জীবনে পিছনে ফিরে তাকাতে পছন্দ করেন না খেয়ালী দস্তিদার (kheyali dastidar)। কিন্তু তার মধ্যেও এমন কিছু থাকে যা ইতিহাস হয়ে যায়। সেটা মনে থেকে যাবেই। তেমনই হল ধারাবাহিকের জগতে তৈরি হওয়া তৃতীয় বাংলা সিরিয়াল ‘১৩ পার্বন’ । জোছন দস্তিদার পরিচালিত এই ধারাবাহিকটি বাংলা টেলিভিশনের ইতিহাসে একটি নতুন যুগের সূচনা করে। এই ধারাবাহিক দিয়ে বহু তারকার জন্ম হয়। সব্যসাচী চক্রবর্তী, খেয়ালী দস্তিদার থেকে ইন্দ্রাণী হালদার প্রত্যেকেরই অভিনয় জীবনের সূচনা এই ধারাবাহিক থেকেই। গল্প, চিত্রনাট্য, অভিনয় সব দিক দিয়েই ‘তেরো পার্বণ’ হল বাংলা টেলিভিশনের একটি স্তম্ভ। পরিচালকের মেয়ে খেয়ালী তাঁর টেলিভিশনের অভিনয় জীবনের সূচনা করেন। জনপ্রিয়তার নিরীক্ষে আজকের অনেক ধারাবাহিককে বোলে বোলে গোল দেবে এই সিরিয়াল।
কিন্তু দর্শকের ভালবাসা পেলেও সেই সময় চ্যানেল, সংবাদ মাধ্যমে ধারাবাহিকের অভিনেতাদের নিয়ে তেমন কোনও উত্তেজনা ছিল না আজকের মতো, ‘বরং আমাদের দ্বিতীয় সারির অভিনেতাই ভাবা হত। বলা হত এমা সিরিয়াল’ অতীত স্মৃতি থেকে জানালেন খেয়ালী। এর জন্য তিনি আবার খুশিও এই ভেবে যে এর জন্য তাঁদের মাথা ঘুরে যায়নি।
একের পর এক আত্মহত্যার ঘটনা টালিগঞ্জে ঘটছে, যার কারণ ডিপ্রেশন বলেই ধারণা। কী মনে করেন খেয়ালী এই বিষয়ে? “আজকে চ্যানেল থেকে সংবাদ মাধ্যম সবাই অভিনেতাদের নিয়ে যেভাবে মাতামাতি করেন, তাতে মাথা ঘুরে যাওয়া স্বাভাবিক। বড় বড় হোডিং, অটোগ্রাফ, চ্যানেল বিভিন্ন জায়গায় প্রমোশন করাচ্ছে-এতে মাথা ঘুরে যাওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু এর পাশাপাশি এটাও মাথায় রাখতে হবে এগুলো সবই ক্ষণিকের। সবাই নিজে থেকে বুঝতে পারেন না। এখন তো এমনিতেই বাচ্চা বাচ্চা ছেলে-মেয়েরা ধারাবাহিকে আসছেন, তাই তাঁদের আশে পাশে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের বোঝাতে হবে এটা খুব সাময়িক। তাই এটাতে মাথা ঘুরলে চলবে না। আজ নাম হয়েছে বলে কালও থাকবে এমন নয়। তাহলেই এমন দুর্ঘটনা কমানো যাবে”, মত থেয়ালীর।
আজও সিরিয়াল বললেই ‘তেরো পার্বণ’ নাম উঠে আসে। সেই সময় আর আজকের মধ্যে কোনও ফারাক কি দেখতে পান তিনি?এই নিয়ে খেয়ালী মনে করেন আগে অভিনেতা থেকে টেকনিশিয়ানদের মধ্যে যে বন্ধুত্ব ছিল. তা আজকে নেই। আজও পুরনো কারুর সঙ্গে দেখা হলে জড়িয়ে ধরে একে অপরের খোঁজ নেন তাঁরা। কিন্তু আজকে সবটাই কাট, কাট। এটা ভাল নয়।
জীবনে অনেক ওঠা-পড়া দেখেছেন তিনি। পেশাগত-ব্যক্তিগত সব ক্ষেত্রেই। কোনও কিছু নিয়ে আক্ষেপ রয়েছে জীবনে? “ হ্যাঁ অবশ্যই রয়েছে একটা। যা নিয়ে মরেই যাব। আমি কখনও কোনও হোডিংয়ের মুখ হইনি সারাজীবনে। আমার খুব ইচ্ছে হোডিংয়ের মুখ হওয়ার। তবে সে আশা আর নেই। এই আক্ষেপ নিয়েই মরে যেতে হবে”, বললেন খেয়ালী। নবরূপে খেয়ালী ফিরছেন টেলিভিশনে। তিনি এবার চিত্রনাট্যকার ‘ইন্দ্রাণী’ মেগা ধারাবাহিকের। অসমবয়সী প্রেম নিয়ে অন্য ধরনের গল্প বলবে এই সিরিয়াল।