Lock Upp: কেন আত্মহত্যা করেছিলেন মা? জীবনের এক অন্ধকার সত্য বলে ফেললেন মুনওয়ার
Lock Upp: ২০০৭ সালের কোনও এক জানুয়ারির সকালে হঠাৎ করেই তাঁর ঠাকুমা তাঁকে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন। জানান, তাঁর মায়ের কিছু একটা হয়েছে। আপাতত তিনি ভর্তি হাসপাতালে। কী হয়েছে বুঝতে না পেরে হাসপাতালে যান মুনওয়ার।
কঙ্গনা রানাওয়াতের শো’য়ে মায়ের কথা বলতে গিয়ে এর আগে বহুবার কেঁদে ফেলেছিলেন কমেডিয়ান মুনওয়ার ফারুকি। কখনও কাছের বন্ধু অঞ্জলির কাছে আবার কখনও বা একা একাই সকলের নজর এড়িয়ে মায়ের কথা বলতে গিয়ে আবেগঘন হয়ে পরতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। তাঁর মা আর নেই, এ কথা জানতেন প্রায় সকলেই। কিন্তু তাঁর মা যে আত্মহত্যা করেছেন সে কথা অনেকেরই ছিল অজানা। কী এমন হয়েছিল যে এমন এক পদক্ষেপ নিয়েছিলেন ফারুকির মা? জীবনের এক অন্ধকার সত্য সবার সামনেই বলে ফেললেন মুনওয়ার ফারুকি।
তিনি জানান, ২০০৭ সালের কোনও এক জানুয়ারির সকালে হঠাৎ করেই তাঁর ঠাকুমা তাঁকে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন। জানান, তাঁর মায়ের কিছু একটা হয়েছে। আপাতত তিনি ভর্তি হাসপাতালে। কী হয়েছে বুঝতে না পেরে হাসপাতালে যান মুনওয়ার। গিয়ে দেখেন পাগলের মতো চিৎকার করছেন মা। হাত দিয়ে পেট চেপে রয়েছেন। মুনওয়ার গিয়ে শক্ত করে মায়ের হাত ধরেন।তাঁর কথায়, “সবাই দাঁড়িয়েছিল, কিন্তু মায়ের যে ঠিক কী হয়েছে কেউ আমায় কিচ্ছু বলছিলই না। সিভিল হাসপাতালে মাকে নিয়ে যাওয়া নয়। তখনই ঠাকুমা আমায় জানায়, মা অ্যাসিড খেয়ে নিয়েছে। আমি নির্বাক হয়ে যাই। ঠাকুমা বলে ডাক্তারকে এই কথা জানালে নাকি পরিবারের উপর বিপদ নেমে আসবে।”
মুনওয়ার জানান, তাঁর মাসি কাজ করতেন ওই একই হাসপাতালে। সে এসে তদারকি করায় মায়ের চিকিৎসা শুরু হয়। এর পর আর মাত্র কিছুদিন বেছে ছিলেন কমেডিয়ানের মা। মুনওয়ার যোগ করেন, “সেদিন এক শুক্রবারের বিকেলবেলা। মায়ের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলাম। ডাক্তার আমায় ঘর থেকে যেতে বলে। আমি মায়ের হাত ধরেছিলাম। ডাক্তার আবারও যেতে বলে। হাত ছাড়াতে গিয়ে বুঝতে পারি, আমার মা আর নেই।” কিন্তু কেন আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি? মুনওয়ার আঙুল তুলেছেন তাঁর পরিবারের দিকে। জানিয়েছেন ছোট থেকে মাকে মার খেতে দেখেছেন। ২২ বছরের বিবাহিত জীবনে কখনও হাসিখুশি থাকতে দেখেননি মাকে। মৃত্যুর পর জানতে পেরেছিলেন বাজারে সাড়ে তিন হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তা শোধ দেওয়ার মতো অবস্থা তাঁর কাছে ছিল না। মুনওয়ারের কথায়, “আমার মা কিন্তু শক্ত মনের মানুষ ছিলেন। কিন্তু ঘটনাটি ঘটার কিছু দিন আগে থেকে মা একেবারে চুপ করে যায়। কেন ওই রাতে মায়ের পাশে ঘুমোলাম না, কেন জিজ্ঞাসা করলাম না মা এত চুপচাপ কেন? আজও এই প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে নেই।”
মা’কে তাঁর আজও মনে পড়ে প্রতিটা মুহূর্তে। মায়ের মুখ, মায়ের গলার স্বর আর শোনা হবে না তাঁর। যে প্রশ্নগুলো নিজের মনের মধ্যে তোলপাড় জাগায় সেই প্রশ্নের উত্তরও আর মিলবে না মুনওয়ার ফারুকির।