, ব্যারাকপুর, টিটাগড়, খড়দহ, কামারহাটি, বরানগর, উত্তর দমদম,বনগাঁ, গোবরডাঙা ,বারাসাত, বসিরহাট, বাদুরিয়া, টাকি, নিউ ব্যারাকপুর, মধ্যমগ্রাম, দক্ষিণ দমদম, দমদম, অশোকনগর-কল্যাণগড়,পানিহাটি, হাবড়া মোট ২৫টি পুরসভার গণনা। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৬টি পুরসভা বজবজ, বারুইপুর, রাজপুর-সোনারপুর, জয়নগর-মজিলপুর, মহেশতলা, ডায়মন্ডহারবার পুরসভার ফলপ্রকাশ হবে।
হাওড়ার উলুবেড়িয়া, হুগলির হুগলি-চুচুড়া, বাঁশবেড়িয়া, বৈদ্যবাটি, শ্রীরামপুর, চাঁপদানি, ভদ্রেশ্বর, রিষড়া, কোন্নগর, আরামবাগ, উত্তরপাড়া-কোতরং, তারকেশ্বর, ডানকুনি, পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক, কাঁথি, এগরা, পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা, রামজীবনপুর, ক্ষিরপাই, খড়ার, খড়গপুর, ঘাটাল, মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামের ঝাড়গ্রাম পুরসভা, পুরুলিয়ার পুরুলিয়া, ঝালদা, রঘুনাথপুর পুরসভা, বাঁকুড়ার বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর, সোনামুখী, পূর্ব বর্ধমানের কালনা, কাটোয়া, দাঁইহাট, মেমারি, গুসকরা, বীরভূমের সিউড়ি, রামপুরহাট, বোলপুর, সাঁইথিয়ায় চূড়ান্ত ফলপ্রকাশ বুধবার।
উত্তরবঙ্গের মোট সাত জেলায় ভোট হয়। এর মধ্যে রয়েছে দার্জিলিং জেলার দার্জিলিং পুরসভা। কোচবিহারের মোট ৬টি পুরসভায় ভোট হয়েছে, কোচবিহার, তুফানগঞ্জ, দিনহাটা, মাথাভাঙা, মেখলিগঞ্জ, হলদিবাড়ি। আলিপুরদুয়ার জেলার ২টি পুরসভা আলিপুরদুয়ার এবং ফালাকাটায় ভোট হয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলার ৩টি পুরসভা মাল, জলপাইগুড়ি ও ময়নাগুড়িতে ভোট হয়েছে। উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ, ইসলামপুর, ডালখোলায় ভোট হয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট, গঙ্গারামপুর এবং মালদহের পুরাতন মালদহ ও ইংরেজবাজার পুরসভায় ভোট হয়েছে ২৭ ফেব্রুয়ারি।