AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

টলি-নায়িকাকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ, সাসপেন্ড হয়ে কী বলছেন অরিন্দম শীল?

Arindam Sil: এই ঘটনা সামনে আসতেই অরিন্দমকে সাসপেন্ড করেছে টলিউডের পরিচালক গিল্ডস। শুধু কি তাই? সিনেপাড়ার বেশ কয়েকজন অভিনেত্রীও অরিন্দমকে নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে করেছেন বিস্ফোরক সব মন্তব্য। এত বড় অভিযোগ, এরই মধ্যে সাসপেনশন! কী প্রতিক্রিয়া খোদ পরিচালকের? টিভিনাইন বাংলায় মুখ খুললেন অরিন্দম।

টলি-নায়িকাকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ, সাসপেন্ড হয়ে কী বলছেন অরিন্দম শীল?
| Edited By: | Updated on: Sep 08, 2024 | 5:51 AM
Share

আরজি করের নারকীয় কাণ্ডে সরগরম গোটা বাংলা। এরই মধ্যে রবিবার রাত বাড়তেই টলিউডের অন্দরেও ঝড়। কাঠগড়ায় পরিচালক অরিন্দম শীল। তাঁর বিরুদ্ধেই টলিপাড়ার এক পরিচিত অভিনেত্রী এনেছেন যৌনহেনস্থার অভিযোগ। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই শনিবার মহিলা কমিশনে ডাক পড়ে অরিন্দম ও সেই নায়িকার। কমিশনের সদস্যদের উপস্থিতিতে দীর্ঘক্ষণ এই ঘটনা নিয়ে আলোচনা হয়। পরিশেষে চিঠি লিখে নায়িকার কাছে ক্ষমা চান পরিচালক। আর এই গোটা ঘটনা সামনে আসতেই অরিন্দমকে সাসপেন্ড করেছে টলিউডের পরিচালক গিল্ডস। শুধু কি তাই? সিনেপাড়ার বেশ কয়েকজন অভিনেত্রীও অরিন্দমকে নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে করেছেন বিস্ফোরক সব মন্তব্য। তিলোত্তমার জন্য ন্যায় চেয়ে মিছিলে হাঁটা অরিন্দমকে নিয়ে শুরু হয়েছে কটাক্ষও।  এত বড় অভিযোগ, এর মধ্যে সাসপেনশন! কী প্রতিক্রিয়া খোদ পরিচালকের? টিভিনাইন বাংলায় মুখ খুললেন অরিন্দম।

অরিন্দমের কথায়, “ডিরেক্টরসদের সংস্থা আমার সঙ্গে কোনও কথা বলেনি। একবারও আমার থেকে জানতে চায়নি কী হয়েছে। ওরা কোনও একটা লিখিত কাগজের উপর ভিত্তি করে এই পদক্ষেপ করেছে। ঘটনাটি তাহলে বলি, এই মে মাসেই আমার আগামী ছবির শুটিং হচ্ছিল। দৃশ্যটি ছিল অভিনেতা বসে থাকবেন আর নায়িকা তাঁর কোলে বসে তাঁকে কাছে টেনে চুমু খাবেন। স্ক্রিপ্টে লিপলক লেখা থাকলেও যেহেতু অভিনেতা তাতে স্বচ্ছন্দ ছিলেন না আমি পরিষ্কার জানিয়ে দিই, লিপলকের দরকার নেই। আমি আমার দু’জন শিল্পীকে শট বোঝাচ্ছিলাম। ওরাই বলল শটটা দেখিয়ে দাও। সাধারণত আমি আমার প্রত্যেক শিল্পীকেই শট ও কম্পোজিশন অভিনয় করে দেখিয়ে দিই। সেই মতো সেই অভিনেত্রীকে বললাম কোলে বসার জন্য, এটাও বলি ভিতর দিকে বসিস না, হাঁটুর উপর বসবি। তুই মুখটা ভিতরে ঢুকিয়ে রাখবি, যেন ওর (অভিনেতার) ক্লোজ হচ্ছিস। এই দৃশ্যটাই যখন দেখাতে গিয়েছি তখন আমার মুখটা ওর গালে ছুঁয়ে যায়। সেটা নিয়েই বলা হচ্ছে আমি নাকি চুমু খেয়েছি।”

এখানেই না থেমে পরিচালক আরও যোগ করেন, “এর পর একটা গানের দৃশ্য হয়, প্রায় তিন-চার ঘণ্টা সেটার শুট হয়ে যাওয়ার পর আমি মনিটর টেবিলে বসেছিলাম। অভিনেত্রী আমার কাছে এসে বলল, ‘আরে তোমার অ্যাক্টর তো আমার কাছে চুমু খেতে গিয়েছিল’। হাসতে হাসতেই বলছিল। এর পর শট হয়েছে, আমার পাশে এসে বসেছে। বলেছে, ‘আমার খুব নার্ভাস লাগছে’। আমি ওকে ভরসা দিলাম যে তোকে ভাল করতেই হবে– জিজ্ঞাসা করতে পারেন আমার ডিওপি (ডিরেক্টর অব ফটোগ্রাফি)কে উনিও ছিলেন। এই গোটা ঘটনার মধ্যে কিছু অস্বাভাবিক লাগেনি তাঁর।” অভিনেত্রী মহিলা কমিশনে যে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তাঁর ভিত্তিতেই দিন দুয়েক আগে তাঁকে ও অরিন্দমকে ডেকে পাঠায় কমিশন। কী কথা হয় সেখানে? অরিন্দম আরও বলেন, “সেই অভিনেত্রী ও আমাকে যখন মহিলা কমিশনে ডাকা হয় আমি পরিষ্কার জানাই যা হয়েছে তা অনিচ্ছাকৃত। তবে ওর যদি খারাপ লাগে আমি ক্ষমা চাইছি। কারও কোনও মহিলাকে অপমান করার উদ্দেশ্য আমার নেই। আমাকে কমিশনের তরফে লিখিত দিতে বলা হয়। আমি রাজি হই। তবে কমিশনের তরফে লীনা গঙ্গোপাধ্যায় আমায় বলেন, অনিচ্ছাকৃত এই শব্দটি লেখা যাবে না। কারণ মেয়েটির তো খারাপ লেগেছে। আমি তাতেও রাজি হই। এই গোটা ঘটনার সাক্ষীও আছে। আমার কস্টিউম সহকারী, আমার ক্যামেরাপার্সন ও প্রযোজনা সংস্থা তরফে একজন ছিলেন সেখানে।”

এর পরেই খানিক বিহ্বল শোনায় অরিন্দমের গলা। পরিচালক বলতে থাকেন, “এটাই হয়েছে, হ্যাঁ এটাই হয়েছে। আর পরিচালকের গিল্ড আমায় একবার জিজ্ঞাসা পর্যন্ত করল না ঘটনাটি আদপে কী! আমি প্রতিটি মানুষকে বলতে পারব না, আমি যখন ফ্লোরে থাকি তখন আমার পরিচালক সত্ত্বার মধ্যেই বিরাজ করি। কতবার কতজনকে বলতে হবে, যা হয়েছে তা একেবারেই অনিচ্ছাকৃত?” অরিন্দম এও জানান, প্রয়োজনে আইনি উপদেশও নেওয়ার কথা ভাবছেন তিনি। সম্প্রতি, টেকনিশিয়ানদের ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস দাবি করেছেন, টলিউডে কিছু প্রযোজক-পরিচালক মহিলাদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছেন, এমন খবর তিনি পেয়েছেন। সেই দাবি সামনে আসার পর পাল্টা জবাব দিয়েছিলেন পরিচালকেরাও। এরই মধ্যেই অরিন্দমের এই ঘটনা যে পরিচালকদের অন্দরমহলেই খানিক অস্বস্তি বাড়িয়েছে, কান পাতলে শোনা যাচ্ছে তেমনটাই। ইন্ডাস্ট্রি জুড়ে ফের একবার #মিটুর ঝড়? এই ঘটনাকে কাজে লাগিয়ে ফেডারেশন বনাম ডিরেক্টরস গিল্ডের তরজা কি গভীর হবে আরও? উঠছে প্রশ্ন…এই বিতর্কের জল কতদূর গড়ায়, এখন শুধু সেটাই দেখার।