রাজ চক্রবর্তী, টলিপাড়ার প্রতিষ্ঠিত পরিচালক। তবে কেরিয়ারের শুরুতে লড়াই কম ছিল না তাঁর। একের পর এক ছবি হিট যাঁর বক্স অফিসে, একটা সময় তিনিই রীতিমত মাটি কামড়ে পড়েছিলেন, কবে তাঁর নিজের ছবি করার ক্ষমতা হবে। একবার শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের মুখোমুখি হয়ে শুনিয়েছিলেন, তেমনই এক কঠিন লড়াইয়ের গল্প। ‘অপুর সংসার’ টক শোয়ে আবেগঘন হয়ে পড়েন পরিচালক। ‘রাজ চক্রবর্তী একটা সময় জুনিয়ার আর্টিস্টের কাজও করেছেন’, শ্বাশত চট্টোপাধ্যায়ের মুখের কথা কেড়ে নিয়ে রাজ বলে গেলেন তাঁর কঠিন অধ্যায়ের কথা।
সেদিন রাজ ফিরেছিলেন অতীতে, বলেছিলেন, ”আমি স্বপন সাহার ছবিতে জুনিয়ার আর্টিস্টের কাজ করেছি। আমি রাণের ছবিতে জুনিয়ার আর্টিস্টের কাজ করেছি। আমার মনে আছে একটা ছবি করেছিলাম, নাম ছিল সুন্দরী। সেখানে বু্ম্বাদা ও ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত ছিলেন হিরো-হিরোইন। ফলতাতে শুটিং পড়েছিল। সেখানে ১৫০ জুনিয়ার আর্টিস্ট ছিল। আমি ছিলাম তাঁদের মধ্যে একজন। যাঁর কাজ ছিল প্রতিদিন রাতে যখন শুটিং হতো, সাত দিন ধরে হাতে মশাল নিয়ে শুধু দৌড়ে যাওয়া। একটা ইঁটভাটাতে শুটিং হচ্ছিল। আমার পায়ের তলার ছাল উঠে গিয়েছিল। আমি সহপরিচালককে বারবার অনুরোধ করছি, আমাকে একটা চটি পরতে দিন। উনি কিছুতেই চটি পরতে দিতে রাজি নন। সেই সময় আমার খুব রাগ হয়েছিল। আমার তো পা দেখা যাচ্ছে না। আমায় পাল্টা তিনি বলেছিলেন, ‘ওই নিজেকে কি তুমি হিরো ভাবছো নাকি? সবাই যা করছে, তুমিও তাই করো।’ সবার কষ্ট হচ্ছে, দেখছি, কিন্তু কেউ বলতে পারছে না।”
গল্পটা শুনে শ্বাশত চট্টোপাধ্যায় প্রশ্ন করে, ‘সেই সহপরিচালককে নিজের কাজে নিয়েছো কোনওদিন?’ রাজ হেসে উত্তর দিয়েছিলেন, ‘না, তবে তাঁর কথা আমার মনে আছে। ওটা আমায় অনুপ্রাণিত করেছিল। সেদিন আমার মনে হয়েছিল, আমি যদি কোনওদিন সুযোগ পাই, এই ভুলটা আমি করব না। আমি কাজ করি, আমার কাছে প্রতিটা শিল্পীই শিল্পী।’