‘আমার মৃত্যুর পর তুই…’ দেবশ্রীকে কী বলে গিয়েছিলেন তরুণ মজুমদার?
শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন ভারতীয় চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি পরিচালক তরুণ মজুমদার। যা হাত ধরে বাংলা সিনেপ্রেমী মানুষ পেয়েছিল এক অন্যরকম স্বাদের ঘরানায় ছবি।

সিনেমার দুনিয়ায় দেবশ্রী রায়ের মা-বাবা ছিলেন পরিচালক তরুণ মজুমদার ও অভিনেত্রী সন্ধ্যা রায়। হ্য়াঁ, একথা নিজেই বহু সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন দেবশ্রী। এমনকী,দেবশ্রীর সিনে কেরিয়ার একেবারে প্রথমে, অভিনয় বিষয়টি ঠিক কী, তার হাতেখড়ি হয়েছে তরুণ মজুমদার ও সন্ধ্যা রায়ের হাত ধরেই। চুমকি থেকে দেবশ্রী হওয়ার নেপথ্যের কারিগরও তরুন মজুমদার। পিতৃসম তরুণ মজুমদারের মৃত্যু স্বাভাবিকভাবেই অভিভাবকহীন হয়ে পড়েন দেবশ্রী রায়। যার হাত ধরে এই সিনেমাযাত্রা শুরু, সেই মানুষটিই এখন আর নেই। তা ভাবলে, এখনও চোখ ছল ছল করে ওঠে অভিনেত্রীর।
২০২২ সালের ৪ জুলাই। শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন ভারতীয় চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি পরিচালক তরুণ মজুমদার। যা হাত ধরে বাংলা সিনেপ্রেমী মানুষ পেয়েছিল এক অন্যরকম স্বাদের ঘরানায় ছবি। যেখানে পর্দায় ফুটে উঠত মূল্যবোধ, বেঁচে থাকার অক্সিজেন। পলাতক, বালিকা বধূ, কুহেলী, শ্রীমান পৃথ্বীরাজ, দাদার কীর্তি, ভালবাসা ভালবাসা, গণদেবতা, অমরগীতা, আলো তাঁর অমরসৃষ্টি। সেই তরুণ মজুমদারের আবিষ্কার ছিলেন মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়, মহুয়া রায়চৌধুরী ও দেবশ্রী রায়ের মতো অভিনেত্রীরা। এই তিন নায়িকাকে এতটাই স্নেহ করতেন তরুণ মজুমদার যে, তাঁদের তিন মেয়ে হিসেবেই ডাকতেন।
দেবশ্রী জানিয়েছেন, অসুস্থ হলেই দেবশ্রীকে বাড়ি ডেকে পাঠাতেন তরুণ মজুমদার। পাশে বসিয়ে স্নেহভরা কণ্ঠে একটা কথাই বার বার বলতেন, ”মা রে, আমার তো কোনও সন্তান নেই। তুই, মৌসুমী আর মহুয়া আমার তিন মেয়ে। যখন থাকব না তোরাই শেষ কাজ করবি।” সেই পিতৃস্থানীয় তরুণ মজুমদারের শেষ ইচ্ছা ফেলতে পারেননি দেবশ্রী। তাই তো নিয়মনিষ্ঠা মেনে, দক্ষিণী কলকাতার এক কালীবাড়িতে পরিচালকের পারলৌকিক ক্রিয়া করেছিলেন দেবশ্রী। সেদিনও চোখের কোল ভেসে গিয়েছিল সিনেদুনিয়ার অভিভাবকের নানা স্মৃতিতে।
