মা চেয়েছিলেন মেয়ে লেখাপড়া এবং গান-বাজনাটা চালিয়ে যাক। মেয়ে তাঁর পাশে সবসময় পেয়েছেন মাকে। মা-ই তাঁর চালিকা শক্তি। ফলে দু’দশকের বেশি সময় ধরে হাজার-হাজার শ্রোতাকে গান শুনিয়ে যাচ্ছেন উজ্জয়িনী মুখোপাধ্যায়। ছোট থেকেই ভালবেসেন এই গানকে। এই গানের জন্য অনেক কিছু সহ্য করেছেন। এমনকী, সঙ্গীত পরিচালকের কুপ্রস্তাবও।
মাত্র ১৭ বছর বয়সে মুম্বই থেকে ডাক আসে উজ্জয়িনীর। সেই সময় তিনি কলকাতার একটি নামী ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলে পড়তেন। ক্লাসের ফার্স্ট গার্ল ছিলেন। ১৭ বছরেই মুম্বইয়ের একটি রিয়্যালিটি শোয়ে গান গাওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। সেখানেই এক সনামধন্য সঙ্গীত পরিচালক তাঁকে নিজের পরবর্তী ছবিতে গান গাওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। চমকে গিয়েছিলেন উজ্জয়িনী। এত বড় সুযোগ এত তাড়াতাড়ি পাবেন কল্পনাও করতে পারেননি নাবালিকা গায়িকা। তারপর যা ঘটে তাঁর সঙ্গে চিরকালের স্মৃতি হয়ে থাকবে গায়িকার জীবনে।
এক পাবলিক প্ল্যাটফর্মে অংশগ্রহণ করেছিলেন উজ্জয়িনী। বলেছিলেন, “ঘড়ির কাঁটায় তখন ঠিক ১২টা বাজে। আমি মুম্বইয়ের একটি হোটেলের ঘরে একা। একটা ফোন আসে। সেই সঙ্গীত পরিচালক ফোন করেন, যিনি আমাকে রিয়্যালিটি শোয়ের মঞ্চে কথা দিয়েছিলেন তাঁর আগামী ছবিতে একটা গান গাওয়ার সুযোগ করে দেবেন। এত রাতে তাঁর ফোন আসায় আমি বেশ অবাকই হই। বাবার বয়সি লোকটা ভাঙা-ভাঙা বাংলায় কথা বলতে-বলতে বলে বসেন ‘আই লাভ ইউ’ (আমি তোমাকে ভালবাসি)। আমি ছিটকে যাই। হতচকিত হয়ে যাই। আমার কাছে কথা বলার ভাষা ছিল না সেইদিন। আমার মুখ থেকে একটাই বাক্য বের হয়–‘বাট স্য়ার আই রেসপেক্ট ইউ’ (কিন্তু আমি আপনাকে সম্মান করি)। ওই শেষ, আর আমাদের কথা হয়নি। কয়েক মাস পর সেই সনামধন্য সঙ্গীত পরিচালকের সঙ্গে আমার দেখা হয় একটি অনুষ্ঠানে। তাঁর ব্যবহারে আমি ১৮০ ডিগ্রি পরিবর্তন দেখতে পাই। তিনি কিন্তু সত্যি আমাকে তাঁর পরবর্তী ছবিতে গান গাইয়েছিলেন। এই ঘটনার পর আমি বুঝতে পারি প্রতিবাদ কীভাবে করতে হয়। কীভাবে সম্মানের সঙ্গে কাজ করতে হয়।”