পুত্রের মৃত্যু কতখানি নাড়িয়েছিল অমলা শঙ্করকে, কাঁপা গলায় জানালেন কন্যা মমতা

Sneha Sengupta |

Jun 28, 2024 | 10:13 AM

Mamata Shankar: মায়ের জন্মদিন উপলক্ষে আগামীকাল (২৮.০৬.২০২৪) একটি নাচের অনুষ্ঠানের আয়োজনও করেছেন অমলা-কন্যা মমতা। মায়ের জন্মদিনে সারাটা দিন তাঁকে বেশি-বেশি করে মনে পড়ছে মমতার। সেসব কিছুই তিনি ভাগ করে নিলেন TV9 বাংলা ডিজিটালের সঙ্গে। তুলে ধরলেন শঙ্কর পরিবারের অন্দরের কথাও।

পুত্রের মৃত্যু কতখানি নাড়িয়েছিল অমলা শঙ্করকে, কাঁপা গলায় জানালেন কন্যা মমতা
মা অমলা শঙ্করের সঙ্গে মমতা।

Follow Us

সেঞ্চুরি করেছিলেন নৃত্যশিল্পী এবং ‘কল্পনা’ ছবির অভিনেত্রী অমলা শঙ্কর। ১০০ বছর বেঁচেছিলেন তিনি। আজ তাঁর জন্মদিন। তাঁর কন্যা অভিনেত্রী-নৃত্যশিল্পী মমতা শঙ্কর বলেছিলেন, “মা জীবনে সবকিছু পেয়েছেন। সবকিছু দেখেছেন। এটাই আমার শান্তি।” আজ (২৭.০৬.২০২৪) তাঁর সেই প্রিয় বন্ধু, আদরের মায়ের ১০৫তম জন্মদিন। মায়ের জন্মদিন উপলক্ষে আগামীকাল (২৮.০৬.২০২৪) একটি নাচের অনুষ্ঠানের আয়োজনও করেছেন অমলা-কন্যা মমতা। মায়ের জন্মদিনে সারাটা দিন তাঁকে বেশি-বেশি করে মনে পড়ছে মমতার। সে সব কিছুই তিনি ভাগ করে নিলেন TV9 বাংলা ডিজিটালের সঙ্গে। তুলে ধরলেন শঙ্কর পরিবারের অন্দরের কথাও।

শঙ্কর পরিবারের আটপৌরে বউ

আমাদের বাড়িটা একাধিক কিংবদন্তির বাড়ি। বহু বিখ্যাত মানুষেরা রয়েছেন। বাবা উদয় শঙ্কর থেকে শুরু করে কাকা রবি শঙ্কর। আমার মা অমলা শঙ্কর। আমার দাদা আনন্দ শঙ্কর। বউদি তনুশ্রী শঙ্কর। আমাদের ছেলেমেয়েরা তো আছেই। মা যখন শঙ্কর বাড়িতে বিয়ে করে এসেছিলেন, তিনি খুবই ছোট। বাচ্চা মেয়েই বলা চলে তাঁকে। সবকিছু সামলেছিলেন। পরবর্তীতে আমি মাকে আর পাঁচজন বাঙালি বাড়ির মায়ের মতোই দেখেছি। খুব সাধারণ, আটপৌরে। একদিকে যেমন রান্নাঘরে রান্না করছেন, অন্যদিকে হাতা-খুন্তি নিয়ে বেরিয়ে এসে বাবাকে রবীন্দ্রনাথের কিছু একটা পড়ে দিচ্ছেন। আমার মা, আমাকে এবং আমার দাদাকে ব্যস্ততার কারণে কোনওদিনও কোনও আয়ার কাছে রেখে মানুষ করেননি। আমাদের প্রতিপালনের সবটা নিজে হাতে করেছেন। আমার ছোট ছেলে এবং ছোট বউমাও কিন্তু এক্কেবারে মায়ের ধারা পেয়েছে। বাচ্চাকে নিজেরাই মানুষ করছে ভাগাভাগি করে। আয়া কিংবা ন্যানি রাখেনি। বিখ্যাত মানুষের বাড়ি হলেও, ছোট থেকে এই সংস্কৃতি দেখেই আমরা বড় হয়েছি। আসলে আমরা খুবই বাঙালি এবং ভীষণভাবে ঘরোয়া।

এই খবরটিও পড়ুন

মায়ের শাড়ি, মমতার সাজ

মায়ের কাছে প্রথম শাড়ি পরা শিখেছি। এই যে আমার ‘শাড়ির আঁচল’ মন্তব্য নিয়ে এত বিতর্ক হল। আমাকে কিন্তু মা-ই প্রথম কুঁচি ধরে কিংবা ঘরোয়া কায়দায় শাড়ি পরা শিখিয়েছেন। খুব ছোট যখন আমি, কোমরে একটা দড়ি বেঁধে দেওয়া হত। সায়া পরতাম না। খালি গায়ে সারদাদেবীর মতো সেজে নিতাম। পাকা বুড়ির মতো কটকট করে কথা বলতাম। সেই সময় থেকেই নাকি আমি দারুণ ভাল শাড়ি ম্যানেজ করতে পারি। একটুও এদিক-ওদিক হত না। এটাও আমার মায়ের থেকেই শেখা।

মায়ের শাসন, কাঁপতেন মমতা

বাবা আমাকে বকতেন না। মারতেনও না। একবারই মার খেয়েছিলাম বাবার কাছে। তিনি যখন নাচ করতেন, বলতেন, “ওই সময়ই সবচেয়ে বেশি আমি ঈশ্বরের কাছে থাকি।” ফলে সেই সময় যদি কেউ বিরক্ত করতেন বাবাকে, আর রক্ষে থাকত না। আমি ওই সময়তেই বিরক্ত করে ফেলি। এবং বাবা দিকশূন্য হয়ে গিয়ে আমাকে মারেন। ওই প্রথম-ওই শেষ। কিন্তু মায়ের কাছে আমি বেধড়ক মা খেয়েছি। এখনও আমি স্বপ্নে দেখি মা বকুনি দিচ্ছেন, মারছেন। মাকে আমার মনে আছে শাসনের কারণে। বাবা ছিলেন আমার বন্ধু। তবে দেখতাম, আমাকে শাসন করার ক্ষেত্রে বাবা-মা একে-অপরকে স্পেস দিতেন। মা বকলে বাবা আমাকে আড়াল করতেন না। উল্টোটাও তাই ছিল। ওদের মধ্যে আমি একে-অপরের প্রতি সাংঘাতিক সম্মানবোধ দেখেছি।

পুত্র আনন্দর মৃত্যু

আমার দাদা (আনন্দ শঙ্কর) হঠাৎ চলে গেলেন। পুত্র শোক পেলেন আমার মা। সাংঘাতিক ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। সন্তান হারানোর যন্ত্রণা কম নাকি? তবে আমার বিশ্বাস, সাঁইবাবা ছিলেন। তিনিই হয়তো মাকে সামলেছিলেন। ফলে দাদা মারা যাওয়ার পর মা নিজেকে অসম্ভব বেশি ব্যস্ত করে ফেলেছিলেন। চারগুণ বেশি বিজ়ি হয়ে গেলেন মা। তিনি বলতেন, “চারপাশে যত ছেলে দেখেছি, প্রত্যেকের মধ্যে আমি আনন্দকে খুঁজে পাই। আনন্দ যায়নি। ও আমার কাছেই আছে।”

Next Article