৬ মার্চ কলকাতার এক ঐতিহাসিক লোকেশনে বিয়ের রিসেপশন উপলক্ষে পার্টি দিয়েছেন সদ্য-বিবাহিত দম্পতি অভিনেতা-বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক এবং অভিনেত্রী শ্রীময়ী চট্টরাজ। সেই রিসেপশন পার্টিতে আমন্ত্রিত ছিল টলিউড ইন্ডাস্ট্রি। ওই পার্টিতে নিমন্ত্রিতের তালিকায় কে বা কারা থাকবেন আর থাকবেন না, সে প্রসঙ্গে TV9 বাংলাকে একান্ত সাক্ষাৎকারেও কাঞ্চন বলেছিলেন, “কিছু বিষয় পারিবারিকই থাক। সব কিছু তো বিক্রি হয় না। বাকিটা ব্যক্তিগতই থাক।”
কিন্তু তাঁর বিয়ের রিসেপশনের পার্টিতে ঢোকার মুখে একটি লেখার ছবি (প্ল্যাকার্ড) ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কাঞ্চন-শ্রীময়ীর বিয়ের ছবি-দেওয়া ওই প্ল্যাকার্ডে লেখা, “Please! Press And Personal Securities And Drivers Are Not Allowed. Inconvenience Is Regretted.” যাঁর বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায়, “প্লিজ়! সংবাদমাধ্যম, ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী এবং গাড়ির চালকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ…”। প্রসঙ্গত, বিয়ের রিসেপশনের মতো প্রাইভেট ভেন্যুতে কাকে নিমন্ত্রণ করা হবে আর হবে না, সেই অধিকার একজনের একান্ত ব্যক্তিগত হলেও কাঞ্চনের মতো একজন জন-প্রতিনিধির তরফে গাড়ির চালক ও নিরাপত্তারক্ষীদের নিষেধ করার বিষয়টি নিয়ে উত্তাল হয়েছে সমাজমাধ্যম।
উল্লেখ্য, বিয়েবাড়িতে গাড়ির চালকদের খাওয়ানোর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়। নিরাপত্তারক্ষীদেরও আদর-আপ্যায়ন করা হয়। সারা বছর এই মানুষগুলো লড়ে যান। তারকাদের জীবনেও তাঁদের অবদান ভোলার নয়। এক তারকাকে নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া থেকে শুরু করে এবং তাঁদের সুরক্ষার দায়িত্ব পালন করেন এই মানুষগুলোই। তাঁদের ‘নট অ্যালাউড’ (‘not allowed’)-এর তালিকায় রাখার ছবিকে ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিনেতা-বিধায়কের আচরণকে তীব্র ধিক্কার জানিয়েছেন নেটিজ়েনদের একটা বড় অংশ। বিষয়টি নিয়ে কাঞ্চন মল্লিকের সঙ্গে বৃহস্পতিবার (বেলা সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে পর্যন্ত মোট ৪ বার) যোগাযোগ করা হয় TV9 বাংলার তরফে। এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি তাঁর থেকে। তবে যে প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিতর্ক, সেটি রিসেপশনের ভেন্যুর তরফে দেওয়া হয়েছে কি না, তা নিয়েও জল্পনা রয়েছে।
এক শ্রেণির কর্মঠ মানুষের এমন অপমান মুখ বুজে সইতে পারেননি অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র। বিষয়টি নজরে আসার পরই বিরক্তি প্রকাশ করে তিনি লম্বা পোস্ট করেছেন ফেসবুকে। তাতে লিখেছেন, “আমাকে গুটি কয়েক মানুষ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে পছন্দ করেন। তাঁরা বহুবার আমার ভালর জন্যে সো কল্ড ‘কন্ট্রোভার্সিয়াল’ সাবজেক্ট এড়িয়ে যেতে বলেছেন। অর্থাৎ, যা হচ্ছে হোক, অন্যদের নিয়ে তুমিও এড়িয়ে চলো গোছের… চেষ্টা যে করিনি তা নয়, কিন্তু কিছু বিষয় এড়াতে চাইলেও এড়িয়ে যাওয়া যায় না। এনাদের বিয়ে নিয়ে আমার বলার কিছু নেই। তবে আনুসাঙ্গিক বিষয় নিয়ে অবশ্যই আছে। বেশ ক’দিন যাবৎ… সাধারণ মানুষ দু’টি বিয়ে নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত উৎসাহ দেখিয়েছেন… ছবি নয়, ছবির তলায় যা লেখা আছে পড়ুন। শুনেছি ব্রিটিশ শাসন চলাকালীন বিভিন্ন ক্লাবে লেখা থাকত INDIAN AND DOGS ARE NOT ALLOWED। অর্থাৎ, ভারতীয় এবং কুকুরদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। আমার এটা দেখা সেই কথাই মনে হল। বাকি আপনাদের অভিমত… পরিশেষে একটাই কথা আমি বলব CLASS MATTERS, ক্লাস ম্যাটার্স।”