সুদীপ্তার বাড়ির ছাদে সুমনের ‘মাস্টার’ ক্লাস
প্রথম দিন থেকেই এই ক্লাসের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে চায়ের আড্ডাও। অর্থাৎ ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাস করতে গিয়ে নানা রকম চায়ের আবদার করেন। হাসিমুখে সে সব আবদার মেটান সুদীপ্তা স্বয়ং।
অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তীর (Sudipta Chakraborty) বাড়ির খোলা ছাদ। শনিবাসরীয় শীতের মিঠে রোদ ছড়িয়ে থাকা ফুলের গাছে আদর বুলিয়ে দিচ্ছে। লাইন দিয়ে কিছু চেয়ার সাজানো। উল্টো দিকে একটি টেবিল সঙ্গে লাগোয়া চেয়ার। খোলা হাওয়ায় ক্লাসরুমের আবহ। কিন্তু ক্লাস নিলেন কে?
‘সুদীপ্তা চক্রবর্তী অ্যাক্টিং অ্যাকাডেমি’র কাজ গত কয়েক মাস হল শুরু করে দিয়েছেন সুদীপ্তা (Actress)। প্রফেশনালি অভিনয় শেখাচ্ছেন। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে অনেক ছাত্র-ছাত্রীকে একসঙ্গে নিয়ে শেখানো সম্ভব হচ্ছে না। সে কারণেই এক একজন করে কখনও বা ছোট দলে ভাগ করে ছাত্র-ছাত্রীদের বাড়িতেই ক্লাস করাচ্ছিলেন। কিন্তু অ্যাকাডেমিতে শেখানোর জন্য আরও অনেকের কথা ভেবেছিলেন তিনি। প্যানেলে ছিলেন কলকাতা এবং কলকাতার বাইরের বিভিন্ন পেশার প্রফেশনালরাও। সেই গেস্ট ক্লাসের জার্নি শুরু হল গতকাল। প্রথম মাস্টার ক্লাসে ক্লাস নিলেন পরিচালক সুমন ঘোষ।
আরও পড়ুন, মিথিলা এবার ‘রাজনীতিবিদ’, কিন্তু কোথায়?
সুদীপ্তা বললেন, “এখনও পর্যন্ত যা ভেবেছি, মাসে একজন করে গেস্ট আসবেন। যাঁদের উপর আমি ভরসা রাখি। আমি তো জানি, ওদের কী শেখাচ্ছি, আর কী শেখাচ্ছি না। সেটা এনরিচ করার জন্য যাঁদের সঠিক মনে হবে, তাঁদের অনুরোধ করছি। সব রকম সুবিধে দিয়ে ক্লাস তো করাতে পারছি না। টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিতে পারছি না স্টুডেন্টদের। গেস্টরাও টেকনিক্যাল সাপোর্ট চাইলে দিতে পারব না। সবটাই এখনও ইনফরম্যাল ওয়েতে হবে। আড্ডার মধ্যে দিয়ে। এনরিচিং আড্ডা।”
মাস্টার ক্লাসের সময়সীমা দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। সব গ্রুপের ছাত্র-ছাত্রীদের একসঙ্গে এই গেস্ট ক্লাস করার সুযোগ করে দিচ্ছেন সুদীপ্তা। তবে একেবারে নতুনদের বাদ রাখছেন তালিকা থেকে। কেমন হল প্রথম মাস্টার ক্লাস? সুদীপ্তা শেয়ার করলেন, “আমি টেনসড ছিলাম। তবে সুমন বলল, অভিনয় নিয়ে এই ধরনের ক্লাস এর আগে একটাই করেছে। ঢুকে যদিও বলেছিল, ও কী বলবে জানে না। কিন্তু প্ল্যান করে এসেছিল। ছবির ক্লিপ দেখিয়ে বুঝিয়েছে। ওর ব্রিফ। তারপর অভিনেতার ডেলিভারি। আমার স্টুডেন্টদেরও ভাল লেগেছে।”
চলছে অভিনয়ের পাঠ। ছবি: সুদীপ্তা চক্রবর্তীর ফেসবুক থেকে গৃহীত।
সুদীপ্তা আগে জানিয়েছিলেন, তাঁর প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন পেশার প্রফেশনালরা ক্লাস নেবেন। অর্থাৎ নার্ভাস সিস্টেম নিয়ে কাজ করা প্রফেশনাল চিকিৎসক, মনোবিদরাও ভবিষ্যতে ক্লাস নেবেন এই প্রতিষ্ঠানে। কীভাবে মিডিয়াকে সামলাতে হবে, কীভাবে নিজের সাফল্য সামলাবেন আবার কীভাবেই বা নিজের ব্যর্থতাকে সামাল দেবেন একজন প্রফেশনাল, এই ওভারঅল গ্রুমিংয়ের প্ল্যান করেছেন সুদীপ্তা। পরের মাস্টার কে, তা এখনই খোলসা করতে চাইলেন না তিনি।
আরও পড়ুন, নেপথ্যের কারিগররা কি আড়ালেই থাকবেন? হেয়ার স্টাইলিস্টের মৃত্যুতে ফের উঠল প্রশ্ন
প্রথম দিন থেকেই এই ক্লাসের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে চায়ের আড্ডাও। অর্থাৎ ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাস করতে গিয়ে নানা রকম চায়ের আবদার করেন। হাসিমুখে সে সব আবদার মেটান সুদীপ্তা স্বয়ং। মাস্টার ক্লাসেও সেই ট্র্যাডিশন বজায় ছিল। সুদীপ্তার কথায়, “গতকাল ক্লাস চলাকালীন আমি চা বসালাম। অভিষেক (পরিচালক অভিষেক সাহা, সুদীপ্তার স্বামী) চা বানিয়ে সার্ভ করল। সুমন এমব্যারাসড হয়ে গেল। কিন্তু এটাই আমাদের নরমাল।”