নেটফ্লিক্সের আসন্ন সিরিজ় ‘দ্য ইন্দ্রাণী মুখার্জি স্টোরি: বারিড ট্রুথ’ (The Indrani Mukherjea: Burried Truth)-এর মুক্তি এবার অনিশ্চয়তার মুখে। শেষ লগ্নে কোপ CBI-এর। শিনা বোরা হত্যাকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়ের জীবনীই এই সিরিজ়ের মুখ্য উপজীব্য, যার ট্রেলার মুক্তির পরই শোরগোল পড়ে যায় বিভিন্ন মহলে। এখন পর্যন্ত নিষ্পত্তি হয়নি এই মামলার। জামিন পেয়ে বর্তমানে হাজতের বাইরেই রয়েছেন ইন্দ্রাণী। এমন সময় তদন্তজনিত বেশ কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এর মধ্যে অন্যতম হল সাক্ষীদের বয়ান বদল। আর সেই প্রতিকূলতার মাত্রা কমাতেই এবার তৎপর হয়েছে CBI। তাদের দাবি, এমন বহু সাক্ষী রয়েছেন যাঁদের এখনও সওয়াল করা বাকি। সেই কারণেই এই সময় নেটফ্লিক্সের সিরিজে বিভিন্ন চরিত্রের উপস্থিতি তদন্তকে প্রভাবিত করতে পারে। এই ডকু-সিরিজের ট্রেলার সোশ্যাল মিডিয়ায় রয়েছে আপাতত। ২৩ ফেব্রুয়ারি তা মুক্তির কথা ছিল নেটফ্লিক্সে। যদিও মুক্তি ঘিরে বাড়ছে জটিলতা।
১৮ ফেব্রুয়ারি এই ডকু-সিরিজের মুক্তির ওপর স্থগিতাদেশ জারি করার লক্ষ্যে বম্বে হাইকোর্টে পৌঁছয় CBI। এই মর্মে জমা করা হয় একটি পিটিশন। তারপরই বিচারক রেবতী মোহিত দেরে ও মঞ্জুশা দেশপাণ্ডের ডিভিশন বেঞ্চে CBI-এর পিটিশনের ভিত্তিতে চলে সওয়াল-জবাব। CBI-এর মূল দাবি, ‘যতদিন তদন্ত চলছে, ততদিন পর্যন্ত এই সিরিজ় প্রদর্শনের ক্ষেত্রে স্থগিতাদেশ দেওয়া হোক।’
CBI-এর পক্ষ থেকে আইনজীবী শ্রীরাম শিরসাত স্থগিতাদেশ দাবির পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেন, “এই সিরিজ় এমন একটা সময় মুক্তি পাচ্ছে, যখন ইতিমধ্যে ৮৯ জন সাক্ষীকে সওয়াল করা হয়েছে এবং আরও অনেকেই জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। এই সিরিজ় মুক্তির আগে CBI-এর সঙ্গে কোনও পরামর্শ করা হয়নি। আমি বলছি না এই সিরিজ় কোনওদিন মুক্তি পাবে না। আমি শুধু দাবি করছি, যতদিন না এই মামলার নিস্পত্তি হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত যেন সিরিজ়টির স্ট্রিমিং না-হয়। সাক্ষীরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসবের দ্বারা বেশি প্রভাবিত হয়ে থাকেন।”
মামলার মূল অভিযুক্ত ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায় প্রসঙ্গে CBI-পক্ষের আইনজীবী শিরসাত ২০ ফেব্রুয়ারি আরও বলেছেন, “তাকে একটা শর্তেই জামিন দেওয়া হয়েছিল, সাক্ষীকে প্রভাবিত করা যাবে না। সেই শর্তে আমরা তার জামিন বাতিল করার সিদ্ধান্তের পথেই এগোব, কারণ এক্ষেত্রে শর্ত লঙ্ঘন করা হচ্ছে।”
উল্টো দিকে, নেটফ্লিক্সের তরফে উপস্থিতি আইনজীবী রবি কদম ও অবদ পণ্ডা বলেন, “এখানে এমন কোনও মিথ্যে কথা নেই, যা কারও মুখে বা চরিত্রে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।” নেটফ্লিক্সের তরফে ওই আইনজীবীদ্বয় আরও বলেন, “এই ঘটনার উপর মোট চারটি বই রয়েছে। যার মধ্যে একটির লেখিকা খোদ অভিযুক্ত ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়, যার এক লাখেরও বেশি কপি বিক্রি হয়েছে। অপর বইটি লেখা তার মেয়ের। ফলে প্রতিটা তথ্যই এখন প্রকাশ্যে। কোনও কিছুই আর অজানা নয়। কেউ জানে না, কতদিন চলবে এই মমলা।” বৃহস্পতিবার অর্থাৎ ২২ ফেব্রুয়ারি আরও একবার এই মামলার শুনানি হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল ডিভিশন বেঞ্চের তরফে থেকে। ২৩ ফেব্রুয়ারি মুক্তির কথা ছিল এই ডকু-সিরিজের, যা এখন ঘোর অনিশ্চয়তার মুখে।