AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

সত্যজিতের মতো ‘পথের পাঁচালী’ তৈরি করেছিলেন কিশোর কুমার! কেন মুক্তি পেল না সেই ছবি?

সত্যজিতের স্ত্রী বিজয়া রায়ের ভাগ্নি তথা অভিনেত্রী রুমা গুহঠাকুরতার স্বামী। সেই সূত্রেই সত্যজিতের সঙ্গে ফিল্মি জগতের বাইরেও ছিল এক তাঁর আত্মিক যোগাযোগ। যখনই কলকাতায় কিশোর আসতেন, তখন সোজা গিয়ে উঠতেন সত্যজিতের বিশপ লেফ্রয় রোডের বাড়িতে।

সত্যজিতের মতো 'পথের পাঁচালী' তৈরি করেছিলেন কিশোর কুমার! কেন মুক্তি পেল না সেই ছবি?
| Updated on: Jul 18, 2025 | 5:12 PM
Share

সালটা ১৯৫৫। মুক্তি পেল সত্যজিৎ রায়ের কালজয়ী ছবি ‘পথের পাঁচালী’। যে ছবি তৈরি করার সময় প্রযোজক পেতে সত্যজিতের কালঘাম ছুটেছিল। স্ত্রী বিজয়া রায়ের গয়নাও রাখা হয়েছিল বন্দক। সেই ছবিই যে পরে দুনিয়া কাঁপাবে, তখন তা একমাত্র বিশ্বাস করেছিলেন সত্যজিৎ রায়ের ঘনিষ্ঠরাই। যার মধ্যে একজন ছিলেন কিশোর কুমার। নাহ, শুধুই গায়ক বা অভিনেতা কিশোর কুমার নন, বরং তাঁর আরেক পরিচয়ও ছিল। তিনি ছিলেন সত্যজিতের স্ত্রী বিজয়া রায়ের ভাগ্নি তথা অভিনেত্রী রুমা গুহঠাকুরতার স্বামী। সেই সূত্রেই সত্যজিতের সঙ্গে ফিল্মি জগতের বাইরেও ছিল এক তাঁর আত্মিক যোগাযোগ। যখনই কলকাতায় কিশোর আসতেন, তখন সোজা গিয়ে উঠতেন সত্যজিতের বিশপ লেফ্রয় রোডের বাড়িতে। আর সেই বাড়়িতেই সূত্রপাত ভারতীয় চলচ্চিত্রের অন্য এক ইতিহাসের। অন্য এক ‘পথের পাঁচালী’র। যার রূপকার ছিলেন কিশোর কুমার।

কিশোর কুমার ততদিনে ভারতীয় বিনোদন জগতের মুকুট। শুধু গানের জন্য নয়, সিনেমার অভিনয়েও মানুষের মনে আলাদা জায়গা করে নিয়েছিলেন নায়ক কিশোর। এমনকী, মাল্টি ট্যালেন্টেড কিশোর কুমারের দারুণ ভক্ত ছিলেন খোদ সত্যজিৎ রায়ও। সত্যজিৎ যখন ‘পথের পাঁচালী’র চিত্রনাট্য তৈরি করছেন, সেই সময়ই প্রথম স্ত্রী রুমার সঙ্গে কলকাতায় সত্যজিতের বাড়িতে এসে হাজির হয়েছিলেন কিশোর কুমার। প্রথম ছবির জন্য প্রযোজক পাচ্ছিলেন না সত্যজিৎ, তা তখনই জানতে পারেন কিশোর। একথা জানা মাত্রই, সত্যজিৎকে ছবির শুটিংয়ের জন্য পাঁচ হাজার টাকা দিয়েছিলেন কিশোর। সেই সময় পাঁচ হাজার টাকা কিন্তু এখনকার পাঁচ লাখের সমান। ঠিক এই সময়ই আরেকটি ঘটনা ঘটে, যা কিনা হতবাক করে দিয়েছিল সত্যজিৎকেও। কিশোর কুমার, ‘পথের পাঁচালী’ তৈরির সময় এক সন্ধ্যার আড্ডার মাঝে একটা শর্ত রেখেছিলেন সত্যজিতের কাছে। কিশোরের সেই শর্ত মেনেও নিয়েছিলেন সত্যজিৎ।

মানিকদাকে, কিশোর কুমার বলেছিলেন, তিনি একটা ছবি করতে চান। সেটা হবে আরেক ‘পথের পাঁচালী’। অর্থাৎ সত্যজিৎ যখন ছবির শুট করবে, তাঁর পুরোটা তিনি নেপথ্যে থেকে শুট করবেন তাঁর ১৬ মিমি ক্য়ামেরা দিয়ে। আর সেই ছবিটি তৈরি হবে অনেকটা তথ্যচিত্রের ধাঁচে। ‘পথের পাঁচালী’ তৈরি হওয়ার সময় বেশ কিছুদিন সত্য়জিতের সঙ্গে শুটেও গিয়েছিলেন কিশোর কুমার। ক্যামেরাবন্দি করেছিলেন শুটিংয়ের নানা মুহূর্ত। কিশোর কুমার তাঁর শুটকে বলতেন, পথের পাঁচালীর নেপথ্যের আরেক পথের পাঁচালী। তবে ভাগ্যের ফের দেখুন। বহুদিন কিশোরের কাছে সেই ফুটেজ উপস্থিত থাকলেও, পরে সেই ক্যামেরা নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে ক্যামেরাবন্দি হওয়া ছবি-ভিডিও হারিয়ে যায়। ফলে ইতিহাস তৈরি হওয়ার আগেই তার ইতি ঘটে। না হলে, হয়তো কালজয়ী ছবি ‘পথের পাঁচালী’র পাশাপাশি কিশোরের হাতে তৈরি আরও এক ‘পথের পাঁচালী’র সাক্ষী থাকত গোটা দুনিয়া।